অযাচিত ভাবনা গুলি যখন মনে আসে তখন অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে মন চায়। অবসরে চটি পড়ি ভাল লাগে। নিজের জীবনের সাথে হয়তো মিলে যায় এমন কাহিনি পড়তে খুজি কিন্তু সবগুলি মনে হয় কাল্পনিক অবাস্তব। আমিও আজ একটি কিছু লিখবি।
আমার নানা ছিলেন খুব নাম করা একজন নেতা এবং সত্যিকারে ভাল মানুষ। দুই কন্যা সন্তানের পিতা। আমার মা হওয়ার পর ১৫ বছর পর জন্ম নেয় আরো একজন কন্যা সন্তান। আর সেই কন্যাকে নিয়ে আমার কাহিনি।
আমার বাবা ছিলেন সংসারের একমাত্র সন্তান। গ্রামের অভাবী পরিবারের কিন্তু ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করার কারনে মোটামুটি বড়লোকের মেয়ের সংগে প্রেম করে বিয়ে করে ফেলে। নানা রাজি ছিলেননা কিন্তু ভাল সরকারী চাকরি পেয়ে যাওয়ার কারনে এবং মেয়ের আবদার রাখতে মেনে নেয়।
আমার খালা আমার চেয়ে ৬ বছরের বড়। খালা দেখতে পুতুলের মত ছিল তাই নানা নানী খালাকে পুতুল বলেই ডাকতেন। ভাল নাম শায়লা। আমার বাবা চাকরিতে এক মহা বিপদে পড়ে যায় এবং চাকরি চলে যায় এবং মামলায় জড়িয়ে পড়ে। আমি জানি তিনি কোন ভুল করেনি। লজ্জা ক্ষোভে নিজেকে সামলে নিতে কস্ট হয় এবং ব্রেইন স্ট্রোক করে মারা যায়।
সংসারে নেমে আসে বিপর্যয়। নানা আমাদের নিয়ে আসেন তাদের বাড়িতে। আমি তখন ৮ম শ্রেনিতে পড়ি। তিন তলার বাড়িতে আমরা মাত্র ৫জন বাসিন্দা। শায়লা খালা আমার খুব প্রিয় মানুষ। গলায় গলায় ভাব। খালা তখন ইডেন থেকে ইন্টার পাশ করে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেয়েছে। নানার অনেক দিনের সপ্নের একটি ছিল মেয়েকে লন্ডনে বিয়ে দিবে।
এক বন্ধুর সহায়তায় পেয়ে যায় ছেলে। লন্ডনে রেস্টুরেন্টের ব্যাবসা আছে। ছেলের সংজ্ঞে খালার কোনক্রমেই যায়না। খালা ছিল একটা জীবন্ত পরি। যেমন সুন্দরী তেমন সাহসিনী। লেখাপড়ায় ছিল জুড়িহীন। মুক্তার মত দাতে যখন হাসি দিত যেকোন মানুষ পাগল হয়ে যেত। ৫ ফুট ৬ ইঞ্চির দেহ ছিল পাতলা লিকলিকে এক অস্পরি।
রৌদ্রের ঝিলিকে মনে হত গাল দিয়ে রক্তের প্রবাহ দেখা যায়। বিধাতার এই অপুর্ব স্রিস্টি দেখে কাম জাগেনি এমন পুরুষ হয়তোবা মিলা দায়। নানার এক কথা আমার মেয়ে লন্ডন যাবেই, যেতেই হবে। খালার চরম বিরুধীতার মধ্যেই নানার সপ্নগুলোকে সম্মান দিতে খালার বিয়ে হয়ে যায় সুমনের সংগে।
খালা নানার প্রতি সম্মান দেখালেও অন্তরে ঘ্রিনা জন্মে যায় প্রচুর। আর সেই ঘ্রিনা প্রকাশ করতো আমার সংগে। বিয়ের পরে আমিই ছিলাম খালার একমাত্র বন্ধু, যার সংগে মন খুলে কথা বলতো। খালার যখন বিয়ে হয় আমি তখন মেট্রিক্স পরিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার কাজ তখন পড়া আর খালার সংগে সময় দেওয়া।
শায়লা খালা দিন দিন যেন কেমন হয়ে যাচ্ছে। সারাক্ষণ বাড়িতে নিরব থাকে, কথা কম বলে, আগে যেমন ফিটফাট হয়ে থাকতে পছন্দ করতো। তা এখন আর করে না। আমি একদিন খালাকে বললাম খালা যা হবার হয়েছে, সব মেনে নাও। সব ঠিক হয়ে যাবে। নারে রাজিব, এই লোকের কিছুই আমার পছন্দ না। দেখতে যেমন বিস্রি তার কথা বলার ডংও বিস্রি। প্রেম ভালবাসা বলতেও কিছু বুঝে না। একটি সুন্দরী মেয়েকে কি ভাবে ভালবাসা দিতে হয় সেই ধারনাও নাই। আমি কি চাই, আমার কিসে ভাল লাগে, আমার ইন্দ্রিয় সুখের খোজ সে রাখেনা।
আমি তখন কিছু বুজতামনা। তাই প্রস্ন করলাম ইন্দ্রিয় সুখ আবার কি? বিয়ে হয়েছে, সংসার করবা, টাকা পয়সা সব আছে। আনন্দ-ফুর্তি করবা। দেখতে হয়তো কাল, মোটা কিন্তু ভালইতো দেখি।
রাজীব তুই বুজবিনা। এখনও অনেক ছোট। নাড়ীরা হল ফুলের মত। দেখতে যেমন সুন্দর তেমন গন্ধ ছড়িয়ে মোহিত করে আবার তাদের আদর করে যত্ন করে সাঝিয়ে রাখতে হয়। ফুল যখন মানুষের হাতে যত্ন পায় আদর পায় তখনই সুন্দর লাগে।
না খালা আমি তোমার কঠিন শব্দ বুঝিনা।
তুই বুজবিনা। বয়স হউক সব বুজবি। তবে আমি জানি এই লোক আমার জন্য নয়। আমাদের ক্যমেস্ট্রি এক না। আর টাকা পয়সা সব না। দুইটি মন এক না হলে নড়নাড়ির অন্তরআত্তার মিলন হয়না। আত্মার মিলন না হলে সুখের অনুভুতিগুলি নাড়া দেয়না।
কি সব বল খালা বুজি না। আত্মার মিলন, অনুভুতি। তুমি ঠিক সব ঠিক।
ধীরে ধীরে খালা আমার সংগে মন খুলে কথা বলছে। আমারো ভালোই লাগছে।
পরিক্ষার কারনে আমার খুব একটা সময় ছিল না খালার জন্য। আজ পরিক্ষার শেষ দিন তাই বিকালে খালাকে বললাম চল বাহিরে ঘুরে আসি। চলে গেলাম বসুন্দরা। খালা বলে চল সিনেমা দেখি। যেই কথা সেই কাজ একটা ইংরেজি সিনেমা দেখছি। খালা মাঝে দেখে বাহির হলাম। রগরগে সেক্সি সিনেমা।
রাজিব কেমন দেখলি সিনেমা। আমি ইচ্ছা করেই তোকে এই সিনেমা দেখালাম কারন ক্যামিস্ট্রি আর অনুভুতি বোজাতে। নায়িকাটি তার প্রেমিকের সংগে অন্তরংগ সময় কিস সহ যা কিছু করলো সব ছিল তাদের আত্মার মিলন। খারাপ লোকটা যখন করলো তখন সেটা ছিলনা কারন সে মেয়েটাকে ভোগ করেছে। লোকটা তার নিজের চাহিদা পুরন করতেই আপ্রান চেস্টা করে আনন্দিত হতে চেয়েছে।
আমিও প্রতিদিন এই মেয়েটির মত তোর খালুর কাছে এমন হচ্ছি। তুই কিন্তু এমন হবিনা। যাকে ভাল লাগবে তার মন জয় করার চেস্টা করবি। সে কি চায় সে দিখে খেয়াল রাখবি।
কেন খালা খালু তোমার খেয়াল রাখেনা?
তোর খালু দেখতে যেমন অসুন্দর কাজ কামও তাই। আমার রুচিই হয় এই লোকটাকে। সে আসলেই আমি ভয় পাই। ঝাপিয়ে পরে আমার উপড়। ৫ মিনিটেই তার হয়ে যায় আমি নিতর দেহে পরে থাকি।
কি হয়ে যায় খাল বুজি নাই।
কেন তুই কি বাচ্ছা। নায়িকা কি করলো দেখলিনা।
আমি সেই ভাবে চিন্তা করিনাই। কেন তুমিও নায়িকার মত করনা কেন।
আমি নায়িকার মত কি করে করবো নায়ক লাগবেনা? সে তো আমার নায়ক না।সারাজীবন যে পিক্সার আমার মনে একে রেখেছি তা সে নয়। আমার সেই নায়ক আমার ভিতরে লুকিয়ে আছে। আমি চাই আদর সোহাগ ভালবাসা। সে চায় স্রেফ সেক্স।
খালা তোমার ভাষা কিন্তু ঠিক নেই। আমি তোমার ভাগিনা।
হ্যা তুই আমার ভাগিনা ঠিক কিন্তু আমি মনে করি আমার বেস্ট বন্ধুও বটে। আমার মনের কথা বলার কোন মানুষ আমার নেই। তুই যদি মনে কিছু করিস তাহলে আমি কথা বলবো না। এই ভাবেই আমি তিলে তিলে মরে যাব। বান্ধবীদের যদি বলি পরে ওরাই আমকে কুটা দিবে অপমান করবে। জানি তুই কাউকে কিছু বলবিনা। দুনিয়ায় আমি তোকেই বেশি বিশ্বাস করি।
আমি খালার দিকে চেয়ে খালার দুই চোখ বেয়ে পানি পরছে। মায়া হল। সরি খালা আমার ভুল হয়েছে। মাপ করে দাও। আজ থেকে তোমার আমার মধ্যে কোন দেয়াল নেই। যা ইচ্ছা তাই শেয়ার করবে। তোমার সব কিছু আমি শুনবো। খালার হাত দুইটি ধরে ম্রিদু চাপ দিয়ে বললাম আজ থেকে আমরা সত্যিই বন্ধু।
খালা আমার গালে গাল লাগিয়ে হেসে দিয়ে বলল ঠিক আছে বন্ধু আজ থেকে আমি সব কিছু বলবো কিন্তু শুধু আমি না তুইও আমাকে সব বলতে হবে।
ঠিক আছে বলে আমিও হাতে আর একটু চাপ সম্মতি জানালাম।
তার কিছুদিন পর খালার ভিসা হয়ে গেল। চলে গেল লন্ডন। আমি একা হয়ে গেলাম। স্কাইফে খালার সংগে কথা হয় প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা। সুমন সাহেব একদিন গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা যায়। খালার মহা বিপদ। সুমন সাহেবের কিছু আত্তিয় খালার চরিত্র নিয়ে কথা বলতে আরম্ভ করলো। টাকা পয়সার লোভে সবাই খালার প্রতি বিরুপ আচরন শুরু করল।
ইন্সুরেন্স থেকে খালা অনেক টাকা পেল। রেস্টুরেন্ট বেদখল হয়ার পথে তাই অন্য এক লোকের সাহায্য নিয়ে কম দামে বিক্রি করে দেয়। ব্রিটিশ নাগরিকতা পেয়ে যাওয়ার কিছুদিন পরেই সেই ঘটনা। বিয়ের পরথেকেই নানার সংগে খুব একটা ভাল সম্পর্ক ছিলনা খালার। একমাত্র আমার মায়ের সংগেই কথা বলতো।
এরি মধ্যে নানা নানি ৬ মাসের ব্যাবধানে মারা গেলেন। খালা দেশে আসলেন। আমার আম্মারো ক্যন্সার ধরা পরলো। খালা প্রচুর টাকা খরচ করে মায়ের চিকিৎসা করালেন ইন্ডিয়ার নামি দামি হাসপাতালে কাজ হল না। চলে গেলেন মা। রয়ে গেলাম আমি আর খালা। আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ২ন্ড ইয়ারে। খালাকে একদিন বললাম খালা তুমি দেশে একটা বিয়ে কর এবং থেকে যাও।
খালা রাজি না। তখন আমায় বলে চল তুইও আমার সংগে। লন্ডন চলে যাই। আমাদের আত্তিয় সজন কেও নাই তেমন। সেখানে তুই আমি ভাল থাকবো। তোকে একটা ভাল মেয়ে বিয়ে দিয়ে দিব। শান্তি আছে।
স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে পারবি।
আমি দেখলাম খালা দেশে থাকতেই চায়না রাজি হলাম। ভিসার খোজ নিতে গিয়ে দেখি আমেরিকার একটি ইউনিভার্সিটিতে ভাল সোজগ আছে। খালার সংগে পরামর্শ করে ঠিক করলাম। খালাও লন্ডনের পরিচিত সবার কাছথেকে দুরে অপরিচিত কোথাও নতুন জিবন শুরু করতে চায়। খালার ব্যাংক ব্যালেন্স দেখিয়ে ভিসা নিয়ে নিলাম।