১. বিশু
লাইট অফ করে ঘুমাতে যাচ্ছিল বিশু তখনই দরজায় কে যেন নক করল। বিশু বিরক্তি ভরে চেচিয়ে উঠল,
-কে?
-বিশু বাবা আমি। দরজাটা একটু খুলো।
একটা ভয়ার্ত নারী কণ্ঠ। গলার স্বরটা মিষ্টি আছে কিন্তু বিশুর এখন উঠতে মন চাইছে না। মাথাটায় এখনো একটু বেথা আছে। তাই গলা ছেড়ে বলল,
-এখন দরজা খুলতে পারব না। পড়ে এসো।
-বাবা দরজাটা একটু খুলো। আমি অল্প কিছু কথা বলেই চলে যাবো।
বিশুর মেজাজ খারাপ হতে লাগল। সে খেকিয়ে উঠল,
-ধুর বাল। কে আপনি? বলছি না এখন কথা বলতে পারব না। পড়ে এসো।
-বাবা, আমি, আমি রোহিতের মা।
এবার বিশুর চোখ মেলে তাকাল। ঝট করে বিছানা ছেড়ে উঠে লাইট জ্বালালো। শোয়ার সময় তার পরনে শুধু একটা বক্সার ছিল। রোহিত নামটা শুনেই তার পিত্তি জ্বলে উঠেছে তাই পোশাকের দিকে খেয়াল না করে ঐ অবস্থাতেই দরজা খুলল বিশু। রোহিতের মাকে দেখে একটা ছোট্ট ধাক্কা খেল সে। গোলগাল নিষ্পাপ একটা চেহারা। কপালে সিদুর হালকা লেপটে আছে।বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে ভিজে গিয়ে গায়ের পাতলা সাদা রঙের শাড়িটা তার গায়ের সাথে লেপটে গেছে।শরির পুরোটাই যেন দৃশ্যমান। শাড়ি এমনভাবে পড়া যে পেট আগে থেকেই উন্মুক্ত।উজ্জল ফর্শা তার গায়ের রং তাই হালকা চর্বিযুক্ত উন্মুক্ত নাভিসহ পেটটা দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে। থাইয়ের কাছে শাড়ি ভিজে লেপটে আছে। উফ! সে কি উত্তেজক দৃশ্য! বিশু তার শরীর উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ভালভাবে চোখ দিয়ে চেটে নেয়।
রোহিতের মা শর্মীলা দেবী। সাধাসিধা সরল মহিলা তবে দেখতে বেশ সুন্দরী। তার একটাই ছেলে রোহিত। স্বামী দেশের বাইরে থাকেন তাই ছেলের দেখাশোনার দায়িত্ব সম্পূর্ণ তার উপর। বিশুর নাম সে লোক মুখে শুনেছে। অত্যন্ত ভয়ংকর মাস্তান সে। দিনে দুপুরে জনসম্মুখে সে একটা মার্ডার করেছে কিন্তু মন্ত্রীর সাহচর্যে সে সহজেই ছাড়া পেয়ে যায়। এরপর বিশু আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। যাকে ইচ্ছা তাকে মারধর, ছিনতাই, চাঁদাবাজি সে তার মর্জিমত করত। মেয়েদের সে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিছানায় তুলত। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। পুলিশও তার সাথে সমঝে চলে।
মাত্র একুশ বছর বয়স তার কিন্তু ভয়ে মুরুব্বিরাও তাকে এখন বিশু ভাই বলে ডাকে। সেই ভয়ংকর বিশুর মাথায় আজ নাকি তার ছেলে রোহিত বাঁশ ফাটিয়েছে। বিশু একা ছিল আর বাড়ি খেয়ে সে ওখানেই বেহুঁশ হয়ে যায় তাই তখন রোহিতের কিছু করতে পারেনি। কিন্তু এই খবর পুরো শহরে চাউর হয়ে গেছে রোহিতের সাহসিকতায় সবাই খুশি কিন্তু সাথে এটাও তাদের মনে ভয় ধরিয়ে দেয় রোহিতের নাম বিশুর কাটা খাতায় পড়ে গেছে বিশু তাকে জানে না মেরে ছাড়বে না।
এসব কথা বিশুর চেলারা শহর জুড়ে বলে বেরাচ্ছে। রোহিতের মা এসব শুনে রোহিতকে গ্রামে তার মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মাটির নীচে লুকিয়ে থাকলেও বিশুর হাত থেকে মুক্তি নেই এটা তিনি ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন তাই সন্ধাবেলা যখন শুনেছেন বিশু হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছে তখনই তিনি বিশুর বাসার উদ্দেশে বের হন। বিশুর হাতে পায়ে ধরে মাফ চেয়ে যদি ছেলেকে বাঁচানো যায় এই আশায়।
বিশু থাকত একটা নির্মাণাধীন বিল্ডিঙের ছাদের চিলে কোঠায়।বিল্ডিংটা বার তলার। নিচ থেকে বিল্ডিংয়ের দুতালা কমপ্লিট আর উপড়ে বিশুর জন্য শুধু ছাদ। রোহিতের মা একাই এসেছেন।লিফটে বার তালায় উঠে বিশুর দরজায় নক করেছিলেন। দরজা খোলার পড় বিশুকে দেখে তিনি চমকে উঠেন। কারন তার গায়ে শুধু একটা জাঙ্গিয়া সদৃশ বক্সার। এরকম প্রায় নগ্ন অবস্থায় তাকে দেখবেন আশা করেন নি তিনি। তিনি একটু অবাক হলেন কারন ছেলেটি দেখতে বেশ সুন্দর তার দেহ আকৃতি সুন্দর ও সুঠাম। এত ভালো দেখতে ছেলেটা যে পুরোপুরি একটা অমানুষ হতে পারে এটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কষ্টকর। তবে ছেলেটা যে বেয়াদপ, অসভ্য ও উদ্যত এটা তার পোশাক আর চোখের চাহনি দেখলেই বোঝা যাচ্ছিল।
বিশু কোনরূপ সংকোচ না করে বলল,
-আপনি রোহিতের মা?
-হ্যাঁ বাবা
-এখানে কি চান?
-বাবা। রোহিতকে তুমি মাফ করে দাও। ভুল হয়ে গেছে ওর। আমি তোমার কাছে হাত জোড় করে মাফ চাইছি ওকে তুমি কিছু করো না।
-মাফ করে দেব? হা হা হা করে হেসে উঠে বিশু। যান যান বাসায় যান। আজ রাতে ওকে ভালো করে আদর করে খাইয়ে ঘুম পারান। কাল ওর সাথে আমি দেখা করব। বলে বিশু একটা হিংস্র দৃষ্টি দেয়।
-না না বাবা তুমি ওকে মাফ করে দাও। ও না বুঝে করে ফেলেছে তুমি দয়া করে ওকে ছেড়ে দাও। রোহিতের মা কেঁদে ফেলল।
-ছেড়ে দেব? এত সহজে? বিশুকে বাঁশ মেরেছে সে। এত সাহস ওর। ওর বুক ফেড়ে কলিজাটা বের করে দেখব আমি ওর কলিজাটা কত বড় হয়েছে। এত সাহস ওর কলিজার কোথায় রাখে?
রোহিতের মা হাউমাউ করে কেঁদে বিশুর পা জড়িয়ে ধরল
-না বাবা, অমনটা তুমি বল না। আমার একটাই মাত্র ছেলে। ওকে ছাড়া আমি বাচব না। তুমি রহম করো বাবা। দয়া করে ওকে মাফ করে দাও ওকে ছেড়ে দাও বাবা! ওকে ছেড়ে দা…ও…
বিশুর হালকা লোমশ থাইয়ে গাল লাগিয়ে কাঁদছে রোহিতের মা। তার বিশাল দুধ দুটি যে বিশুর পায়ের সাথে চেপে ধরে কাদছেন সেদিকে তার খেয়াল নেই। কিন্তু নরম তুলতুলে মাংশের অনুভূতি পেতেই রোহিতের মায়ের মাথার উপড়ে বিশুর ধনটা আস্তে আস্তে লৌহাকৃতি ধারন করে বক্সারে একটা তাবু তৈরি করল। রোহিতের মা মাথাটা তুলে উপড়ে তাকালেই বিশুর খারানো ধনটা তার মুখের সামনে দেখতে পেত। বিশু ওভাবেই কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে দৃশ্যটা উপভোগ করল। তারপর রোহিতের মায়ের দুই কাঁধে শক্ত করে ধরে তাকে আস্তে আস্তে উপড়ে তুলে দাড় করাল। তিনি অঝরে কেদেই যাচ্ছেন। বিশু এবার গলা নরম করে বলে।
-কাঁদবেন না অ্যান্টি আসুন ভিতরে আসুন। বাইরে বৃষ্টি পড়ছে। আপনি তো ভিজে গেছেন।
বিশু তাকে ধরে খাটে বসাল তারপর একটা শুকনো তাওয়েল এনে দিয়ে তার পাশে বসে বলল,
-নিন এটা দিয়ে আপনার গা মুছে নিন।
শর্মীলা কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে,
-আমার ছেলে……?
-দেখুন আমি একটা পাবলিক ফিগার। মানুষের মনে আমার জন্য শ্রদ্ধা আছে, ভয়ও আছে। সেই আমাকে যদি ছোকরা টাইপ একটা ছেলে মেরে যায় তাহলে আমার ইজ্জতটা কোথায় থাকে বলুন। আমার তো নিজের সম্মানের জন্য হলেও কিছু করা উচিত।
এবার তিনি আরও জোরে কেঁদে উঠলেন এবং এবার বিশুর দুই পা একসাথে জড়িয়ে ধরে নিজের ছেলের জন্য আকুল ভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে। বিশু আবার সেই উত্তেজক অনুভূতিটা পায় তার ধন রোহিতের মায়ের মুখের সামনেই তাবু করে ফেলে কিন্তু মহিলা ছেলের জন্য এখন সত্যিই খুব কাতর ছিল তাই তাঁবুটা চোখের সামনে থাকলেও তার খেয়ালে আসছেনা। বিশু এবার তার দুই কাঁধে ধরে তুলে তার পাশে বসাল তারপর একহাতে তার পিঠ জড়িয়ে ধরে তাকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে, তার আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে। তারপর অন্যহাতে তার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলে,
-আপনার ছেলেকে আপনি খুব ভালবাসেন তাই না?
-আমার একটাই মাত্র ছেলে বাবা। ওকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না।
বিশু তার মুখের সামনে আসা চুলগুলো কানের পিছে গুঁজে দেয় তারপর তার গালে হাত বুলাতে বুলাতে বলে,
-জানেন আমার মা বাবা কেউ নেই। জন্মের পর থেকেই আমি অনাথ। আমি কোনদিনই মায়ের ভালবাসা পাইনি। আজ আপনার ছেলের জন্য এত ভালবাসা দেখে আমার খুব আফসোস হচ্ছে। ইশ! আমারও যদি আপনার মত একটা মা থাকত! যে আমাকে আপনার মতই অসম্ভব ভালবাসত।
বিশুর চোখ চিকচিক করে উঠে হালকা চোখের পানিতে। শর্মীলা এবার দিধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। বিশুর নামের সাথে আজ পর্যন্ত যা শুনেছে সব ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর কথা খুন-খারাবি, ছিনতাই, ধর্ষণ, অমানুষিকতা, বর্বরতা ইত্যাদি । আর সেই বিশুর মুখে এই কথাগুলো শুনে তার চোখে পানি দেখে কেমন বিশ্বাস হতে চায় না। তবুও তার হাত চলে যায় বিশুর মাথায়। সেখানে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,
-তোমার মা নেই?
-না অ্যান্টি। কখনো ছিল না। মায়ের আদর কি আমি জানিই না। আমি জানিই না কিভাবে মানুষকে ভালবাসতে হয় আদর করতে হয়।
কথাটা বলে বিশু রোহিতের মার বুকে মাথা গুঁজে হু হু করে কেঁদে উঠে। রোহিতের মা এরকম কিছু আশা করে নি। তাই কি করবে বুজতে না পেরে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। বিশু মাথা তুলে। তার চোখে পানি। বলে,
-আপনাকে একটা আবদার করলে রাখবেন?
শর্মীলা অনিশ্চয়তার স্বরে বলে,
-কি?
-আপনি আমার মা হবেন? রোহিতকে যেভাবে আদর করেন আমাকেও একটু সেভাবে আদর করবেন।
তিনি অবাক হয়ে বলেন,
-মানে?
বিশু তার দুই হাত নিজের দুইহাতে নিয়ে করজোড় করে আকুল ভাবে বলে,
-আমার তো কোন মা নেই। কখনো মায়ের আদরও পাইনি। আজ আপনাকে রোহিতের জন্য কাদতে দেখে আমি বুঝতে পেরেছি মায়ের ভালবাসা কি। তাই আমারও খুব ইচ্ছে করছে, আপনি আমাকেও রোহিতের মত, মানে আপনার নিজের ছেলের মত যদি আদর করতেন। রোহিতের কিছু হবে না। রোহিত আজ থেকে আমার ভাই। ওকে কেউ কিছু বলার সাহস পাবে না আমি কথা দিচ্ছি আপনি শুধু আমাকে একবার আপনার ছেলে বলে মেনে নিন তাতেই হবে।
সঙ্গে থাকুন …