This story is part of the একটা নিলে দুটো ফ্রি series
-“এত রেগে যাচ্ছিস কেন ভাই? আর কেউ জানুক বা না জানুক আমি তো জানি যে তুই ইঞ্জেকশনটা ভালোই দিতে পারিস। তাই তো তোর এত ডিমান্ড ভাই… আর তুই ছাড়া অন্য লোককে ডাকতে পারতাম না কি? ডাকতেই পারতাম,কিন্ত্ত কি জানিস তো ভাই? এতে না একটা পরিবারের সম্মান জড়িয়ে আছে। কে জানে,কোথা থেকে যে এইখবর চাউর হয়ে যায় তা কি কেউ বলতে পারে? সেদিক থেকে দেখলে তুই সব দিক থেকে সেফ…”
-“ঠিক আছে, চল তাহলে…” আমি বললাম।
একটা ট্যাক্সি ধরে মিনিট পনেরো থেকে কুড়ির মধ্যে আমরা এসে গেলাম বালিগঞ্জে ভাড়া–টাড়ামিটিয়ে আমরা ফ্ল্যাটে যখন পৌঁছলাম তখন ঘড়িতে বাজে দুপুর দেড়টা। চার তলায় উঠে কলিং বেল বাজাতেই দরজা খুললফর্শা করে মোটা–সোটা একটা মেয়ে। মেয়েটাকে দেখে দিগন্তর তো পুরো ভির্মি খাওয়ার অবস্থা। ও কোনও মতে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল–
-“কি–কিইইইরে ঈশু তুই এখানে?”
-“হ্যাঁ আমি, তো? আয় আয় ভেতরে আয়, আর আপনিও আসুন, আসুন–আসুন ভেতরে আসুন…”
-“না–না–না মানে তৃ–তৃ–তৃ–তৃষা কোথায়?” আমাকে নিয়ে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল দিগন্ত।
-“একি রে দিগন্ত, আমাকে দেখে তুই তো দেখছি এক্কেবারে ভিরমী খেয়ে গেলি যে…”
-“না–না তু–তু–তুই ব–অ–অ–অলই না তৃষা কোথায়?”
–কেন রে, আমি কি দেখতে এতটাই খারাপ যে, তুই এখানে এসে থেকেই খালি তৃষার খোঁজ করছিস্?…”
-“না, তুই আগে বল তুই এখানে কি করছিস্?”
-“দ্যাখ্, তোর বউ আর তোর শালীকে আমি অনেক আগে থেকেই চিনতাম। ওরা দুজনেই আমার ক্লাসমেট আমরা সবাই এক স্কুলে, মায় এক কলেজেও পড়েছি।”
-“তুই যখন আগে থেকেই সব কিছু জানতিস্ তখন তুই বিয়ের আগে এসব কিছু বলিস্নি কেন?”
-“তোকে সারপ্রাইজ দেবো বলেই বলিনি কারণ, বললে তো সেটা আর সারপ্রাইজ থাকে না তাই না…আর তাছাড়া বলা বারণও ছিল…”
-“কে–কে–কে তোকে বলতে বারণ করেছে বল–তো, বল আমাকে একবার?”
-“না–না বাবা,আমার বলা বারণ আছে…আমি আর মুখ খুলছি না। এবিষয়ে আমি আর কিচ্ছুটি জানিনা…”
-“আর এই ফ্ল্যাটটা?”
-“এটা আমারই ফ্ল্যাট…”
-“তা তুই এখানে কি করছিস্?”
-“যা বাব্বা, আমার ফ্ল্যাটে আমি কেন সে কয়িফিয়ৎও কি এখন তোকে দিতে হবে?…”
-“না সেটা বলছি না আমার বক্তব্য হল এখানে তুই ছাড়া আর কি কেউ থাকে না?…”
-“না!!! বাবা–মা এখন উটি গেছেন ছুটি কাটাতে…”
বলতে বলতে টিং–টং শব্দে কলিং বেলটা আবার বেজে উঠল।
ঈশিতা আমাদেরকে বসিয়ে রেখে রান্না ঘরে গিয়েছিল। কলিং বেলের আওয়াজ শুনে ও চেঁচিয়ে উঠে আমাকে বলল–
-“অ্যাই দিগন্ত দ্যাখ্ তো কে এসেছে?”
-“আরে বাবা দেখছি দেখছি…” আমি গজগজ করতে করতে উঠে গেলাম দরজা খুলতে দরজাটা খুলতেই দেখি তৃষা দাঁড়িয়ে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে খুব সিরিয়াস।
-“ওঃ তোমরা কতক্ষণ?” ঢাউস হ্যান্ড ব্যাগটা নিজের কাঁধ থেকে নামিয়ে থেকে একটা প্যাকেট মতো কিছু বের করে সেটাকে ফ্রিজ়়ারে ঢোকাতে ঢোকাতে বলল তৃষা।
-“এই তো জাস্ট পাঁচ মিনিট আগে…”
-“বাঃ, এদেরকে কি কিছু দিয়েছিস্ নাকি ঈশু?”
-“এই না–রে… এই তো এলো ওরা…”
-“এই ঈশু তোর হল?”-তাড়া দিলো তৃষা।
-“হ্যাঁরে বাবা হ্যাঁ… হয়ে এসেছে আর একটুখানি ব্যস…” রান্না ঘরের ভেতর থেকে জবাব দিলো ঈশিতা।
-“নিয়ে আয় তাড়াতাড়ি…”
-“জাস্ট দু’মিনিট বেবি, হয়ে এসেছে…”
-“ও তোকে তো একটা কথা বলাই হয়নি প্রাঞ্জল…”
-“কি কথা?” এবার আমিও বেশ সিরিয়াস।
-“ঈশিতা হল আমার প্রাক্তন কলিগ্…”
-“আমার এই কলিগ্টি না বেশ ভালো রান্না করে বুঝলি…আগের অফিসে ও আমার জুনিয়র ছিল আর টিফিনে রোজ ভাল–মন্দ রেঁধে নিয়ে আসত জানিস তো…”
-“আচ্ছা দিগন্ত, তুই কি আমাকে তোর বন্ধুর রান্না চাখাতে নিয়ে এসেছিস্? তাই যদি হয় তাহলে আমি উঠি আজকে…”
-“আচ্ছা, আপনিই বুঝি প্রাঞ্জল বাবু?”
-“হ্যাঁ কেন বলুন তো?”
-“তা আপনি এত রেগে যাচ্ছেন কেন? অ্যাই ঈশু কিরে তোর কি হল?”
-“হ্যাঁরে বাবা আসছি…. আসছি…ট্যান–ট্যা–না” ও খাবারগুলো এক–এক করে আমাদের সামনে দিয়ে নিয়ে গিয়ে ডাইনিং টেবিলে রেখে বলল।
-“চলুন প্রাঞ্জলদা চলুন দুপুর বেলা এসেছেন যখন তখন একটু কিছু মুখে দেবেন না তা হয় না কি… জিজু তুমিও এসো… তাছাড়া আমার এই বন্ধুটার রান্না একবার খেলে না আপনার আঙুল পর্যন্ত খেয়ে নিতে ইচ্ছে করবে। এটা আমি কিন্ত্ত এক্কেবারে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি দাদা…”
-“নো থ্যাঙ্কস্, আমি না বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি আপনারা বরং খাওয়া–দাওয়া করে নিন…তারপরেই না হয় কাজের কথা হবে… আমি না হয় এখানেই বসছি।”
-“কাজের কথা তো হবেই সেটা তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না।কিন্ত্ত কি জানেন তো প্রাঞ্জলবাবু? এই দুপুরবেলাটা না এমন একটা সময় যে সময় আবার কারোর বাড়ীতে অতিথি এলে কিছু না খেলে গেলে না আবার গৃহস্থের অকল্যান হয়… সেটা যদি আপনি চান তবে এখানে বসুন। না হলে আমাকে বিশ্বাস করে আপনি ওখানে গেলে এটুকুই আমি বলতে পারি যে আপনি ঠকবেন না। ওখানে গিয়ে বসলে বরং আপনি বেশ মজাই পাবেন।”
-“আরে চল্ চল্ চল্না প্রাঞ্জল… এত করে যখন বলছে মেয়েটা তখন প্লিজ় চল আর নাটক করিস না…”
-“অগত্যা…”
আমরা সবাই গিয়ে বসলাম খাবার টেবিলে।
-“আপনারা একটু বসুন হ্যাঁ, আমরা না একটু আসছি”
দেখলাম ওরা দুজনেই নিজেদের ড্রেসচেঞ্জ করে এসেছে দুজনের পরনেই এখন শুধুই নাইটি তৃষারটা গাঢ় তুঁতে কালারের আর ঈশিতারটা গাঢ় নীল রঙের। দুজনেরই মাইয়ের খাঁজটা অল্প বেরিয়ে আছে। যাইহোক আমরা সবাই খেতে বসলাম। খাবারগুলো দেখতে লোভনীয় হলেও মোটের ওপর হাল্কাই বলা চলে।
চৌকোনা খাবার টেবিলটার একদিকে আমি আর আমার বাঁপাশে ঈশিতা অন্যদিকে আমাদের মুখোমুখি মানে আমার ঠিক উল্টোদিকে দিকে দিগন্ত আর ওর বাঁদিকে তৃষা।
-“আচ্ছা প্রাঞ্জলদা, রান্না কেমন হয়েছে?”
-“ভালো–ভালো…”
-“শুধুই কি ভালো না খুব ভালো?”
-“খুব ভালো…”
-“তাহলে স্যুপটা, আর একটু দি আপনাকে?…”
-“অ্যাই তৃষা কি তখন থেকে প্রাঞ্জলদাকে তুই আপনি–আপনি করছিস্ রে? ও তো আমাদের দিগন্তবাবুর বন্ধু, ওকে তুমি করে বললে ও কিচ্ছু মনে করবে না…”
-“নাও তো প্রাঞ্জলদা আর একটু স্যুপ নাও, আর স্যালাডটা কেমন হয়েছে গো?”
-“বেশ ভালো হয়েছে গো ঈশিতা…”
-“তাহলে এটাও নাও আর একটু…”
-“আরে নে–নে লজ্জা করিস না আফটারঅল্ এরা তো আমার নিজের লোক…” আমাকে বলল দিগন্ত।
-“কি তোমার মনে কি চলছে আমি বুঝতে পারছি প্রাঞ্জলদা?সব সম্পর্ক–টম্পর্ক এক্কেবারে ঘেঁটে–ঘ কি তাই তো? দ্যাখো প্রাঞ্জলদা তৃষা আর তৃণা দুজনেই আমার বন্ধু এক্কেবারে ল্যাঙ্গটো বয়সের বুঝলে…ওদের সঙ্গে আমার সেই নার্সারী থেকে অটুট বন্ধুত্ব তারপরেচাকরী জীবনে দিগন্তর সঙ্গে আমার আলাপ”।
আমাদের খাওয়া দাওয়া সবারই প্রায় শেষের মুখে এমন সময়…
-“ওকে গাইজ়… তাহলে এবার অন্ততঃ একটু কাজের কথায় আসা যাক্ কেমন?” শুরু করল তৃষা।
-“হ্যাঁ!!! তুই–ই বরং বল তৃষা…”
-“হ্যাঁ!!! প্রাঞ্জল তোমাকে কেন ডাকা হয়েছে তুমি জানো কি?”
-“হ্যাঁ!!! জানি…”
-“কেন বলতো?”
-“আমাকে একটা ইঞ্জেকশন দিতে হবে বোধহয়…”