This story is part of the কোনো এক অজান্তে series
*গত পর্বে যা ঘটেছে..শর্মিলাদেবী আবার নুতন করে সোশ্যাল মিডিয়া উপভোগ করতে থাকেন এবং অল্প বয়সী ছেলেদের তার পোস্ট করা ছবিতে কমেন্টস পড়ে মজা পান ৷ লিটন বলে এক ক্লাস 10পড়ুয়ার মা সুরভি ওকে ওদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেন ৷ শর্মিলা পরে জানাবেন বলে স্বামীর বসের সাথে পরিচিত হতে হোটেল ‘পার্ক ভিউ ইন’ এর উদ্দেশে রওনা হন..
তারপর.. তৃতীয় পর্বের পর…
“স্বামীর বসের সাথে সাক্ষাৎ পর্ব”
শর্মিলাকে নিয়ে সাড়ে চারটে নাগাদ ওদের অল্ট্রো ‘পার্ক ভিউ ইন’এর পৌর্টিকতে ঢুকতে সুনীল এগিয়ে আসে ৷ তপন দরজা খুলতেই শর্মিলা নেবে আসে ৷ তপন শর্মিলার ব্যাগটা বের করতেই হোটেলের
বেয়ারা এসে ব্যাগটা নেয় ৷
সুনীল তপনকে বলেন..তুমি বাড়িতে চলে যাও
তপন ৷ আমি ফোন করলে গাড়ি আনবে ৷ আর বাড়ির দিকে নজর রেখো ৷
তপন সেলাম দিয়ে বলে..ঠিক আছে সাহেব ৷
শর্মিলা সুনীলকে অনুসরণ করে লিফটের দিকে যাচ্ছে এমন সময় একটি লোক ওদের দিকে এগিয়ে এসে শর্মিলার দিকে হাতজোড় করে বলে..শুভসন্ধ্যা ম্যাডাম আমি এই হোটেলের ম্যানেজার রন্টু পাইক ৷ আপনাকে ‘পার্ক ভিউ ইন’এ স্বাগত জানাই ৷ তারপর পাশের একটি মহিলার থেকে একটি ফুলের বোকে নিয়ে শর্মিলার হাতে দেয় ৷
শর্মিলা বোকেটা নিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে লিফটের ভিতর ঢুকে যায় ৷
আধঘন্টা পর সুনীল শর্মিলাকে নিয়ে পাশের রুমে ঢোকে ৷ এই রুমটা দেখে শর্মিলা অবাক হয় ৷ তাদের রুমের দরজা খুলে একটা সরু প্যাসেজ দিয়ে রুমে ঢুকতে হয় ৷ এটা কিন্তু তেমন নয় ৷ এই রুমের দরজা খুলতেই একটা বেশ সাজানো বসার ঘর ৷ তাতে টিভি,ফ্রিজ,ওয়াল-টু- ওয়াল দামী ম্যুরাল আঁকা ৷ মেঝেতে গোড়ালীডোবা নরম কার্পেট ৷ চওড়া একটা সোফা,সামনে সেন্টার টেবিল ৷ একপাশে একটা ওয়াশরুম লেখা দরজা ৷ তারপর আসল গেস্টরুম ৷ শর্মিলা ঘরে ঢুকে দেখেন একজন অপুর সুন্দরী মহিলা বসে আছে ৷ বয়স আন্দাজ তিরিশ হবে ৷
সুনীল শর্মিলাকে সোফায় বসিয়ে ভিতরের দরজা নক করে ঢুকে পড়ে ৷
শর্মিলা চুপচাপ সোফায় বসে পড়ে ৷ একটা বিদেশী ফ্যাশন ম্যাগাজিন তুলে নেয় ৷ ইস্,কি সব মাই,পেট, পাছা বের করা ছবি তাতে ৷ তবুও পাতা উলটে চলে ৷ বিপরীত কোণে বসা মহিলার হাতেও একটি ম্যাগাজিন উলটে চলছে ৷
শর্মিলার নজর বারে বারে ওই মহিলার উপর পড়াতে মহিলা হেসে বলে ওঠৈ..আমি অপলা এই হোটেলের গেস্ট রিক্রিয়েশন কাম রিফ্রেশমেন্ট ম্যানেজার ৷
শর্মিলাও হাতজোড় করে বলে..আমি শর্মিলা চৌধুরী ৷ আর যিনি ভিতরে গেলেন উনি আমার স্বামী সুনীল চৌধুরী ৷ আর ভিতরের হারুণ সাহেব ওনার বস ৷
গোপা হেসে বলে..হ্যাঁ,আপনার স্বামীকে চিনি ৷ দুপুরে হারুণ স্যার আলাপ করিয়ে দিয়েছেন ৷
এইসব কথার মাঝে সুনীল ওর বসকে নিয়ে বাইরে আসে ৷ হারুণকে দেখে গোপা উঠে দাঁড়াতে হারুণ বলে মিসেস অপলা আপনি আজ যেতে পারেন ৷ আমি পরে আপনাকে ফোন করছি ৷ বলে শর্মিলার দিকে ঘুরে বলে..কি বৌদি..আমার বাংলা শুনে ওবাক হোচ্ছেন ৷ শর্মিলা হেসে বলে..তা হচ্ছি ৷
হারুণ বলে..এই সুনীলবাবু আমার আব্বা হুজুরের সাথে কাজ করতেন ৷ আর এখন আমার সাথে আছেন.এই যযা কিছু বলছি উনিই আমাকে শিখলাইছে ৷
তারপর আর দশ মিনিট ওপেক্ষা করুন আমি আসছি – বলে সুনীলকে নিয়ে আবার রুমে ঢুকে যান ৷ ওদিকে গোপা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এলে সুনীল একটা খাম ওর হাতে দিয়ে বলে..এটা বস আপনার জন্য দিলেন ৷ বলে রুমে ঢুকে পড়ে ৷
গোপা খামটা ব্যাগে পুরে শর্মিলাকে বলে..আসি ৷
শর্মিলা বলে..আসুন ভাই,পরে দেখা হবে ৷
গোপা হেসে একটা হোটেলের একটা ভিজিটিং কার্ড দিয়ে তাতে একটা নম্বর লিখে বলে.. একদম নিচেরটা আমার পার্সোনাল নম্বর ৷ বাকি দুটো অফিসিয়াল ৷ পরে মিসকল দিলে আমি সেভ করে নেব ৷
শর্মিলা কার্ডটা ওর পার্সে ঢুকিয়ে নেয় ৷
অপলা বেরিয়ে যেতে হারুণকে নিয়ে সুনীল এসে সোফায় বসে ৷ হারুণ সুনীল কে বলে রুমসার্ভিসকে বলে কফি আনাও ৷ আর ভিতরে থেকে দেখো টেবিলের উপর কাজ,আখরোট আছে নিয়ে এসো ৷
তারপর শর্মিলার দিকে ফিরে থেমে থেমে বলেন.. কেমন আছেন..বৌদি ৷
শর্মিলা ছোট্ট হাসি দিয়ে বলে..ভালো আছি স্যার ৷ আপনি কেমন ?
হারণ হেসে ওইরকম থেমে থেমে বলে..আমি ….
আপনার..হাসবেন্ডের..স্যার..আপনার নই..৷ আমি হারুণ-আল-বশির হচ্ছি ৷
ইতিমধ্যেই বেয়ারা কফি সার্ভ করতে হারুণ একটা
প্লেট শর্মিলার হাতে তুলে দেয় ৷ শর্মিলা প্লেটটা ধরে বলে..ধন্যবাদ..স্যার..না,না,হারুণ জী ৷
হারুণ হেসে বলে..ঠিক..ঠাক..বলেছেন..বৌদি ৷
তারপর কাজু,আখরোট,পেস্তায় ভরভরতি একটা প্লেট এগিয়ে ধরে ৷ শর্মিলা অল্প কিছু করে তুলে মুখে দেয় আর বলে..বাহ্,দারুণ টেস্টিতো ৷
সুনীল বলে..এগুলো বসের নিজের বাগানের জিনিস ৷ একদম সেরা ৷
কফি শেষ হলে হারুণ বলে.. বৌদি.. আপনি.. তো.. খুব..হিম্মতওয়ালী..আউরৎ..আছেন..সুনীল তো গোতো eaighteen..বছর..আমার ..কোম্পানির..
কাজে..সৌদিতে..আছে..আর ..আপনি..একলা..
Child ..নিয়ে..আছে..
হারুণের বাংলা শুনে..শর্মিলা হেসে ফেলেন..তাই দেখে হারুণ বলে..হামার..language…কি..গড়বড়
..হোচ্ছে..মেডাম..
শর্মিলা হেসে বলে..না..জী ঠিকই আছে..
তখন সুনীল বলে..বস,শর্মিলা দুদিন থাকবে..ও বাংলা বই-টই পড়ে..আপনাকে কদিনে কিছু.. কিছু শিখিয়ে দেবে ৷
হারুণ হেসে বলে..বড়িয়া..কথা..বলেছো..সুনীল ৷
তারপর শর্মিলার দিকে নজর ফিরিয়ে বলে..বৌদি..
শিখলাইবেন তো ৷ হামি ..তো ..কলকাতাকে ..বেস করকে..একটা..অফিস..করবে..ভাবছে..তাই..language..টা শিখলাতে হবে..৷
শর্মিলা হ্যাঁ/না কিছু বলবার আগেই সুনীল আগ বাড়িয়ে বলে..হ্যাঁ,হ্যাঁ,বস..ওতো বিয়ের আগে কিছুদিনতো কিন্ডারগার্ডেনর টিচিং করিয়েছে ৷
শর্মিলা স্বামীর বসকে না করতে পারে না ৷ আবার সুনীলের প্রমোশনের ব্যাপার আছে ৷ তখন হেসে বলে..দুদিনে কি শেখাবো..কথা কেটে..সুনীল বলে..আপাতত দিন দুইতো হোক..তারপর ফোন ফোনে হবে..সুনীল তাড়াতাড়ি শর্মিলাকে তার বসকে বাংলা শেখানোর ছলে একা ছাড়তে চায় ৷ যাতে বস ওকে চাখতে পারে আর তার প্রমোশনটা করে দেয় ৷
শর্মিলা বলে..কিন্তু বইটইতো কিছু নেই ৷
সুনীল বলে..একটা বাংলা ম্যাগাজিন বের করে বলে..আরে বেসিক পরে হবে..তুমি এখন এই বাংলা ম্যাগাজিন থেকে গল্প বেছে বসকে পড়ে শোনাও আর অক্ষর চেনাতে থাকো ৷
এইসব কথোপকথন চলতে চলতে হারুণের গোটা চারেক ফোন আসে ৷ হারুণ ফোনের কথা শেষ করতে করতে বেয়ারা ডিনার নিয়ে আসে ৷ 9.30 হয়ে..গেল..সরি..বৌদি..চলেন..
ডিনার..করে..পর..ক্লাস ..লিবেন..সুনীলকে বলেন..
সুনীল..আমার.মোবাইল..গুলি..আপনি রাখেন teturn me in tomorrow morning..
সুনীল হারুণের মোবাইল গুলো পকেটে ঢোকায় ৷
তিনজন ডিনার কমপ্লিট করে ৷
হারুণ ওর রুমে ঢুকলে সুনীল শর্মিলাকে বলে.. শর্মি,প্রমোশনের কোন কথাতো বস বললো না এখনো ৷ তুমি এখন বসকে একটু বাংলা শেখানোর ভান করো ৷ তাতে যদি খুশি হয়ে কাল কিছু বলে ৷
শর্মিলা বলে..সেকি আমি একলা তোমার বসের রুমে থাকবো নাকি ?
চলবে…
**স্বামীর তরুণ বসকে বাংলা শেখাতে গিয়ে রাতভর ধরে কি চলল..তা জানতে আগামী পর্বে নজর
রাখুন ৷
আর পাঠক/পাঠিকাগণ আপনাদের মূল্যবান মতামত কমেন্টস বক্সে ও @RTR09Telegram ID. তে জানান ৷