প্রথম প্রথম কয়েকটা দিন কৃতিকার একটু সময় লাগলো নিজেকে সামলে নিতে। বেশ কিছুদিন ওকে খুব চিন্তাগ্রস্থ লাগতো। সবসময়ে মনে হতো কিছু একটা সে ভাবছে। মনের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে প্রবল দ্বন্দ্ব চলছে। আমি ওকে সময় দিলাম। বেশ কয়েকমাস যেতে দেখলাম কৃতিকা আবার ঝলমলে হয়ে উঠেছে , এবং তা আগের থেকে অনেক বেশি , অনেক বেশি উৎফুল্ল , ও হাসি খুশি। আমাদের যৌনজীবনও আগের থেকে অনেক বেশি রঙিন হয়ে উঠলো। কৃতিকা এবার নিজেই উদ্যোগ নিয়ে ফোরপ্লে করতো। কৃতিকার এই চেঞ্জ টা আমার খুব ভালো লাগলো। বলেনা যে, যা কিছু হয় ভালোর জন্যই হয়। হয়তো সেই রাতের ট্রেন জার্নি-টাই আমাদের যৌনজীবন কে পরবর্তীতে এক নতুন দিশা দিতে এক মোক্ষম ভূমিকা পালন করেছিল। হু নোস্ (Who Knows )!!
এবার আসি অজানা বিষয়ে , যা গল্পের বিবরণকারী অমিত চৌধুরী জানতো না। যা জানে গল্পের লেখিকা মানালী বসু। চলুন তবে ফিরে যাই স্মরণীয় ট্রেন জার্নি এর সেই রাতে। আমার গল্পের অন্তিম পর্যায়ে চলে এসছি। এখান থেকে গল্প এখন আমার অর্থাৎ গল্পের লেখিকা মানালী বসুর লেখনী তে। তবে শুরু করা যাক ,
ট্রেনের কেবিনে কৃতিকা ও রেড্ডির মধ্যে যৌনসঙ্গম হওয়ার পর আমরা জানি কৃতিকা ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে যায় শুধু সালোয়ার ও কুর্তিটা পড়ে। ব্রা ও প্যান্টি কেবিনের মেঝেতেই পড়ে থাকে। রেড্ডি তা (কৃতিকার ব্রা ও প্যান্টি) অমিতের গোচরেই অর্থাৎ অমিতের নজরের সামনেই নিজের ব্যাগে পুড়ে ন্যায়। তারপর সেও কেবিন থেকে বেরিয়ে যায় ওয়াশরুমে ফ্রেশ হওয়ার জন্য। কেবিনে তখন শুধু অমিত থাকে। যে নিজের বউয়ের পরপুরুষের সাথে করা অজাচার নিজের চোখে দেখে উত্তেজিত হয়ে থাকে এবং কেবিনে একা থাকা অবস্থায় নিজের ফুলে ফেঁপে ওঠা বাঁড়াটা কে খেঁচিয়ে ততক্ষণাৎ প্যান্টে মাল ফেলে দ্যায়। ক্লান্ত হয়ে সে ঘুমিয়ে পড়ে , তাই সে জানতে পারেনা সেই রাতে ঘটে যাওয়া বাকি ঘটনাসমূহ , যা তার জীবনকে অজান্তেই পাল্টে ফেলে।
কৃতিকা ট্রেনের ওয়াশরুমে ঢুকে অঝোরে কাঁদতে শুরু করলো। সে জানে সে কি করে এসছে তার স্বামীর মন রাখতে। তার চোখের জল যেন কোনো বাঁধ মানছিলো না। রেড্ডি কিচ্ছুক্ষণ পর কেবিন থেকে বেরিয়ে কৃতিকাকে খোঁজার চেষ্টা করলো। আপনারা জানেন ভারতীয় রেলের একটি কামড়ায় মোট চারটি বাথরুম থাকে , দুটি সামনে , দুটি পিছনে। রেড্ডি খুঁজতে খুঁজতে দেখলো যে তিনটি বাথরুমের লক খোলা , শুধু একটি ভেতর থেকে বন্ধ। রেড্ডির বুঝতে অসুবিধা হলো না , ভেতরে কে আছে। রেড্ডি নক করলো। কৃতিকা ভাবলো হয়তো অমিত এসছে ওকে খুঁজতে। তাই সে আর কিছু না ভেবেই দরজা খুলে দিলো।
খুলে দেখে রেড্ডি দাঁড়িয়ে। কৃতিকা রেড্ডিকে দেখে অবাক হয়ে যায় , খানিকটা পাজয়েলড (puzzled) হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কারণ কৃতিকা এক্সপেক্টই করেনি রেড্ডি কে। আর এরই সুযোগ নিয়ে রেড্ডি কৃতিকা কে ঠেলে বাথরুমে ঢুকে পড়ে। তারপর দরজাটা বন্ধ করে দ্যায়।
কৃতিকা ভয় পেয়ে বলে , “কি করছেন আপনি ??”
রেড্ডি উত্তর দ্যায় , “কি আবার করবো, তোমাকে দেখতে এসেছি , তুমি কি করছো। ”
“আপনি প্লিজ যান এখান থেকে। ..”
রেড্ডি আরো কাছে গিয়ে বললো , “কেন ? এরকম করছো কেন ? তোমার কি গিল্টি ফিল হচ্ছে ?”
এই কথা শুনে কৃতিকা কেঁদে ফেললো। তা দেখে রেড্ডিরও একটু খারাপ লাগলো। রেড্ডি কৃতিকা কে শান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলো। রেড্ডি একজন সেনসিবল ব্যক্তির মতো কৃতিকার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো , যেন সে কতোদিনের চেনা কোনো এক আপনজন। রেড্ডির এই মানবিক আচরণ দেখে কৃতিকা আরো ভেঙে পড়লো।
রেড্ডি বললো , “কি হয়েছে , তোমার স্বামী তো এখানে নেই। আর তুমি না চাইলে সে কোনোদিনও এই ব্যাপারে জানতেও পারবে না। আজকের রাতটার কথা তুমি চাইলে ভুলে যেও। ”
“কিন্তু আমার স্বামী তো সব জানে। ওর সামনেই তো সবকিছু হলো। ……” , কৃতিকা নিজের আবেগের তাড়নায় মুখ ফসকে সত্যিটা বলে দিলো।
“কি ????”, রেড্ডি অবাক হয়ে গেলো।
কৃতিকা আমতা আমতা করে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলো , কিন্তু সে সে ব্যর্থ হলো। রেড্ডির চাপে সে সবকিছু সত্যি কথাটা বলে ফেললো! সে এও বললো যে তার আসল নাম কৃতিকা , মৃদুলা নয়। এবং তারা কিসের জন্য মুম্বাই এসেছিলো।
সব শুনে রেড্ডির তো প্রায় মাথায় হাত। সে ভাবলো এরকমও অপদার্থ মেরুদন্ডহীন স্বামী কারোর হয় , তাও আবার এরকম সুন্দরী একটি মেয়ের। তবে তার ভেতরকার শয়তানটাও ঠিক তখুনি জেগে উঠলো , তার মন কে কু-বুদ্ধি দেওয়ার জন্য। সে ভাবলো এরকম একজন রূপসী অপসরা মেয়ে কে হাতছাড়া করা যাবেনা। এই সিচুয়েশনের ফায়দা তো তাকে তুলতেই হবে।
রেড্ডি কৃতিকা কে বললো , “দেখো আমি বুঝতে পারছি তোমার অবস্থাটা। সত্যি কথা বলতে , তোমার জায়গায় যদি আমি থাকতাম , তাহলে আমি প্রতিশোধ নিতাম।”
“প্রতিশোধ ? কিসের প্রতিশোধ ?”, অবাক হয়ে কৃতিকা জিজ্ঞেস করলো।
“ভালো করে ভেবে দেখো তো , আজ তোমার এতো গিল্টি ফীল হচ্ছে কার জন্য ? তোমার ওই অপদার্থ স্বামীর জন্য। ক্ষমা করবে , এইধরণের বিশেষণ তোমার স্বামীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করার জন্য। কিন্তু আমার মনে উনি এর থেকেও খারাপ বিশেষণের যোগ্য। ”
রেড্ডির কথা শুনে কৃতিকা চুপ করে রইলো। সত্যি তো ওর স্বামীকে ডিফেন্ড করার মতো জায়গা ওর স্বামীই রাখেনি। তাই এক পরপুরুষের কাছ থেকে স্বামীর নিন্দে তাকে শুনতে হচ্ছে।
রেড্ডি এখানেই থেমে না থেকে আরো বললো , “সে নিজের ফ্যান্টাসি পূরণ করার জন্য তোমাকে ইউস (use) করলো। তোমার ফিলিংস কে নিয়ে খেললো। তোমার একটুও রাগ হচ্ছেনা তার জন্য। মনে হচ্ছেনা যে রিভেঞ্জ নাও ওর উপর। ”
কৃতিকা ভাবলো , সত্যি রেড্ডির কথায় দম আছে। আজ ওর এই গিল্টি ফীল হচ্ছে একমাত্র অমিত চৌধুরীর জন্য। আজ ওর এতো কষ্টের কারণ তো ওর স্বামীই। ওর সত্যিই তো এখন অমিতের উপর রাগ হওয়া উচিত। ওকে উচিত শিক্ষা দেওয়া উচিত। কিন্তু কিভাবে ? সেটাই সে রেড্ডিকে জিজ্ঞেস করে বসলো। যা ছিল মস্ত বড়ো ব্লান্ডার , ওদের দাম্পত্য জীবনের জন্য।
কৃতিকা বললো , “রিভেঞ্জ নেবো ? কিন্তু কিভাবে ?”
রেড্ডি মনে মনে হাসলো। লক্ষ্যের যে খুব কাছে সে চলে এসেছে।
“রিভেঞ্জ , অর্থাৎ প্রতিশোধ। এই প্রতিশোধ এমনভাবে নাও , যাতে সাপও মরে , এবং লাঠিও না ভাঙে। ”
“মানে ? সেটা কিভাবে ?”
“মানে তোমার স্বামী জানতেও পারবেনা তুমি ওর সাথে কি করেছো , অথচ তুমি তোমার মনকেও শান্ত্বনা দিতে পারবে এই বলে যে তুমি তোমার স্বামীকে শিক্ষা দিতে পেরেছো ওর অজান্তেই। তাহলে তোমার সংসারও ভাঙবে না , আর রিভেঞ্জও নেওয়া হয়ে যাবে। অ্যাট দা এন্ড অফ দা ডে , তোমাকে তো ওর সাথেই থাকতে হবে। তাই রিভেঞ্জ টা এমনভাবে নাও যাতে তোমার মনও শান্তি পায় , আর তার প্রভাব তোমাদের দাম্পত্য জীবনেও না পড়ে। ”
কৃতিকা গভীর চিন্তায় পড়ে গেলো। সে রেড্ডিকে বললো , “হেঁয়ালি না করে বলুন আপনি ঠিক বলতে চাইছেন। ”
“এই যে এতোক্ষণ যা তুমি তোমার স্বামীর সামনে করলে , স্বামীর মন রাখতে , সেটাই তুমি ওর অনুপস্থিতি তে করো। ” , রেড্ডি সোজাসুজি বলে ফেললো এই কথাটা।
“মানে !!!!..”, কৃতিকা একপ্রকার চিৎকার করে উঠলো।
“আস্তে , আস্তে। এতো রিএক্ট করার মতো কিছু হয়নি। ”
“না না , আমি এসব কিছু করতে পারবো না। একবার করেই আমার এতো অনুশোচনা হচ্ছে , এরপর এসব আবার হলে আমি লজ্জায় মরেই যাবো। দয়া করুন , আমাকে যেতে দিন। “, এই বলে কৃতিকা রেড্ডিকে সরিয়ে বাথরুম থেকে বেরোতে চাইলো। কিন্তু রেড্ডি ওকে চেপে ধরলো , আর বললো , “যেতে হলে যাও , কিন্তু একবার একটু থেমে আমার কথাটা ভেবে দেখো। সত্যি করে বলো তো, তোমার ভালো লাগেনি ? মানছি একপ্রকার বাধ্য হয়ে তুমি এসব করেছো , কিন্তু আমি তো যথাযত চেষ্টা করেছি তোমাকে আনন্দ প্রদান করার। অন্তত তার দাম কি তুমি দেবেনা ? এই ভাবে স্বামীর কথায় আমাকে ব্যবহার করে ছেড়ে দেবে ? আমি কি আরেকটা চান্স ডিজার্ভ করিনা ?”
“আপনি কেন বুঝতে চাইছেন না , আমি বিবাহিতা। যা করেছি স্বামীর কথা রাখতে করেছি। তাই আমি নিজেকে এখনও সতী বলেই নিজেকে মনে করি। এখন ওর অজান্তে এসব করলে সেটা কে অসতীপনাই বলবে লোকে। ”
“লোকে !! কোন লোকে ? কে দেখতে আসছে তোমাকে ? কেই বা বিচার করতে যাবে , তুমি সতী না অসতী , তা। ”
“ঈশ্বর। সে তো সব দেখছে। ”
“নিজের শারীরিক চাহিদা পূরণ করা যদি পাপ হয় , তাহলে এই পাপ আমি হাজারবার করতে রাজি আছি , কৃতিকা। ”
এই বলে রেড্ডি আচমকাই কৃতিকা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
“কি করছেন , ছাড়ুন”, কৃতিকা ছটফট করতে লাগলো।
“না মৃদুলা , আমাকে এভাবে প্লিজ ফিরিয়ে দিয়োনা।”
“আমি মৃদুলা নই , আমি কৃতিকা।”
“তুমি আমার কাছে মৃদুলাই থাকবে, কৃতিকা তোমার স্বামীর কাছে। এখন আমার বাহু-যুগলে যে বন্দি সে মৃদুলাই। আমার কাছে এসো সোনা, এরকম কোরোনা। ”
ট্রেনের বাথরুম স্বাভাবিক ভাবেই অতো বড়ো ছিলোনা। তার মধ্যে এক পাশে কমোড (টয়লেট সিট) ছিল। স্বভাবতই ওদের দুজনের জন্য ওখানে দাঁড়ানোর জায়গা কম ছিল। তাই কৃতিকা না চাইতেও রেড্ডি আর ও খুব কাছাকাছি ছিল একে অপরের।
রেড্ডি চোখ তুলে কৃতিকার দিকে তাকালো। কৃতিকা কিছু বলার আগেই রেড্ডি নিজের হাতটা নিয়ে গেলো কৃতিকার পশ্চাদদেশে। রেড্ডি কৃতিকার পাছায় হাত রাখলো। রেখে কৃতিকা কে টান মেরে নিজের দিকে আনলো। তারপর বাকিটা ইতিহাস। …….
সমাপ্ত। ..