ধারাবাহিক বাংলা চটি – পর্ব ৮ – ভাগ ২
পারমিতা জিজ্ঞেস করে, “কি?”
দেবায়ন অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়ে, “অঙ্কনের নামে নিশ্চয় কিছু সম্পত্তি আছে, তাই না?”
পারমিতা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে দেবায়নের দিকে। মিস্টার সেন দাঁতে দাঁত পিষে পারমিতার দিকে তাকায়। পারমিতা মাথা নাড়িয়ে বলে, “অঙ্কনের কথা আমি ওকে বলছি! বিশ্বাস করে বলছি, আর কেউ জানবে না। কিন্তু আগে বল কি সত্যি?”
মিস্টার সেন কিছু বলতে যাবার আগেই দেবায়ন বলে, “আমার দৃঢ় বিশ্বাস অঙ্কনের নামে ওর বাবা মা কিছু সম্পত্তি লিখে গেছে। আপনার দাদা বৌদি মারা যাবার পরে নিশ্চয় অঙ্কনের মামা অথবা দাদু ওকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু কিছু কারনে আপনি নিতে দেননি। সেই সময়ে ভালো মানুষ সেজে, অঙ্কনকে কাকিমার হাতে তুলে দেন যেহেতু আপনাদের কোন ছেলে ছিল না।”
মিস্টার সেনের মুখ রাগে লাল হয়ে যায়। দেবায়নের দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে, “কি যাতা বলছ, তোমার কাছে কোন প্রমান আছে? আঙ্কন কে আমি নিজের ছেলের মতন মানুষ করেছি।”
পারমিতা মিস্টার সেন কে থামিয়ে দিয়ে বলে, “মানুষ তুমি করনি, করেছি আমি। বুকের কাছে চেপে ধরে মানুষ করেছি আমি। কিন্তু সত্যি কথা বল, দেবায়ন যা বলছে সেটা কি সত্যি?”
মিস্টার সেন সঠিক জানেন না যে আদৌ দেবায়নের কাছে কোন প্রমান আছে কি নেই। মিস্টার সেন মাথা নেড়ে জানিয়ে দেন যে অঙ্কনের নামে তার দাদা কিছু লিখে যান নি। এক বাপ মা মোরা ছেলেকে স্ত্রীর হাতে তুলে এমন কি ভুল করেছে। দেবায়নের সেই বক্তব্য বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। দেবায়ন দাঁতে দাঁত পিষে বলে, “আমি জানি আপনি অঙ্কনের প্রাপ্তবয়স্ক হবার অপেক্ষায় আছেন। আমি এটাও হলফ করে বলতে পারি যে, অঙ্কনের বাবা মায়ের মৃত্যুর পেছনে আপনি দায়ী।”
মিস্টার সেন চাপা চিৎকার করে ওঠে দেবায়নের কথা শুনে, “না…”
পারমিতা নিজের কান বিশ্বাস করতে পারে না, দেবায়নের দিকে তাকিয়ে রেগে বলে, “তুমি কি বলছ তুমি জানো? সোমেশ অর্থ প্রতিপত্তির লোভে স্ত্রীকে বেচেছে, কিন্তু নিজের দাদা কে মেরে ফেলবে? না …”
মিস্টার সেন নিজের চুল দুই হাতে মুঠি করে ধরে মাথা নিচু করে বসে থাকে। চেহারায় হেরে যাওয়ার ছাপ পরিষ্কার ফুটে ওঠে। বারেবারে মাথা নাড়ায় মিস্টার সেন। পারমিতা এক ভাবে মিস্টার সেনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে, “তুমি কিছু বলছ না কেন?”
মিস্টার সেন কিছু পরে মাথা তুলে তাকায়। সারা মুখে ঘামের ছোটো ছোটো বিন্দু। দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “তুমি কে? তুমি কি করে জানো এত সব ঘটনা?”
দেবায়ন বড় শ্বাস নিয়ে বলে, “আগে সত্যি কথা জানতে চাই, তারপরে বাকি কথা।”
পারমিতা মিস্টার সেনের কথা শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে, ফর্সা মুখ রক্ত শূন্য হয়ে যায়। চাপা আঁতকে মিস্টার সেনকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার মুখ দেখে আমার মনে হচ্ছে দেবায়ন যা বলছে সব সত্যি।”
মিস্টার সেন মাথা নাড়িয়ে বলে, “না আমি আমার দাদা বৌদিকে মারিনি। ওদের এক্সিডেন্টে আমার কোন হাত নেই। তবে আমি জানতাম যে দাদা, কম্পানি হারাবার পরে বাকি সম্পত্তি অঙ্কনের নামে লিখে গেছে। রাজারহাটে অনেক জমি অঙ্কনের নামে লেখা, আমি সেই জমির পেছনে আছি। যেদিন অঙ্কন প্রাপ্ত বয়স্ক হবে সেদিন আমি ওর কাছ থেকে সব লিখিয়ে নেব এই চিন্তায় ছিলাম।”
পারমিতা মাথা ধরে চুপ করে বসে থাকে, স্বামীর কথা বিশ্বাস করতে পারেনা। রাগে ঘৃণায় দুই চোখে জল চলে আসে পারমিতার। চেঁচিয়ে ওঠে মিস্টার সেনের দিকে “তুমি কার কাছে সত্যি কথা বলেছ, বলতে পার? জীবনে কারুর কাছে কোনদিন সত্যি কথা বলেছ? তোমার ওপরে আর এতটুকু বিশ্বাস নেই আমার।”
দেবায়ন মিস্টার সেনকে বলে, “দেখুন আমি আপনাদের মাঝের দেয়াল ভাঙ্গতে এসেছিলাম। আমি জানতাম না দেয়ালের পেছনে এত মরা পচা গলা কঙ্কাল লুকিয়ে।”
মিস্টার সেন উঠে গিয়ে গ্লাসে হুইস্কি নিয়ে আসে। পুরো গ্লাস হুইস্কি গলায় ঢেলে পারমিতা আর দেবায়নের দিকে তাকিয়ে থাকে।
পারমিতা মিস্টার সেনের দিকে জল ভরা চোখে তাকিয়ে বলে, “কি বাকি রাখলে? বউকে আগেই বেচে দিয়েছ, ছেলেকে সম্পত্তির লোভে আটকে রেখেছ, শুধু মেয়েকে বেচতে পারলে তোমার মনে শান্তি আসবে, তাই ত?”
মিস্টার সেন মাথা নিচু করে থাকেন, চোখ দিয়ে অবিরাম জল গড়াতে শুরু করে। মাথা নাড়াতে নাড়াতে বলে, “না মিতা না, আমি সত্যি পাপী হয়ে গেছি কিন্তু ছেলে মেয়েকে এই পথে আনতে চাইনি।”
বাড়িতে যেন বিশাল এক ঝড় বয়ে গেল। তিনজনে চুপ করে বসে, দেবায়নের চোখের সামনে তথাকথিত উচ্চবিত্ত সমাজের নোংরা ছবি ফুটে উঠেছে। পারমিতা কপালে হাত দিয়ে কেঁদে চলেছে। মিস্টার সেন ঘন ঘন হুইস্কির গ্লাসে চুমুক দিয়ে নিজের মনের ভাব সংযত রাখার চেষ্টা করে চলেছেন।
দেবায়ন দু’জনকে শান্ত করে বলে, “একদম মূল থেকে উপড়ে ফেল সবকিছু। একটা বড় ধাক্কা লাগবে, সামলে উঠতে একটু সময় লাগবে। কিন্তু জীবন বড় সহজ, সরল হয়ে যাবে তাতে।” দেবায়ন মিস্টার সেনকে জিজ্ঞেস করে, “শেষ পর্যন্ত কি ঠিক করলেন কাকু?”
পারমিতা কাঁদতে কাঁদতে বলে, “আমি ঠিক করে নিয়েছি। কন্সট্রাক্সান কম্পানি আমি বিক্রি করে দেব। চাই না আর এই টাকা পয়সা, সম্পত্তি প্রতিপত্তি। আজ আমার মেয়ে আমার দিকে যে ভাবে তাকিয়েছে, তাতে আমার আয়নার সামনে দাঁড়াতে লজ্জা বোধ করছে। আমি অঙ্কনের সামনে কি করে দাঁড়াব?”
মিস্টার সেন, “আমার মাথা কাজ করছে না।”
দেবায়ন মিস্টার সেনের পাশে গিয়ে বসে হাতে হাত রেখে বলে, “আশা করি আমার কথা রাখবেন। ছোটো মুখে অনেক কিছু বলে ফেলেছি। আমি ভালো করে জানি, আপনার নাগালে অনেক বড় বড় নেতা, পুলিস সবাই আছে। সেসবের ভয় নেই আমার। আমি শুধু মাত্র অনুর মুখ চেয়ে আপনার সামনে এসেছি। গতকাল রাতে আপনার মেয়ে চোখের পাতা এক করেনি।”
মিস্টার সেন দেবায়নের কঠিন হাতের পরশ পেয়ে মনে যেন এক অন্য বল পান। বহু কষ্টে বলে, “আমার বাবা অনেক বড়লোক ছিলেন। আমি আর দাদা যা চাইতাম তাই পেয়ে যেতাম, সেই থেকে আমাদের লোভ অনেক বেড়ে যায়। সেটা এই অর্থ বল, কাম সম্ভোগ বল, সব কিছুতেই যেন আমাদের লোভের অন্ত ছিল না। সেই সময়ে কেউ যদি আমাদের মেরে বকে একটু রাস্তা দেখাত তাহলে হয়ত আমি আজ এই পথে যেতাম না। তোমার কাকিমার ওপরে অনেক অত্যচার করেছি, আমি কথা দিচ্ছি, সব ছেড়ে দেব। তুমি এখন এই বাড়ির বড় ছেলে, তোমার কথা মত সব হবে।”
পারমিতা দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “আমার মেয়ের ভাগ্য বড় ভালো। কিছু না পাক, ভালোবাসা পাবে।”
দেবায়ন উঠে দাঁড়িয়ে বলে, “এবারে আমি আসি। কাল মা চলে যাবে অফিস টুরে।”
পারমিতা চোখের জল মুছে একটু হেসে বলে, “দাঁড়াও একটু, ব্রেকফাস্ট করে যেও।”
দেবায়ন, “না কাকিমা, অনেক দেরি হয়ে যাবে। ওদিকে অঙ্কন বাড়িতে আছে।”
এমন সময়ে অনুপমা হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে, জামাকাপড় পরে নিচে এসে দেবায়নের পাশে দাঁড়ায়। অনুপমার পরনের জামাকাপড় আর হাতে ব্যাগ দেখে পারমতা জিজ্ঞেস করে, “এই এলি আবার কোথায় চললি তুই?”
অনুপমা পারমিতার আর মিস্টার সেনের দিকে তাকিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে, “তোমাদের এই পাপের কুয়োতে আর এক দন্ডের জন্য থাকতে ইচ্ছে করছে না।”
দেবায়ন অনুপমার কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করল, “তুই যাচ্ছিস কোথায়?”
অনুপমা, “কাল বিকেলে কাকিমা চলে যাবে, ততক্ষণ আমি কাকিমার সাথে কাটাতে চাই। চল এখান থেকে, আমি এখানে আর থাকতে চাই না।”
মিস্টার সেন মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন, “শেষ বারের মতন এই বুড়ো বাপকে ক্ষমা করে দে।”
পারমিতার চোখে জল, ঠোঁটে হসি নিয়ে বলে, “যেতে দাও। যার হাতে আমার মেয়ে পরেছে, অন্তত ভালোবাসা বেচে খাবে না।”
দেবায়ন, “পাগলি মেয়ে, আমি তোকে কথা দিয়েছিলাম, আমি সব ঠিক করে দেব। দ্যেখ একবার মুখ তুলে। কাকু কাকিমা পরিতপ্ত। কথা দিয়েছে, এক নতুন শুরু হবে সবকিছুর।”
অনুপমা বাবা মায়ের দিকে তাকায়। মিস্টার সেন আর পারমিতা ঝাপসা চোখে হাসি মুখ নিয়ে মাথা দুলিয়ে জানায় যে দেবায়ন সত্যি কথা বলছে। অনুপমা দেবায়নকে জড়িয়ে ধরে বুকে মুখ লুকিয়ে ধরা গলায় বলে, “তুই কে রে?”
দেবায়ন অনুপমাকে জড়িয়ে মাথার ওপরে ঠোঁট চেপে বলে, “এক মিষ্টি পুচ্চি সোনার শয়তান পুচ্চু।” পারমিতার দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “নিয়ে যাচ্ছি, কাল বিকেলে মায়ের ফ্লাইট তারপরে অনুকে পৌঁছে দেব।”
পারমিতা চোখ মুছে হেসে বলে, “ঠিক আছে, আমি ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি। তোমরা বাড়ি পৌঁছে অঙ্কন কে পাঠিয়ে দিও।”
গাড়িতে উঠেই অনুপমা দেবায়নকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করে, “তুই কি করেছিস?”
দেবায়ন অনুপমার গালে চুমু খেয়ে বলে, “তোর কান্না দেখে আর থাকতে পারলাম না। একটা কিছু বিহিত করতেই হত আমাকে। নিলাম এক অপার শূন্য মাঝে এক পদক্ষেপ, জানিনা ফলাফল কতদুর সক্ষম হব।”
অনুপমা দেবায়নের বুকের ওপরে হাত বুলিয়ে বলে, “তুই আমার বাবা মাকে জানিস না, পুচ্চু। ওরা খুব ম্যানিপুলেটিভ। মানুষের মন নিয়ে ছেলেখেলা করতে বাঁধে না ওদের। খুব ভয় করছে রে।”
দেবায়ন অনুপমার মুখ আঁজলা করে তুলে নিয়ে বলে, “আমাদের ভালোবাসার মাঝে কেউ এলে তাকে সরিয়ে দিতে পিছপা হব না, সে যে কেউ হোক না কেন।”
যতক্ষণ না গাড়ি দেবায়নের বাড়ি পৌঁছায়, ততক্ষণ অনুপমা দেবায়নের বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে বসে থাকে। দেবায়নের বুকের মৃদু ধুকপুক শব্দে ওর নাম লেখা, সেই নাম নিজের কানে শুনে একসময় চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে। গতরাতে ঘুমাতে পারেনি অনুপমা। প্রেয়সীর ঘুমন্ত চেহারা দেখে মনের ভেতরে এক অনাবিল আনন্দের বাতাস বয়ে যায় দেবায়নের। বাড়ির সামনে এসে অনুপমাকে জাগিয়ে দেয়।
বাড়ির মধ্যে ঢুকতেই দেবায়নের মা অনুপমাকে দেখে অবাক। অনুপমা দৌড়ে দেবায়নের মাকে জড়িয়ে ধরে। অঙ্কন জুলুজুলু চোখে ওদের দিকে তাকিয়ে দেবায়ন অনুপমার কাছে জানতে চায় বাড়ির কথা। অনুপমা ভাইকে দুই হাতে জড়িয়ে কপালে চুমু খেয়ে জানায় যে রাতে ওর মা একটু বেশি মদ খেয়ে ফেলেছিল, তাতে শরীর খারাপ হয়েছিল। ওর মা এখন ঠিক আছে। অনুপমা মায়ের কথা, বাবার কথা সব চেপে যায়। দেবায়নের বুক দুরদুর করে, যেদিন অঙ্কন নিজের সত্যতা জানতে পারবে সেদিন পারমিতা অথবা মিস্টার সেনের প্রতি ওর আচরন কি রকম হবে। দেবায়ন অঙ্কনকে বুঝিয়ে বলে বাড়িতে ফিরে বাবা মাকে যেন বিশেষ না ঘাটায়, এমনিতে গত রাতের পরে মায়ের শরীর একটু খারাপ। হয়ত গতকাল রাতের ঘটনার পরে মিস্টার সেনের আর মিসেস সেনের ব্যাবহারে একটু বদল আসবে। সেই নিয়ে কোন বাবা মাকে যেন উত্যক্ত না করে অঙ্কন। দেবায়ন জানায় যে, অঙ্কনের জন্য গাড়ি দাঁড়িয়ে। অনুপমা ভাইকে বারবার বুঝিয়ে দেয় কোন রকম অসুবিধে হলে যেন ফোন করে দেয়। অঙ্কন কে গাড়িতে করে পাঠিয়ে, দেবশ্রী পারমিতাকে ফোনে জানিয়ে দেয় যে ছেলেকে পাঠিয়ে দিয়েছে। দেবশ্রীর গলা শুনে পারমিতা মনে বল পান। দেবশ্রীর কাছে গতকাল রাতের ব্যাবহারের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন।
দেবশ্রী অনুপমাকে জিজ্ঞেস করে, “তুই চলে এলি?”
অনুপমা, “বাঃ রে, কাল তুমি চলে যাবে, একটু তোমার সাথে থাকতে দেবে না?”
দেবশ্রী হেসে বলে, “পাগলি মেয়ে আমি কি অগস্ত্য যাত্রা করছি নাকি? এই ত দিন পনেরোর জন্য অফিসের কাজে যাচ্ছি।”
অনুপমা চোখ বড় বড় করে সুর টেনে বলে, “দিন, পোওওওওও নেএএএএএএএ রো, মানে অনে…ক দিন।”
দেবশ্রী, “আচ্ছা সে না হয়, বুঝলাম, কিন্তু তুই কি করবি!”
অনুপমা দেবশ্রীকে জড়িয়ে ধরে বলে, “তোমার আঁচলের তলায় থাকব, সারা সময়।”
দেবশ্রী হেসে ফেলে, “আমাকে তোরা শাড়ি ছাড়িয়ে, সুট পরালি, জিন্স পরালি। শাড়ির আঁচল পাবো কোথায়?”
দেবায়ন দেখে আর হাসে, চোখের সামনে ওর দুই ভালোবাসা পরস্পরের সাথে কত মিশে গেছে। দেবায়ন মায়ের উদ্দেশ্যে বলে, “তোমাদের পুতুপুতু ন্যাকা শেষ হলে কিছু খেতে দাও।”
অনুপমা আর মা দুজনেই দেবায়ন কে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়। দেবশ্রীর ব্যাগ গুছান থেকে, জিনিস পত্র সব ঠিক ঠাক করে দেওয়া, সব কিছুই অনুপমা নিজে হাতে করে। সারাদিন অনুপমা আঠার মতন দেবায়নের মায়ের পাশে লেগে থাকে। রান্না ঘরে গিয়ে আব্দার করে রান্না শেখানোর জন্য। দেবশ্রী মৃদু বকা দিয়ে বলেন যে, আর হাত পুড়িয়ে রান্না করতে হবে, ও যেন বসার ঘরে গিয়ে বসে। অনুপমা নারাজ, কিছুতেই দেবশ্রীকে ছেড়ে যাবে না। দুপুরে খাওয়ার পরে অনুপমা দেবায়নের মাকে বাড়ির ঘটনা সব খুলে বলে। সব শুনে একটু চিন্তিত হয়ে পড়েন দেবশ্রী, ছেলে যেখানে প্রেম করেছে সেই পরিবারের ইতিহাস জানার পরে একটু খারাপ লাগে। শুধু মাত্র অনুপমার মুখ দেখে শান্ত থাকেন, ভারী মিষ্টি নিস্পাপ মেয়েটা। একসময়ে দেবায়ন কে একপাশে ডেকে নিয়ে যায় দেবশ্রী।
দেবশ্রী, “তুই জানিস তুই কি করছিস। এমন বাড়ির মেয়ে যার পরিবারের এই ইতিহাস, মাঝে মাঝে বড় চিন্তা হয়।”
দেবায়ন, “মা তুমি চিন্তা করোনা, সব ধিরে ধিরে ঠিক হয়ে যাবে।”
দেবশ্রী, “এই চিন্তা না করার কথাটা অনেক বেশি ভাবনা চিন্তার। ওই মেয়ের এক মাসের হাত খরচ হয়ত আমাদের বাড়ির মাসের খরচ। অনু কোনদিন বাসে চাপেনি, তোর আমার ট্যাক্সি চাপার পয়সা থাকেনা। এই সব ভেবে মাঝে মাঝে বড় ধন্ধে পরে যাই।”
দেবায়ন, “ওর সাথে কথা বলে তোমার এই মনে হল শেষ পর্যন্ত।”
দেবশ্রী, “আজ তোদের কাঁচা বয়স, প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিস দুই জনে। একটু বড় হলে বুঝতে পারবি।”
দেবায়ন, “কি বুঝাতে চাও একটু পরিষ্কার করে বল?”
দেবশ্রী, “হয়ত বা এমন সময় আসবে, যখন তুই ওর চাহিদা মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়বি। ধর কিছু একটা জিনিস বায়না ধরল অনু, তোর হাতে সেই সময় টাকা নেই তাহলে? নিজের বাড়িতে ইচ্ছে মতন টাকা পেয়েছে, টাকার মুল্য ওই মেয়ে কি করে বুঝবে? আমি জানি তোর বাবা চলে যাওয়ার পরে তোকে কি ভাবে মানুষ করেছি।”
দেবায়ন মায়ের কথা শুনে একটু আহত হয়, “অনু সেই রকম মেয়ে নয়, মা।”
দেবশ্রী ছেলের গালে স্নেহের পরশ বুলিয়ে বলে, “না হলেই ভালো।”
দেবায়ন, “তোমার কাছে থাকলে অনু ঠিক হয়ে যাবে মা।”
দেবশ্রী হেসে ফেলে ছেলের কথা শুনে, “ঠিক আছে যা।”
দেবায়ন পেছন ঘুরে দেখে অনুপমা দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছে। দেবশ্রী আর দেবায়ন অনুপমাকে দেখে থমকে যায়, অনুপমার দুই চোখ জলে ভরা, এই বুঝি ফেটে পড়বে বুক, নাকের পাটা ফুলে উঠেছে, নাকের ডগা লাল। দেবশ্রী কি করবে কিছু বুঝতে পারে না।
অনুপমা মাতা নাড়িয়ে দেবায়নের মাকে বলে, “শেষ পর্যন্ত তুমি আমাকে ভুল বুঝলে? আমি কোথায় যাবো তাহলে?”
দেবশ্রী সঙ্গে সঙ্গে অনুপমাকে বুকের কাছে জড়িয়ে ধরে বলে, “পাগলি মেয়ে, কাঁদিস না। সব মায়ের চিন্তা হিয় তাই একটু চিন্তায় ছিলাম। এই সব ব্যাপার স্যাপার ত ঠিক আমাদের মতন মধ্যবিত্ত পরিবারে ঠিক ঘটে না, তাই মাঝে মাঝে বুক কেঁপে ওঠে।”
অনুপমা ধরা গলায় বলে, “তাই বলে আমাকে জলে ফেলে দেবে?”
দেবশ্রী, “না রে, সেটা বলিনি। তুই আর দেবু এই ত আমার এখন কার জীবন। এমন সময়ে এই সব ঘটল, যে তোদের ছেড়ে যেতেও মন করছে না।”
দেবায়ন, “মা, তুমি চিন্তা করো না, ওকে আমি ঠিক করে নেব।”
অনুপমা দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “কাকিমা আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না, প্লিস!”
দেবশ্রী অনুপমার কাতর কণ্ঠ শুনে আস্বাস দেয়, “আমি আশীর্বাদ করি তোদের জীবনে সুখ শান্তি আসুক। আমি চলে যাবার পরে আবার ঝগড়া মারামারি করিস না আর পারমিতার কথা শুনিস একটু।”
রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ, অনুপমা আর দেবায়ন বসার ঘরে বসে। দেবায়ন অনুপমাকে জড়িয়ে ধরে, স্লিপের ওপরে দিয়েই নরম তুলতুলে স্তন কচলে দেয়। শোয়ার আগে অনুপমা স্লিপের নিচে কোন ব্রা পরেনি, তাই স্লিপ সরে গিয়ে নগ্ন স্তনের ওপরে হাত রাখে দেবায়ন। নগ্ন ত্বকের কঠিন হাতের পরশে চোখ বুজে আসে অনুপমার, ঠোঁট খুলে মৃদু, আআআআহহহহহহ শীৎকার করে ওঠে। মায়ের কানে যাতে অনুপমার প্রেমঘন শীৎকার না পৌঁছায় তাই দেবায়ন ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরে অনুপমার ঠোঁট। এক হাতে অনুপমার স্তন নিয়ে কচলে দেয় অন্য হাতে অনুপমার নরম পেটের ওপরে খেলে যায়। অনুপমা আবেগের বশে, দেবায়নের মাথা টেনে স্তনের ওপরে নামিয়ে আনে। মৃদু শীৎকার ধিরে ধিরে টিভির আওয়াজ ছাপিয়ে যায়। বারমুডার ভেতরে দেবায়নের লিঙ্গ কঠিন লোহার রোড হয়ে গেছে, এই যেন ফেটে পর্বে।
বাধ সাধে দেবায়নের মা, শোয়ার ঘর থেকে অনুপমাকে ডাক দেয়, “অনু শুতে চলে আয়। বেশি রাত জাগতে হবে না।”
মায়ের গলার আওয়াজ শুনে সঙ্গে সঙ্গে দেবায়ন অনুপমাকে ছেড়ে দেয়। অনুপমা দেবায়নের মুখখানি আঁজলা করে তুলে ধরে জানায় যে আগামীকাল দেবায়নের মা চলে যাওয়ার পরে পনেরো দিনের জন্য ওরা শুধু ওদের হাতে। দেবায়ন অনুপমাকে চুম্বনে ভরিয়ে দিয়ে শুতে চলে যায়। রাতের বেলা জিন্সের পকেট থেকে পারমিতার কালো প্যান্টি আর অনুপমার প্রথম রাতের নীল প্যান্টি বের করে নাকে মুখে মাখিয়ে ঘষে লিঙ্গ নিয়ে খেলে একসময়ে ঘুমিয়ে পরে।
মাঝ রাতে দেবায়ন জল খেতে ওঠে। দেবশ্রী রাতে নিজের ঘরের ডিম লাইট জ্বালিয়ে শোয়, দরজা ভেজিয়ে ঘুমায়। দেবায়নের খুব ইচ্ছে করে ঘুমন্ত অনুপমাকে দেখতে। প্রেয়সীর ঘুমন্ত অবস্থায় জামাকাপড়ের ঠিক থাকে না, রাতের বেলা মায়ের জন্য ঠিক ভাবে অনুপমাকে আদর করতে পারল না। দেবায়ন পা টিপে টিপে মায়ের শোয়ার ঘরের দরজা খোলে। বিছানার ওপরে চোখ যেতেই প্যান্টের ভেতরে লিঙ্গ বাবাজি ফুলে ওঠে। অনুপমা মাকে জড়িয়ে ধরে মায়ের বুকের ওপরে মাথা রেখে ঘুমিয়ে। অনুপমার পিঠ, দরজার দিকে, তাই অনুপমার শরীরের আঁকিবুঁকি পুরটাই দেবায়নের চোখের সামনে মেলে ধরা। স্লিপ নীচ থেকে সরে গিয়ে কোমরের কাছে চলে এসেছে। নিটোল নরম ফর্সা পাছার ত্বকের উপরে ঘরের মৃদু আলো পিছলে যাচ্ছে। পরনের প্যান্টি পাছার খাঁজে সেঁটে গেছে। অনুপমার মায়ের বুকের কাপড় দুই হাতে আঁকড়ে ধরে ঘুমিয়ে। দেবায়ন প্রেয়সীর অর্ধ নগ্ন দেহ সৌন্দর্য দেখে উন্মাদ হয়ে ওঠে। প্যান্টের ভেতর শিথিল লিঙ্গ ফুলে ওঠে নধর পাছা দেখে। চুপিসারে নিজের ঘরে ফিরে যায়। মাথার মধ্যে অনুপমার নগ্ন দেহপল্লবের ছবি এঁকে, অনুপমার প্যান্টি নাকের কাছে মেলে ধরে লিঙ্গ নাড়াতে শুরু করে। অনুপমা আর পারমিতার সাথে সঙ্গমের ছবি দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে একসময়ে ঘুমিয়ে পরে।
সকালে দেবায়নের ঘুম ভাঙ্গে মায়ের ডাকে, “এই উঠে পর।”
থতমত খেয়ে দেবায়ন বিছানা ছেড়ে উঠে পরে, গায়ের ওপরে চাদর দেখে একটু আসস্থ হয়। চাদরের নিচে সম্পূর্ণ উলঙ্গ দেবায়ন, চোখের সামনে দরজার কাছে মায়ের নধর গোলগাল দেহপল্লব। চাদরের নীচ থেকে শিথিল লিঙ্গ আবার ফুলে হয়ে ওঠে। দেবশ্রী ঘরে না ঢুকে দেবায়নকে ডাক দিয়ে চলে যায়। পেছন থেকে মায়ের যাওয়া দেখে দেবায়ন। স্লিপ ছেড়ে মাক্সি পরে নিয়েছে। পাছার ওপরে প্যান্টির দাগ দেখা যায়। দেবায়ন বিছানা ছেড়ে উঠে প্যান্ট পরে অনুপমার কথা জিজ্ঞেস করে। দেবশ্রী জানায় যে অনুপমা তখন ঘুমিয়ে। দেবায়ন নিজের ঘর থেকে বেড়িয়ে দেখে মা রান্না ঘরে, সকালের চা বানাতে প্রস্তুত। শোয়ার ঘরে উঁকি মেরে দেখে অনুপমা ঘুমে কাদা হয়ে বিছানায় পরে। দেবায়ন ঘুম চোখে রান্না ঘরে ঢুকে মাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। দুই কঠিন হাত পেঁচিয়ে যায় নধর দেহের ওপরে।
দেবায়ন মায়ের গালে গাল ঘরে আদর করে বলে, “তুমি চলে যাবে, বড় খারাপ লাগছে।”
ছেলের কঠিন হাতের প্যাঁচ দেবশ্রীর মন কেমন করিয়ে দেয়। গালে হাত দিরে আদর করে বলে, “ছেড়ে যেতে কি মন করে তোকে? কোনদিন ছেড়ে যাইনি, বড় খারাপ লাগছে আমার। তোর জন্য সব হল, মাকে পাওয়ার ড্রসিং করা আর।” দেবায়ন দুই হাতের গভীর আলিঙ্গনে মাকে পিষে দেয়। দেবশ্রীর শরীর শক্ত হয়ে যায়। সকাল সকাল কোমল দেহের অঙ্গে প্রত্যঙ্গে এক কঠিন পরশ পেয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে দেবশ্রী। দেবায়নের আদর যেন গভীর ভাবে দেবশ্রীকে উত্তেজিত করে দেয়। দেবশ্রী ছেলের গালে হাত দিয়ে বলে, “দুষ্টুমি নয় দেবু।”
হেসে ফেলে দেবায়ন, বুঝে যায় যে ওর কঠিন লিঙ্গ মায়ের পাছার খাঁজে পিষে গেছে। হাতের বাঁধন শিথিল করে বলে, “না না, আমি একটু অনুপমাকে দেখে আসি।”
হেসে ফেলে দেবশ্রী, “মা বাড়িতে তাও, গার্লফ্রেন্ডকে আদর করতে ছারবে না।”
মাথা চুলকায় দেবায়ন, “বান্ধবী ত তুমিও, তাই না।”
দেবশ্রী চোখ বড় বড় করে বলে, “এবারে মারব, যা বের হ রান্না ঘর থেকে।”
দেবায়ন মাকে ছেড়ে মায়ের শোয়ার ঘরে ঢুকে পরে। অনুপমা একপাশ হয়ে ঘুমিয়ে কাদা। নরম বিছানার ওপরে প্রেয়সীর দেহপল্লব যেন সাগরের ঢেউয়ের মতন ওঠানামা করে শুয়ে। দেবায়ন বিছানার ওপরে বসে অনুপমার মুখের ওপরে ঝুঁকে পরে। মুখের ওপর থেকে চুলের গোছা সরিয়ে দিয়ে গোল মুখ খানি মেলে ধরে ভোরের আলোতে। নরম মিষ্টি গোলাপি গালের উপরে ঠোঁট নামিয়ে সকালের মিষ্টি চুম্বনে ভরিয়ে দেয় প্রেয়সীর ঠোঁট আর গাল। নরম স্তন স্লিপ থেকে বের করে আলতো টিপে ধরে। অনুপমা দেবায়নের হাতের আদরের স্পর্শ পেয়ে চোখ মেলে তাকায়।
অনুপমা মিষ্টি হেসে দেবায়নকে বলে, “সকাল সকাল শুরু?” অনুপমা দুই হাতে দেবায়নের গলা জড়িয়ে ধরে।
দেবায়ন মুখ নামিয়ে আনে অনুপমার স্তনের ওপরে, বাম স্তনের বোঁটা আলতো চুষে নিয়ে বলে, “সকাল বেলা প্রেম করতে অন্য মজা। কবে যে পাবো তোকে।”
অনুপমা ঘুম চোখ আবার বন্ধ করে ভোরের আদরের সুখস্পর্শ প্রান ভরে উপভোগ করে নিজেকে ভালোবাসার হাতে ভাসিয়ে দেয়। দেবায়ন অনুপমার গাল, গলা বুক চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দেয়। অনুপমা চোখ বুজে থাকে।
মায়ের গলা খাক্রানির আওয়াজ শুনে অনুপমা স্লিপ ঠিকঠাক করে নেয়। দেবায়ন সরে বসে অনুপমার পাশ থেকে। দেবশ্রী ঘরের মধ্যে চায়ের ট্রে নিয়ে ঢোকে। বিছানায় বসে সকালের চা খেতে খেতে দেবশ্রী অনুপমা আর দেবায়নকে হেসে বলে, “আমি যে কদিন থাকব না, সেই কদিন ভালো ভাবে থাকিস তোরা। বেশি দুষ্টুমি করিস না।”
দিন গড়ায়, দেবশ্রী নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে যায়। প্রথম বার ছেলেকে ছেড়ে বেশ কয়েক দিনের জন্য বাইরে যাবে। মায়ের মন একটু ভারাক্রান্ত। বারেবারে ঠিক করে থাকার কথা মনে করিয়ে দেয়। অনুপমা ছায়ার মতন লেগে থাকে দেবায়নের মায়ের পাশেপাশে। মুখ দেখে মনে হয় যেন একটু হলেই কেঁদে ফেলবে। দেবশ্রী যাওয়ার আগে বারবার দুই জনকে সাবধানে, থাকতে বলে।
বিকেলে মাকে ফ্লাইটে উঠিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরে আসে দেবায়ন আর অনুপমা।
অষ্টম পর্ব সমাপ্ত