Bangla Choti sex novel – 3rd Part
জীবনের উপর দিয়ে এতবড় একটা ঝড় বয়ে গেল মাকে দেখলে মনেই হয়না। নির্বিকারভাবে ডুবে আছে দৈনন্দিন কাজের ব্যস্ততায়। বরেনদার কথা মনে পড়ল ভাল-মন্দ সব ঘটনাকে সহজভাবে দেখবি,কোন কিছুই আকস্মিক নয়। স্বাভাবিক নিয়মে ঘটে। পরশুদিন ঘাট কাজ উঠোনে ত্রিপল দিয়ে চালা করা হয়েছে। মা বলল,মনা, লিস্ট মিলিয়ে সবাইকে বলবি, আত্মীয়-স্বজন কেউ যেন বাদ না যায়।
মাকে দেখি অবাক হই।শুধু মা কেন আমার অভিজ্ঞতা মেয়েরা যেন অন্য ধাতুতে গড়া।দময়ন্তীও কটা দিন কম ছোটাছুটি করেনি কিন্তু সব কিছুতে নির্বিকার,বাইরে কোনো প্রকাশ নেই।
বাড়ী বাড়ি ঘুরে কার্ড বিলি শেষ করেছি খান কয়েক কার্ড বাকি। কলকাতায় গিয়ে বাবার অফিসেও নেমতন্ন সেরে এসেছি। দময়ন্তীর সঙ্গে পথে দেখা,কিছু বলার আগেই বলল, মনু আমাকে কার্ড দিতে হবেনা, আমি যাবনা।
খুব খারাপ লাগল বললাম, খুব বিরাট কিছু আয়োজন করিনি কিন্তু যতটুকু করছি আন্তরিকভাবেই করছি।
–রাগ কোরনা, এরকম অবস্থায় কারো বাড়ী গিয়ে একপেট খাওয়া আমার ভাল লাগে না। মাসীমাকে বোলো পরে একদিন যাবো।
–সে তুমি যা ভাল বোঝো করবে।আমার পিতৃদায় আমাকে যা করার করতেই হবে।
অবশিষ্ট কার্ডগুলোয় চোখ বোলাতে দেখি বিজয়া। ওহো ছেড়ে এসেছি বিজয়ামাসী মানে মায়ের দুঃসম্পর্কের মামাতো বোন। যোগাযোগ তেমন নেই।মার কাছে গল্প শুনেছি মহিলা খাণ্ডারনি টাইপ।আবার পিছন দিকে যেতে হল। বেড়া দিয়ে ঘেরা দোচালা টিনের বাড়ি। বেড়ার দরজা ঠেলে ঢুকতে গিয়ে কানে এল দুই মহিলার গলা। একটি বাজখাই আর একটি শান্ত।
বাজখাইঃ ফের মুখে মুখে চোপা? যমের অরুচি বাজা মাগি–মর মর।
শান্তঃ মরার বয়স তো আপনার, ভরা যৌবন আমার কোন দুঃখে মরতে যাবো আমি?
বাজখাইঃ তাহলে আশনাই করতে সুবিধে হয়, খানকি মাগি কোথাকার–।
শান্তঃ সকাল বেলা মুখ খারাপ করবেন না বলে দিচ্ছি।মুখ নয়তো আস্তাকুড় একটা।
বাজখাইঃ কেনরে তোর ভয়ে? কিসের এত কুটকুটুনিরে তোর?
বিজয়ামাসির ছেলে অতুলদার বড়বাজারে কাপড়ের দোকান আছে বলে ভাল ঘরে বিয়ে দিয়েছিল। পরে জানাজানি হয় নিজের দোকান নয় কাপড়ের দোকানের মাইনে করা কর্মচারি। তাই নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। বৌদির ভাইরা ষণ্ডাগণ্ডা ধরণের বলেছিল হেপো রোগীটাকে মেরে বোনের আবার বিয়ে দেবে।অতুলদার বুকের হাড়পাঁজরা বের করা ব্লাডারের মত ফুলে আছে পেট খাটাখাটনি করলে ফ্যস ফ্যস হাঁপাতে থাকে।
ভিতরে ঢুকবো কিনা ভাবছি নাকি ফিরে যাবো? মায়ের আদেশ সবাইকে কার্ড দিবি তোর বাবার মঙ্গলের কথা মনে রাখবি বাবা।গলা খাঁকারি দিয়ে হাঁক দিলাম, অতুলদা-আ—।
ভিতরে বচসা থেমে গেল।বিজয়ামাসি কর্কশ গলায় বলেন,ক্যারা ভর দুপুরবেলা চিল্লাচিল্লি করে?
–আমি হিজলতিলির মনা, হেমের ছেলে।
মাসী বেরিয়ে এসে আমাকে আপাদ মস্তক দেখে বলল, কে মরল রে?
–তোমাকে বলিনি মণিমেশোর কথা? অতুলদা বেরিয়ে এসে বলে। কলকাতা যাবে বলে তৈরি হয়ে এসেছে।
–অ।কবে মল্লো র্যা মণি?
দরজার আড়াল থেকে একটা মুখ সরে গেল। ডাগর চোখ মেলে আমাকে দেখছিল। অতুলদা বলল, চলিরে মনা ট্রেনের সময় হয়ে গেছে। তুই এবার পরীক্ষা দিয়েছিস না?
–হ্যাঁ ,যেও অতুলদা মা বারবার করে বলে দিয়েছে।
–হ্যা-হ্যা তুই বস আমি আসি।মার সঙ্গে কথা বল।
অতুদা চলে গেল। মাসিকে বললাম, আমি আর বসবো না অনেক কাজ পড়ে আছে।
–হ্যাঁরে হেমের আর একটা ছেলে কি যেন নাম? সে কোথায়?
–সরোজ বিদেশে থাকে আসার অসুবিধে আছে।আসি–তোমরা যেও।
বাড়ী থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমেছি কানে এল,ঠাকুর-পো। বেড়ার ধারে গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে অতুলদার বউ রেবতী। সত্যি ভরা যৌবন পানের মত মুখাকৃতি ঢলঢলে চোখ। এগিয়ে গিয়ে বললাম, মাসিকে নিয়ে আসা চাই কিন্তু বউদি।
–তোমার মাসির কথা জানিনা। তুমি যখন বলেছ আমি নিশ্চয়ই যাবো।
বাড়ি ফিরে মার মুখে শুনলাম, দময়ন্তী এসেছিল একটু আগে। এক কাপ চা ছাড়া কিছু খায়নি। অনেক্ষন ছিল মায়ের সঙ্গে গল্প করেছে। মা খুব খুশি,অত বড় ঘরের মেয়ে একফোঁটা দেমাক নেই। খুটিয়ে খুটিয়ে জিজ্ঞেস করছিল কিভাবে কি করছি। বড় লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে।
দময়ন্তী এসেছিল? অদ্ভুত লাগে ওর আচরণ। সবাই ওকে ভাল বলে তাহলে বাবা-মার সঙ্গে অমন আচরণ করে কেন?কি ছটফটে জলি মেয়ে বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই মনের মধ্যে প্রতিনিয়ত চলছে ভাঙ্গাচোরা।
আত্মীয়স্বজন আসতে শুরু করেছে।রেবতী বৌদিকে নিয়ে বিজয়া মাসিও এসে পড়েছে। অতুলদা কলকাতায় গেছে সন্ধ্যেবেলা আসবে। দুহাতের অনামিকায় কুশাঙ্গুরীয় পরে পুরোহিত মশায়ের সঙ্গে মন্ত্রোচ্চারণ করছি। রান্না ঘরের দায়িত্ব সামলাচ্ছে রেবতী বউদি।একফাকে আমাকে কালো চা দিয়ে গেছে।মা অতিথি আপ্যায়ন করছে। সুগতদা-রিনাবৌদি অনুদি আশুস্যার পাড়ার অনেকেই এসেছেন।বাবার অফিসের কলিগরা ওবেলা অফিস ছুটির পর আসবে। পিণ্ডদানের সময় পুরোহিত জিজ্ঞেস করেন,সাত পুরুষের নাম জানা আছে?
মা এসে বলল, চার পুরুষ জানা আছে।
–ব্যস ব্যস ওতেই হবে। যথা নামে দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছি।
খাওয়া দাওয়া সারতে সারতে বেশ রাত হল। হ্যাজাক এনে রাখা হয়েছিল বিদ্যুতে ভরসা নেই। পরদিন দুপুর বেলা বিজয়া মাসি ফেরার তোড়জোড় করছেন মা বলল, বিজুদি রেবাকে কদিন আমার কাছে রেখে যাও।কতকাজ পড়ে আছে একা-একা–।আগে তো কোনদিন একা থাকিনি।তোমার অসুবিধে হবে?
–নাহ অসুবিধের কি আছে।তবে ঘরে তোর আইবুড়ো দামড়া আছে,একটু চোখে-চোখে রাখিস। বউমার আবার হাড়ীমারা অভ্যেস আছে।
মা একটু ইতস্তত করে কি বলবে বুঝতে পারেনা। এইধরনের আলাপে অভ্যস্ত নয়।বিজয়া মাসি বলেনি বিষের পুটুলি নিয়ে কদিন থাক বুঝতে পারবি কি জ্বালায় জ্বলছি।তোরা কেবল আমার দোষ দেখিস।
মাসি চলে গেল,পিছন থেকে ভেংচি কাটে রেবতী।পুটুলির কথায় মনে পড়ল মলিনাবৌদির কথা। পুটুলিটা ফেরত দেওয়া হয়নি।কাজ মিটেছে এবার একদিন সময় করে পুটুলিটা দিয়ে আসবো।আর একটা কৌতূহল আমাকে টানছে। বাবার আলমারি ঘাটতে ঘাটতে একটা পুরানো ডায়েরি পাওয়া গেছে। মনে হল ঠাকুরদা বলেন্দ্র মোহনের ডায়েরী। বাধানো মোটা পাতাগুলো লালচে হয়ে এসেছে। হয়তো আমাদের বংশের পুরানো কথা কিছু জানা যাবে। জ্ঞান হওয়া অবধি পুর্ব পুরুষ বাবা-মা ছাড়া আর কাউকে দেখিনি,কেবল তাদের কথা শুনেছি। রেবতী বৌদিকে পেয়ে মা বেশ আছে।বিজয়ামাসী চলে যাবার পর হরিণের মত ছুটে বেড়াচ্ছে সারা বাড়ী।ডায়েরি পড়ছি রেবতী বৌদি চা দিয়ে বলল,সারাক্ষণ বই পড়লে হবে একটু অন্যদিকেও দেখো।
একা রেবাবৌদিই সংসার সামলাচ্ছে । কোন কাজ মাকে করতে দিচ্ছেনা। বয়স আর কত হবে জোর হলে এক-আধ বছরের বা বড়সমবয়সী। মায়ের চুল বেধে দেওয়া সন্ধ্যে বেলা মায়ের সঙ্গে বসে টিভি দেখা।সব দিকে নজর। আমার ঘরে ডায়েরি নিয়ে বসেছি। বলেন্দ্র মোহনকে চোখে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। সন্তপর্নে ডায়েরির পাতা ওল্টাচ্ছি।শুকনো পাতার মত কড়কড়ে হলদেটে হয়ে এসেছে কাগজ।
“…আমি বলেন্দ্র মোহন লোকে ডাকনাম বলা। গ্রামের লোকজন বলিত ছোট কর্তা। ….লক্ষ্মীর অঢেল কৃপা থাকিলেও সরস্বতীর সহিত খুব একটা বনিবনা ছিল না। বৌ-ঝিরা আমার উৎপাতে তটস্থ। সেজন্য সকাল সকাল আমার বিবাহ দেওয়া হইল। যাহা আছে তাহা হইতে যাহা নাই তাহার প্রতি ছিল বেশি ঝোঁক। ….শুনিয়াছি আমার বউ দামিনী নাকি হাইস্কুলের গণ্ডি পার হইয়াছে। কিন্তু আমার কাছে মেয়ে মানে মেয়ে….রমণের পাত্রি বলিয়াই তাহাদিগকে বলা হয় রমণী।….পুকুর ধারে জঙ্গলের মধ্যে বসিয়া থাকিতাম জলকেলি রত রমণীদের অনাবৃত অংশ কখন একপলক দেখিতে পাইবো? মেয়েদের শরীর দেখিতে এবং ছানিতে খুব আমোদ পাইতাম। ধরা পড়িলেও কাহারো বাবার নিকট অভিযোগ জানাইবার মত দুঃসাহস ছিল না।…বাবা গজেন্দ্র মোহন ছিলেন ডাকসাইটে জমিদার।…গজেন্দ্র মোহনের এককথা না দেখাইলে বলা দেখিবে কি রূপে? এই অকাট্য যুক্তির সামনে অসহায় হইয়া অধোবদনে অভিযোগকারিকে বাড়ি ফিরিয়া যাইতে হইত….একদিনের ঘটনা মনে আছে…ঘরে ঢুকিতে আমার পতিব্রতা স্ত্রী দামিনী চাপা গলায় বলিয়াছিল, লজ্জা করেনা আপনার অন্যের বউ-ঝিদের বিরক্ত করতে…. সেই সময় গজেন্দ্র মোহন পাশ দিয়া যাইতেছিলেন….বউমা তুমি মেয়েছেলে পুরুষদের ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামাইবার কি আবশ্যক….।”
বাবা কথায় কথায় কেন বলতেন “রক্তের দোষ” এখন বুঝতে পারছি। টিভি দেখতে দেখতে উঠে চা নিয়ে এল রেবতী চা নামিয়ে রেখে দাঁড়িয়ে আছে জিজ্ঞেস করি,কিছু বলবে?
ডায়েরির পাতা উলটে দিয়ে বলে, সারাক্ষণ খালি বই মুখে বসে থাকা।ঘরে আরো লোক আছে সেদিকে একটু খেয়াল করতে নেই?
আর একটু হলে ছিঁড়ত, ডায়েরিটা সরিয়ে রেখে রেবতীর দিকে তাকালাম।জিজ্ঞেস করলাম, বাড়ির জন্য মন কেমন করছে?
–বাড়িতে আছে টা কে শুনি?
–কেন অতুলদা।
–ঐ ধ্বজভঙ্গর কথা বোলো না ঠাকুরপো। জীবনটা আমার ঝালাপালা করেদিল।
এত কাছ ঘেষে বসেছে রেবতীবৌদির নি;শ্বাস মুখে লাগছে। বুঝতে পারলাম বেশিক্ষণ কথা বললে আর বেশি বিষ উদ্গার হবে। ডায়েরিটা তুলে রেখে বেরিয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ লাইব্রেরিতে কাটিয়ে বাড়ি ফিরছি ভোলা এসে বলল মনাদা তোমাকে কল্যানদা ডাকছে।
ভোলা সব সময় পার্টি অফিসে কল্যানদার ফাইফরমাশ খাটে। আশা যদি কল্যানদা একটা চাকরি জুটিয়ে দেয়। পার্টি অফিসের ভিতরে ঢুকে দেখলাম, দশ-বারোজন কমরেড বসে আছে আর কমরেড কল্যানদা ক্লাস নিচ্ছেন।আমাকে দেখে ইঙ্গিতে বসতে বললেন। কমরেড শুধু কোয়াণটিটি দিয়ে হবেনা কোয়ালিটি চাই। শিক্ষিত ছেলেদের বেশি বেশি করে পার্টির ছত্রছায়ায় আনতে হবে। তোমরা হচ্ছ ভ্যানগার্ড অফ দি পিউপল। যথেষ্ট বড় হয়েছে পার্টি, বড় হলেই হবেনা হেলদি হতে হবে। মনোজের মত ছেলেরা অনেক কিছু করতে পারে। অঞ্চলে ওর বাবার একটা সুনাম ছিল। মণিদা আমাদের পার্টির ওয়েল উইশার ছিলেন। দাতে যেন কাঁকড় বিধল,বাবা পার্টির ওয়েল উইশার?
হঠাৎ আমার দিকে নজর পড়তে কল্যানদা বলেন, মনা তুই কিছু বলছিস নাতো?
–দাদা আমি কিছু বুঝতে পারিণা।
কল্যানদার মুখে গর্বের হাসি ফোটে বলেন, মার্ক্সবাদ আমি একদিনে আয়ত্ত করিনি। দীর্ঘ অনুশীলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে আজ এইজায়গায় পৌঁছেছি। যোগাযোগ রাখিস ধীরে ধীরে আয়ত্ত হবে। হাবু সবাইকে চা দে।
বাসায় ফিরে খাওয়াদাওয়া করে ডায়েরি নিয়ে বসলাম।
“…মনি আমাদের বংশে প্রথম গ্রাজুয়েট। স্কুলের পরীক্ষায় পাশ করিয়া কলকাতায় চলিয়া গেল পড়িতে,বাবার আপত্তি ছিল কিন্তু দামিনীর জেদের নিকট হার মানিতে হইয়াছিল। মনি বি. এ. পাস করিলো এবং কাহাকেও না বলিয়া একটা হাঘরে কন্যাকে বিবাহ করিয়া বসিল….বাড়ী আসিতে গজেন্দ্র মোহনের সাফ কথা হয় ওই মেয়েকে ত্যাগ করো অন্যথায় এই বাড়ী-সম্পত্তির মায়া ত্যাগ করিতে হইবে।দামিনী কত হাতে পায়ে ধরিল কিছুতেই গজেন্দ্র মোহন টলিলেন না।….মনির মাথায় কিছু নেই…নাহইলে একটা মেয়ের জন্য এই বিশাল সম্পত্তি কেউ কদাপি ত্যাগ করিতে পারে? মনি আমার পুত্র হইলেও পিতার মুখের উপর কিছু বলা আমাদের বংশে কল্পনা করিতেও পারিতাম না।মণিমোহনের গৃহত্যাগ দামিনী ব্যতীত কাহাকেও স্পর্শ করিতে পারে নাই। “
দামিনী আমার ঠাকুর-মা? রাত বাড়ছে চোখের পাতে বুজে আসছে। তবু ডায়েরি হতে মন ফেরাতে পারছি না।রাত গভীর হতে থাকে দূরে কোথাও শিয়াল ডাকছে।
“……সারারাত দামিনী কাঁদিল …কামার বউয়ের বিশাল গামলার মত পাচ্ছা আমাকে টানিতেছে… জানলা দিয়ে উকি মারিয়া দেখিলাম ..কামার বউ একা কাপড় হাঁটুর উপর উঠিয়া গিয়াছে…ঈশ আর একটু উঠিলে রসের খনি উন্মুক্ত হইয়া যাইত…. হুড়কো খুলিয়া বুকের উপর ঝাঁপাইয়া পড়িলাম…..ছোট কত্তা …কি করেন…দম বের হয়ে আসছে… কামারের আসবার সময় হইছে…আমি হাসিয়া বলিলাম,প্রাণের মায়া থাকিলে সে হারামজাদা পুনরায় গ্রামে প্রবেশ করিবেনা।…কামারবউরে জাটাইয়া ধরিয়া ঠাপাইতে লাগিলাম..।”
আমার বুকের মধ্যে হাঁসফাঁস করছে। মনে হচ্ছে কিছু একটা ভারি জিনিস যেন বুকের উপর।কে বলেন্দ্রমোহন নাকি? প্রাণপণে সরাতে চেষ্টা করছি। মুখ দিয়ে বোধহয় গোঁ-গোঁ শব্দ বের হয়ে থাকবে …..ঘুম ভেঙ্গে গেল।পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম?অন্ধকারে রেবতিবৌদির গলা শুনতে পেলাম,চুপ! শব্দ কোরনা,আমি!চুপচাপ শুয়ে থাকো ভয় নেই। বলে আমার ঠোট কামড়ে ধরল।উর্ধাঙ্গ অনাবৃত পিঠ ভিজে গেছে ঘামে,কোমরের কাছে সায়াটা দড়ির মত পাকিয়ে আছে।ভারি বুক দুটো চেপে বসেছে আমার গলার কাছে। চেতনা ফিরতে শরীরটা যেন লোহার মত শক্ত হয়ে গেল।নিজেকে বিপুলভাবে আন্দোলিত করতে করতে রেবা বৌদি ফিস ফিস করে বলল,আমি জীবনে কিছু পাইনি…শক্ত হয়ে আছো কেন…তাল দেও….ক্যাবলা কোথাকার …..হ্যা এইভাবে….এইভাবে ….মনা তুমি কি সুখ দিচ্ছ…আঃআআআ আআ …..অবাধ্য অস্থির পুরুষাঙ্গ রেবতীর গহন উষ্ণ শরীরে গেথে যাচ্ছে বুঝতে পারছি।রেবতী বৌদি ক্ষিপ্ত মার্জারের মত এ্যা-হা-ওওও….এ্যা-হা-ওওও করে গর্জে চলেছে।হঠাৎ উর-ইইই মনউরে-এ-এ-এ বলে ককিয়ে উঠে আমার বুকের উপর নেতিয়ে পড়ল রেবাবৌদি।ফোস ফোস করে শ্বাস পড়ছে।এ আমি কি করলাম।ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
বেলায় ঘুম ভাঙ্গল।চোখেমুখে জল দিয়ে বসে আছি চুপচাপ।রেবাবৌদি চা নিয়ে এল।ভোরবেলা স্নান করে মার একটা তুতে রঙের শাড়ি পরেছে,আধভেজা চুল কালো মেঘের মত ছড়িয়ে আছে পিঠের উপর।ওর চোখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না।
চায়ের কাপ নামিয়ে রেখে চাপা গলায় বলল, এমন কিছু চুরি-ডাকাতি করনি যে অমন চোর-চোর ভাব করে থাকতে হবে।কি হল আমার দিকে তাকাও তুমি ত জোর করে কিছু নেওনি। আমি যেচে তোমাকে দিয়েছি। রেবাবৌদির গলা ধরে এল, কেন দেবো না বলো? চিরকাল ঐ ধ্বজভঙ্গকে নিয়ে থাকতে হবে?আমার তো একটা শরীর নাকি?
রেবাবৌদি চলে গেল। ঢলঢলে ভরা যৌবন অথচ….? রেবাবৌদির অবস্থা দেখে খুব কষ্ট হল। মনে পড়ল বাবা বলতেন, রক্তের দোষ! তাই কি? কিন্তু আমি তো বলেন্দ্র মোহনের মত জোর খাটাই নি।
রেবতীবৌদি ঘুরছে ফিরছে কাজ করছে,চোখে মুখে একটা পরিতৃপ্তির ছাপ দেখে ভাল লাগল।বুঝতে পারি বিজুমাসীর বাড়ীতে খুব সুখে দিন কাটছিল তা নয়।
মলিনা বৌদির জিনিসটা ফেরত দেওয়া হয়নি।কদিনের ব্যস্ততায় খেয়ালই হয়নি। একদিন গিয়ে দেখি দরজায় তালাচাবি দেওয়া,কোথায় গেল? রমেশদা নাকি এখন পুলিশ হেফাজতে। খুব দৌড়াদৌড়ি করছে বৌদি। কেলো-শিবেদের সঙ্গে সঙ্গে বেশ আলাপ আছে রমেশদার। পুববাংলায় নাকি ডাকাতি করতো রমেশদা,শোনা কথা। ভোলা ছুটতে ছুটতে এসে বলল, মনাদা তোমাকে ডাকছে।
–কে? এখন আবার কে ডাকছে?
–ডাক্তারবাবুর মেয়ে।
দূরে মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দময়ন্তি। জিজ্ঞেস করি,ভোলা তুই মার্ক্সবাদ বুঝিস?
–ওইসব বোঝার দরকার নেই।
–তাহলে তুই পার্টি অফিসে পড়ে থাকিস কেন?
–এখানে নাকি পি ডব্লিউ ডির কাজ হবে। দেখি যদি কোন চাকরি-বাকরি মেলে?কতদিন বেকার থাকবো বলতো?
–তোর মনে হয় কল্যানদা তোকে কাজ পাইয়ে দেবে?
ভোলা অদ্ভুতভাবে হাসে।
–কিরে হাসছিস?
–কল্যানদা হেভি বাতেলাবাজ।মনাদা তুমি ওর খপ্পরে পোড়ো না।
–তাহলে তুই কেন পড়ে আছিস?
–কিছু তো করতে হবে।মনের সান্ত্বনা বলতে পারো।উদাস গলায় বলে ভোলা।
ভোলা ফাইভ পর্যন্ত পড়েছে। বোকাহাবা মত মনে হয়। ভোলার মুখে এই কথা শুনে অবাক লাগে।বাইরে থেকে বোঝা যায় কতটুকু? দময়ন্তীর কাছে পৌছাতে ভোলা চলে গেল।
–কি কানে শুনতে পাওনা? কখন থেকে ডাকছি কার কথা ভাবছিলে?
ডেকে এনে এইসব কথা,আমি ভেবেছিলাম বুঝি কোনো দরকার আছে।সত্যি কথা বলতে কি ওর বকাবকি শুনতে বেশ মজা লাগে জিজ্ঞেস করি,এই কথা বলার জন্য ডাকলে?
–বাজে বকার সময় নেই।আমাকে স্টেশনে পৌঁছে দেবে চলো।
দুজনে পাশাপাশি চলছি। দময়ন্তী বলল,কথা বলতে পারনা? বোবা নাকি?
–কি বলবো?
–আমার কথা মনে পড়েনা তোমার?
–তোমারতো দেখাই পাওয়া যায়না।
–বাড়ী চেনো না?
–চিনবো না কেন? যদি কেউ কিছু মনে করে?
–ন্যাকার মত কথা বোলনা।কে কি মনে করলো তাতে আমার কি যায় আসে।
–ডাক্তারবাবুকে ভীষণ ভয় করে।
–চিরকাল ভয় নিয়ে থাকো তুমি। মেনি মুখো পুরুষ মানুষ আমি দুচক্ষে দেখতে পারিনা। শুনলাম আজকাল পার্টি অফিসে যাওয়া শুরু করেছো? কি বিপ্লব করার ইচ্ছে হয়েছে নাকি?
–কল্যানদা ডাকল তাই–।
–ডাকলেই যেতে হবে? তোমার কোনো ইচ্ছা-অনিচ্ছে নেই?
–এরকম ধমকালে আমি কিন্তু চলে যাবো।
–ওঃ বাবা! আবার রাগ আছে দেখছি। ট্রেন আসছে,সময় করে একবার বাড়িতে এসো।কি আসবে তো?
ট্রেন আসতে দময়ন্তী উঠে পড়ল।রাস্তা ঘাটে বেশি বের হয় না অথচ এত খবর পায় কি করে? ঐ টুকু মেয়ে কেমন গুরুজনের মত কথা বলে। বাড়ী ফেরার পথে দেখলাম মলিনাবৌদির দরজায় তালা নেই। সন্ধ্যে বেলা জিনিসটা ফেরত দিয়ে যাবো। মা একা বাড়িতে,রেবতী ফিরে গেছে। দু-একজায়গায় চাকরির দরখাস্ত পাঠিয়েছি কেউ কেউ ডেকে ইন্টার্ভিউ নিয়েছে। ওই অবধি শেষ, আমারও অবস্থা ভোলার মত।
কলকাতা থেকে ফিরল মলিনা। আজ কেস ছিল। টাকা পয়সার দরকার ভাবছে একটা বিস্কুট বিক্রি করবে। রমেশও তাই বলছিল। মনাকে বলতে হবে। অনেকদিন হল শরীরে অস্বস্তি শুরু হয়েছে, মলিনা কামুক প্রকৃতি। ট্রেন থেকে নেমে দেখল কেলো দাঁড়িয়ে আছে বাইক নিয়ে।
তাকে দেখে এগিয়ে এল জিজ্ঞেস করলো,বাড়ি যাবে? মলিনা বাইকের পিছনে চড়ে বসল। ছুটে চলল বাইক কেলো জিজ্ঞেস করে, রমেশদার খবর কি?
–সামনের সপ্তায় জামীন হয়ে যাবে।
অসমাপ্ত …….