কৃতিকা প্রথম থেকেই আমার এই কাকোল্ড আইডিয়াটা নিয়ে অল্পবিস্তর অস্বস্তিতে ছিল। আমি ওকে বারবার বোঝাতে লাগি যে ও আমার কথা শুনে কোনো ভুল কাজ করছেনা। সে এটা করছে শুধুমাত্র আমার জন্য , আর এই ব্যাপারটা কাক-পক্ষী তেও টের পাবেনা।
আমি তাই প্ল্যান করলাম তিন দিনের ভ্যাকেশনে মুম্বাই যাওয়ার আমার এই ফ্যান্টাসিকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য। উন্নত শহর , সেখানে এসব ওয়াইল্ড লাইফ ফ্যান্টাসি পূরণ হয়েই থাকে আকছার। তাই মুম্বাই ছিল আদর্শ গন্তব্য।
আমরা দিল্লী থেকে ট্রেনে মুম্বাই পৌঁছলাম। যাত্রাপথে যত পথচারীদের দেখলাম , প্রায় সকলের সাথে নিজের স্ত্রীকে কল্পনা করতে লাগলাম , এবং সেকথা নিজের স্ত্র্রীকেও জানালাম। আমার স্ত্রী কৃতিকা তা শুনে বারংবার চাপা হাসি হেসে এভোয়েড করে দিচ্ছিলো।
মুম্বাইয়ে তিন দিন কেটে গেলো। আমরা ঘুরলাম , খেলাম-দেলাম , কিন্তু আসল কাজের কাজটাই হলোনা। আমি নানা ভাবে চেষ্টা করলাম। জিগোলো খোঁজ করার চেষ্টা করলাম , ম্যাসাজ বয় খোঁজ করলাম , কিন্তু সুইটেবল কাউকে পেলাম না। কৃতিকাও নিজে থেকে কোনোরকম চেষ্টা করলোনা। আসলে ওর প্রথম থেকেই এই ব্যাপার চূড়ান্ত আপত্তি ছিল। রাজি হয়েছিলো কেবল আমার মুখ চেয়ে।
আমি হতাশ মনে দিল্লী ফিরে যাওয়ার তোরজোড় করতে লাগলাম। সন্ধ্যায় মুম্বাই থেকে দিল্লি ফেরার ট্রেনে উঠলাম। আমি চূড়ান্ত হতাশ ছিলাম। ভাবলাম যে আমার এই ফ্যান্টাসিটা সারাজীবন ফ্যান্টাসিই থেকে যাবে। আমি চুপ করে ছিলাম। কৃতিকা আমার মুখ দেখে বুঝতে পারছিলো আমি কতোটা হতাশ আছি। আমাকে দেখে কৃতিকার তখন অল্পবিস্তর খারাপ লাগতে শুরু করলো। কৃতিকা আমায় সান্ত্বনা দেওয়ারও চেষ্টা করলো , কিন্তু আমি হতাশায় চুপ রইলাম , কিচ্ছু বললাম না। এতো কষ্ট করে নিজের বৌকে রাজি করিয়েছিলাম এরকম অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য , সব শেষমেশ মাটি হয়েগেলো!!
আমরা ট্রেনের কম্পার্টমেন্টে বসেছিলাম। এসি টু টায়ার ফার্স্ট ক্লাস ছিল , চারটে সিট ছিল , এবং ভেতর থেকে দরজা দ্বারা লক করা যেত। চারটের মধ্যে দুটো সিট অবভিয়াসলি আমাদের ছিল। বাকি দুটো খালি ছিল।
ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছাড়তেই যাবে তখুনি একটি মধ্য-বয়সী ব্যক্তি কম্পার্টমেন্টে উঠলো। তার সিট আমাদের চার সিটার কেবিনেই ছিল। সে আমাদের কেবিনে ঢুকলো। আমার চেয়ে অনেক লম্বা ছিল , প্রায় ৬ ফুটের বেশি , মোটা গোঁফ ছিল। সে বারবার কৃতিকার দিকে তাকাচ্ছিলো। কৃতিকা প্রথমে তাকে নোটিশ করেনি। কিন্তু বারংবার সেই ব্যক্তিটির কৃতিকার দিকে চেয়ে থাকার ফলে কৃতিকারও নজরে তা পড়লো।
আমি কৃতিকার সাথে দূরত্ব বজায় রেখে বসেছিলাম বলে সে ভাবলো আমরা আলাদা। ট্রেন চলতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর টিকিট কালেক্টর এলো , তাকে সেই ব্যক্তিটি জিজ্ঞেস করলো যে কেবিনে আরেকটা সিট যার ফাঁকা আছে সে কোথা থেকে উঠবে? টিকিট কালেক্টর উত্তর দিলো কোটা স্টেশন থেকে কেবিনের চতুর্থ ব্যক্তিটি উঠবে। ব্যক্তিটি আবার জিজ্ঞেস করলো কোটা স্টেশনে ট্রেনটি কখন পৌঁছবে , উত্তর এলো দেরি আছে , প্রায় রাত ৩টে নাগাদ।
টিকিট কালেক্টর কেবিন থেকে চলে গেলো। কেবিনে এখন আমরা তিনজন ছিলাম। হটাৎ লোকটি কৃতি কে জিজ্ঞেস করলো , “ম্যাডাম, আপনি কোথায় যাচ্ছেন ?”
কৃতিকা প্রথমে একটু হকচকিয়ে গেলো , তারপর নিজেকে সামলে বললো , “দিল্লি , আর আপনি ?”
“আমিও , আর আপনি স্যার ?”, লোকটি আমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটি করলো। বুঝলাম যে আমাদেরকে সে আলাদা আলাদা সহযাত্রী ভাবছে।
আমিও তার এই ভাবনাটাকে না ভেঙে জবাবে বললাম আমারও গন্তব্যস্থল একই। কৃতিকা খানিকটা আশ্চর্য হলো এটা দেখে যে আমি লোকটার ভ্রম ভাঙানোর চেষ্টা করলাম না , আর নিজেকে ওর স্বামী হিসেবে পরিচয় দিলাম না।
লোকটা কৃতিকার সাথে কথা বলতে শুরু করলো। লোকটার এমন হাবভাব যেন আমি কেবিনে নেই, আছে শুধু ও আর কৃতিকা। আমি স্বামী হিসেবে পরিচয় না দেওয়াতে কৃতিকাও খোলসা করে আমাদের পরিচয়টা দিলোনা। কৃতিকা সৌজন্যতাবশতঃ লোকটার সাথে কথা বলছিলো। ওদের কথোপকথন থেকে বুঝতে পারলাম লোকটা এক্স আর্মি পার্সোনাল , শারীরিক গঠন ও কঠোরতা দেখে অবশ্য তাই আন্দাজ করেছিলাম। সাউথ ইন্ডিয়ান , নাম সুরেশ রেড্ডি , চল্লিশোর্ধ বয়স, প্রায় পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই।
কিছুক্ষণ পর লোকটা কেবিন থেকে বেরিয়ে বাথরুমে চলে গেলো একটু ফ্রেশ হতে। লোকটা বেরিয়ে যেতেই কৃতিকা জিজ্ঞেস করলো আমি কেন আমাদের সম্পর্কটাকে গোপন করে গেলাম। আমি তখন ওকে স্মরণ করলাম আমাদের মুম্বাই আসার কারণ , আর আমি ওকে এও বললাম যে এর থেকে ভালো সুযোগ ও যোগ্য মানুষ আমরা আর পাবোনা।
আমার কথা শুনে কৃতিকা একটু হকচকিয়ে গেলো। আমি ওর মনকে শান্ত করার চেষ্টা করলাম আর এটাও বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে এটাই তার জন্য সুবর্ণ সুযোগ , এই সুযোগকে দয়া করে সে যেন হাতছাড়া না করে। আমি ওকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করতে লাগলাম যাতে সে নিজে থেকে লোকটির সাথে close হওয়ার চেষ্টা করে।
কেবিনে দরজা খোলার আওয়াজে আমি সতর্ক হয়েগেলাম এবং কৃতিকার থেকে আলাদা হয়ে বসে পড়লাম। লোকটি কেবিনে ঢুকে নিজের জায়গায় বসলো। কিচ্ছুক্ষণ কেবিনে নিস্তব্ধতা ছেয়ে রইলো। কৃতিকা বুঝতে পারছিলোনা যে ওর কি করা উচিত। ও আমার দিকে চেয়ে রইলো। আমার শুকনো ও নিরাশ মুখ দেখে অবশেষে সে তার জীবনের সবচেয়ে সাহসী সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলো।
কৃতিকা সুরেশ রেড্ডি এর দিকে তাকিয়ে বললো , “আপনি কি এখন দিল্লিতেই থাকেন ?
সুরেশ রেড্ডি জবাব দিলো , “না , আমি এখনো চেন্নাই তেই থাকি , দিল্লি তে দুদিনের জন্য যাচ্ছি একটা কাজে। ”
“আচ্ছা “, কৃতিকা বললো।
“বাই দা ওয়ে , কিছু মনে না করলে , আমি কি আপনার নামটা জানতে পারি, আপনার নামটা জানা হয়নি। ”
“আমার নাম মৃদুলা চৌধুরী। ”
আমি অবাক হয়ে গেলাম। কৃতিকা কেন নিজের নামটা গোপন করে গেলো। মৃদুলা তো ওর বন্ধুর নাম। তবে কি কৃতিকা আজ ইতিহাস রচনা করতে চলেছে , যা দেখা ও অনুভব করার জন্য আমি এতোদিন অপেক্ষা করেছিলাম। আমি মনে মনে খুব এক্সসাইটেড হয়ে পড়লাম , এতোটা যে আমার বাঁড়াটা প্যান্টের ভেতর থেকে ফুলে ফেঁপে উঠলো , যা আমার টাইট জাঙ্গিয়াও লুকোতে অক্ষম হচ্ছিলো।
“আপনি নর্থ ইন্ডিয়ান ?” , সুরেশ রেড্ডি প্রশ্ন করলো।
“না, বাঙালি”
যাক একটা পরিচয় কৃতিকা ঠিক দিলো।
“আপনার স্বামী কি করেন ?”
কৃতিকা এবার কনফিডেন্টলি বললো , “business man , ব্যাবসার কারণে বিদেশে গ্যাছে। ”
অনায়াসে কৃতিকার এই মিথ্যে বলাটা তাও আবার আমার সামনে , সত্যি প্রশংসনীয়। আমি ওদের কথোপকথন ম্যাগাজিনে মুখ লুকিয়ে শুনছিলাম , যাতে ওই রেন্ডির ছেলে রেড্ডির মনে হয় আমি মন দিয়ে ম্যাগাজিন পড়ছি। ওদের মধ্যে কথা খুবই ভেষজ প্রকৃতির হচ্ছিলো , আমি চাইছিলাম তার মধ্যে একটু মসলা যোগ করতে। আমি তাই অবলীলায় আমার স্ত্রীকে একজন অপরিচিত মানুষের মতো করে বললাম , “ক্ষমা করবেন ম্যাডাম , আপনি কি দয়া করে ওই সিটে গিয়ে বসবেন , আমি শোবো। রাত তো অনেক হয়েছে। ”
আমি কৃতিকার মুখে একটু ভয়ের রেখা দেখতে পেলাম। আমার কথা শুনে ও অল্প নার্ভস হতে লাগলো। আমার কথা শুনে রেড্ডি কৃতিকাকে বললো , “মৃদুলা , তুমি আমার পাশে এসে বসতে পারো। আমার মনে হয় ওনার খুব ঘুম পেয়েছে। ”
রেড্ডি আমার স্ত্রীকে এবার নাম ধরে ডাকছিলো , হোক না তা নকল নাম , তবুও সে এতো তাড়াতাড়ি এতোটা আপন করে নিয়েছিলো আমার স্ত্রীকে ! যাই হোক আমি রেড্ডিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলাম আমার কথাকে সমর্থন করার জন্য ও আমাকে সহযোগিতা করার জন্য। কৃতিকা আমার দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো। কিছুক্ষণ ভাবার পর সে আমার প্রতি খানিকটা বিরক্ত হয়ে রাগের বসে সিট ছেড়ে উঠে রেড্ডির পাশে গিয়ে বসলো। সে হয়তো ভেবেছিলো আমি শেষ মুহূর্তে ওকে এসব করা থেকে আটকে নেবো , কিন্তু আমি যে ধনুর ভাঙা পণ করেছি কাকোল্ড হওয়ার জন্য সেটা হয়তো সে জানতো না।
কৃতিকা আমাকে খানিকটা ঠেস দিয়েই বললো , “স্যার , আপনি ঘুমোন। আশা করবো আমাদের দ্বারা আপনার ঘুমের কোনো ডিস্টার্ব হবেনা।”
কৃতিকা নিজেকে আর রেড্ডিকে সম্মিলিত ভাবে সম্ভোধন করছিলো তাই এখন আমি এর বদলে আমরা হয়েগেছিলো, আমরা অর্থাৎ কৃতিকা ওরফে মৃদুলা চৌধুরী এবং সুরেশ রেড্ডি।
আমিও কৃতিকা ওরফে মৃদুলা কে বললাম , “না না , কোনো ডিস্টার্ব হবেনা। আমার ঘুম খুব গাঢ় , একবার ঘুমিয়ে পড়লে চট করে তা ভাঙ্গেনা , তাই আপনারা যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন।”
এই বলে আমি উঠে কেবিনের লাইট অফ করে দিলাম , এবং চাদর টাকে ওদের সামনে প্রায় মাথা অবধি চাপা দিয়ে শুয়ে পড়লাম। আমি ইচ্ছা করে ওদের যা ইচ্ছে তাই করার কথাটা বললাম। পরোক্ষভাবে আমি আমার স্ত্রীকে আজকের রাতটা নিজের মতো কাটানোর জন্য উৎসাহ এবং অনুমতি প্রদান করলাম।
রেড্ডি নিজের ফোন বার করে তার আর্মি জীবনের ছবি দেখাতে লাগলো। তার সব অ্যাচিভমেন্ট সম্পর্কে বলতে লাগলো। রেড্ডি নিজের muscle ফুলিয়ে নিজের সুঠাম চেহারা দেখিয়ে কৃতিকাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করছিলো।
“মেয়েরা সাধারণত আমার এই সুঠাম চেহারার ফ্যান , পাগলও বলতে পারেন” , রেড্ডি এবার ওপেনলি কোনো দ্বিধা ছাড়া আমার বৌকে ফ্ল্যার্ট করতে লাগলো।
প্রত্যুত্তরে কৃতিকা বললো , “তা সেই মহিলা ভক্তের সংখ্যা কতো। ”
“হুমমমম। …..”, রেড্ডি মনে করার ছলে বললো , “আজকে তোমাকে নিয়ে মোট ৩২ হলো। ”
আপনি থেকে রেড্ডি তুমি তে নেমে এলো।
“তা , আপনার স্ত্রী জানে ?”
“সত্যি বলতে , আর্মিতে থাকতে আমাকে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হতো , বিভিন্ন মহিলার সাথে দেখা হতো , তাই এটা আমার কাছে খুব ন্যাচারাল , আর আমার স্ত্রীও সেটা বোঝে , তাই আমি ওপেনলি ফ্ল্যার্ট করতে একদমই দ্বিধা বোধ করিনা। ”
“হুমম , লাকি ম্যান। আপনি ভাগ্যবান , যে আপনি এরকম আন্ডারস্ট্যান্ডিং স্ত্রী পেয়েছেন , সবাই কিন্তু পায়না। সব মেয়েরা তার স্বামীকে এতোটা ছাড় দেবেনা। ”
কথাটা হয়তো কৃতিকা আমাকে উদ্দেশ্যে করেই বললো।
“কেন , তুমি হলে তোমার স্বামীকে ছাড় দিতে না ? আরেকটা কথা , আমাকে আপনি করে ডেকোনা প্লিজ , তুমি বললো। ”
“আচ্ছা ঠিক আছে , তুমি করেই ডাকছি আপনাকে। …. উপপপসস , সরি , তোমাকে। ”
“মাচ বেটার, নাউ টেল মি , তুমি তোমার হাসব্যান্ড কে এতোটা ছাড় দিতে না ? ”
“না। “, কৃতিকা সপাটে জবাব দিলো।
“কিন্তু কেন ? কাউকে কখনো বেঁধে রাখতে নেই , তাকে ছেড়ে দিতে হয়। যদি সে তোমার হয় তাহলে নিশ্চই সে তোমার কাছেই থাকবে। যদি থাকে বেঁধে রাখতে চাও তাহলে বরং উল্টোটাই হবে। সে আরো বেশি করে তোমার সাথে দ্বিচারিতা করতে চাইবে। ভালোবাসা মুক্তির কথা বলে , বাঁধনের নয়। স্বাধীনতার কথা বলে, পরাধীনতার নয়। তাই নিজের শরীরকে মেলে ধরো , কোনোরকম বাঁধন ছাড়াই “, এই বলে হালকা করে রেড্ডি আমার স্ত্রীয়ের কাঁধে হাত রাখলো।
রেড্ডি প্রথমবার আমার স্ত্রীকে ছুঁয়েছিল। শুধু রেড্ডি কেন , আমার ব্যাতিত এই প্রথম কোনো অন্য পুরুষ রেড্ডিকে এইভাবে ছোঁয়ার মতো সাহস দেখালো। আমার শিরায় যেন ৪৪০ ভোল্টের তরঙ্গ দৌড়ে গেলো। রেড্ডি জানতো কৃতিকা একটু লাজুক , রক্ষণশীল , ঘরোয়া মেয়ে , তাই ওকে ভালো করে খেলিয়ে জালে তুলতে হবে। আর ওদিকে কৃতিকা ভাবনায় বিভোর হয়ে গেছিলো। সে রেড্ডির কথা গুলোকে আমার কাকোল্ড ফ্যান্টাসির সাথে রিলেট করছিলো। এরই মধ্যে রেন্ডির বাচ্চা রেড্ডি কখন যে ওর এতো কাছে চলে এসেছিলো সেটা ও বুঝতে পাইনি।