পরের দিন সকাল ১১:০০। ঢাকা শহরে প্রথম দিন!
মিশু ভাবির ঢাকে ঘুম ভাঙলো। তিনি তৈরি হয়ে গেছেন মিরপুর চলে যেতে। আমাকে তাড়াহুড়া করে ফ্রেশ হয়ে আসতে বললেন এবং রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে চলে গেলেন। আমি ফ্রেশ হয়ে কাপড় গুছোতে লাগলাম। তখন অপরিচিতার আগমন!
অপরিচিতাঃ মর্নিং বাবু মশাই! ঘুম হয়েছ?
আমিঃ মোটামুটি। আপনার?
অপরিচিতাঃ ঘুমতো দিলাম কিন্তু পিছন দিকের গভীরে একটু ব্যাথা করছে। তোমার ভাবিরাতো দেখছি ঘুম থেকে উঠার আগেই তৈরি হয়ে বসে আছে। আর একটা দিন থাকলে হতো না?
আমি কাছে গিয়ে বললামঃ জড়িয়ে ধরবো?
অপরিচিতাঃ না থাক! ভাবির দেবর আমায় জড়িয়ে ধরে আছে দেখলে ভাবি দুঃখ পাবে।?
আমিঃ তাও ঠিক! তা তুমি গিয়ে ভাবিকে বলো! আমাকে বললে কি লাভ হবে?
অপরিচিতাঃ পারলেতো তোমায় তোমার আঙ্কেল আসা পর্যন্ত রেখে দিতাম। তোমাকে অনেক মিস করবো!
আমিঃ আমিও!
অপরিচিতাঃ কেন ভাবিরাতো আছে তোমার কাছে!
আমিঃ অস্বীকার করবো না, কিন্তু আপনি স্পেশাল আমার জীবনে!
অপরিচিতাঃ দেখ! স্পেশালও বলে আবার আপনিও ঢাকে! শুন আজকের পর থেকে তুমি আমাকে তুমি করে ঢাকবে!
আমিঃ আজকের পর থেকে মানে! আমরা আর দেখা করতে পারবোনা কখনো!
অপরিচিতাঃ তা তুমি চিন্তা করোনা। এখন আসো আমাকে শেষ হাগটাতো দাও।
আমি অপরিচিতাকে বিছানার উপর থেকেই জড়িয়ে ধরলাম। এবং গালে একটা কিস দিলাম। কিন্তু অপরিচিতা টুকুস করে মুখে একটা কিস দিলো। তারপর, তিনি আমার ট্যাবলেটে নিজের নাম্বার সেভ করে ব্রেকফাস্ট করতে যেতে বললেন।
আমরা রেড়ি হয়ে, ব্রেকফাস্ট করে বিদায় নিলাম। অপরিচিতার গাড়ি আমাদের মিরপুর দিয়ে গেলো।
চতুর্থ ফ্লোরে দুই ইউনিট।
401 Mr & Mrs Bhuiyans মিশু ভাবির বাসা।
402 Choudhury Cottage স্মৃতি আপুর বাসা।
আমি আর মিশু ভাবি 401 এ ঢুকলাম আর স্মৃতি আপু নিজের বাসায়। আমি আর ভাবি ভাবির আব্বু ( জসীম উদ্দীন ) আম্মুকে ( মিলিকে ) সালাম করলাম। কথা-বার্তা হলো।
আমার থাকার জায়গা হলো গেস্ট রুমে। ঘুম পুরো হয়নি তাই গোসল সেরেই খেয়ে দেয়ে দিলাম ঘুম। উঠতে উঠতে রাত আটটা। হল রুমে গিয়ে দেখি ভাবির আম্মু টিভি দেখছেন। আমায় দেখে বসতে বললো আর নাস্তা খেতে দিলেন। ক্ষুদার্ত ছিলামও বটে তাই খেতে লাগলাম।
আমিঃ আন্টি ভাবি কোথায়?
মিলি কাকিমাঃ ওতো স্মৃতির কাছে পাশের বাসায়।
আমি আর কিছু বললাম না। টিভি দেখতে দেখতে খেতে লাগলাম।
মিলি আন্টি কিচেনে চলে গেলেন। রাত দশটার দিকে মিশু ভাবি আর স্মৃতি আপু আসলো। আমায় দেখে স্মৃতি আপু হাসতে হাসতে গুড মর্নিং বললো।
আমিঃ এখনতো রাত!
স্মৃতিঃ হবে হয়তো বাকিদের। আপনিতো পুরো দিন ঘুমাচ্ছেন দেখলাম।
মিশু ভাবি স্মৃতিকেঃ এই তুই শয়তানি বন্ধ কর।
কিন্তু নাহ। স্মৃতি আপু একদম ফানি মুড়ে ছিলো। সাথে বসে কথা বলতে লাগলো। আর মজা করতে লাগলো। ভালোই লাগছিলো।
ভাবির আব্বু এলে সবাই একসাথে খেয়ে নিলাম। আঙ্কেল আন্টি নিজের ঘরে চলে গেলেন। যেহেতু ঘুম পুরে গিয়েছে তাই আমার আর কোন কাজ ছিলোনা। আমি, ভাবি আর স্মৃতি আপুর সঙ্গে বসে টিভি দেখতে লাগলাম।
কিছুক্ষণের মধ্যে স্মৃতি আপুও বিদায় নিলো। ভাবি তার কাছে থাকতে বললো কিন্তু না বলে চলে গেল। স্মৃতি আপু চলে যাওয়ার সাথে সাথেই ভাবি আমাকে নিজের ঘরে নিয়ে গেলেন।
তার আগে যাইনি তার রুমে। এই প্রথমবার। ভালোই সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো। আমি গিয়ে দাঁড়ালাম। ভাবি দরজা লক করে দিল।
আমি আর আপনি সবাই জানেন কি হবে! তাইনা?
ঘন্টা।
আমায় বিছানায় ধাক্কা দিয়ে বসিয়ে দিল।
আমি ভাবলাম মুডে আছে আমার ময়না পাখি!
কিন্তু কই। এমন কিছু হলো যা আমি কল্পনাও করিনি!
ভাবিঃ তোমার সাথে অপরিচিতার কিছু হয়েছে?
আমি থতমত খেতে গেলাম। আইলা এটা কি, কি করে!
ভাবিঃ কিরে চুপ কেন?
আমিঃ কি বলছ!
ভাবিঃ আমি বলছি তুমি আর অপরিচিতা কিছু করেছিস কালকে?
আমিঃ মানে! কি করবাে আমি ওনার সাথে?
ভাবিঃ দেখ বাবু, আমি সিরিয়াস!
আমিঃ তুমি রাগ করছো আমার সাথে? তুমি প্রমিস করেছিলে আমার সাথে জীবনেও রাগ করবে না। আর কোন কথা ছাড়াই রাগ করে বসে আছো। আমিতো কারো দিকে তাকাইনা এখন। স্মৃতি আপুর দিকেও না।
ভাবিঃ কি?
আমিঃ না কিছু না।
ভাবিঃ নাহ! আমি রাগ করিনি। বলো আমি জানতে চাই কি হয়েছে কালকে তোমার আর অপরিচিতার মধ্যে?
আমিঃ কিছুই হয়নি! কি করবেন তিনি আমার সাথে?
ভাবিঃ অনেক কিছু করতে পারে! দেখ বাবু, আমি জানি তুমি কিছু একটাতো লুকচ্ছো আমার কাছে।
আমিঃ আমি কিছু লুকাইনা তোমার কাছে!
ভাবিঃ তুমি লুকচ্ছো কিছু!
আমিঃ তুমি আবারো অযথা রাগ করছো আমার সাথে?
ভাবিঃ আমি রাগ করছিনা সোনা। তুমি আমাকে মিথ্যা বলছো। আমাকে সত্যি করে বলো অপরিচিতা আর তুমি কিছু করছো?
আমিঃ নাহ!
ভাবিঃ ও আচ্ছা! ঠিক আছে! তাহলে এটা কি?
আমিঃ কি?
ভাবি পকেট থেকে একটা প্যান্টি বের করে ধরলো আমার সামনে।
আমি মনে মনেঃ সর্বনাশ! এটাতো অপরিচিতার দেওয়া প্যান্টি ( উপহার )! আমি কি বোকা প্যান্ট থেকে প্যান্টিটা বের করতেই ভুল গেলাম।
ভাবিঃ কালকে ট্রেনে আমার যে কাপড়গুলো ছিড়েঁছ তুমি, তা তোমার ব্যাগ থেকে বের করতে গিয়ে তোমার ব্যাগে প্যান্টের পকেটে এটা পেয়েছি। এটাতো আমার নয়?
আমিঃ ওঃ ওঃ এটা আমি কিনেছি! হ্যা!
ভাবিঃ বাহ! ঠিক করে মিথ্যাটাও বলতে পারোনা এখনো তুমি! নাতো তোমাকে কেই এগুলো বিক্রি করবে নাতো এগুলো তুমি কিনতে পারবে। পিচ্চি একটা ছেলে এখনো পনের বছরও হলোনা। প্যান্টি কিনবে একা একা!
আমিঃ না! আমি কিনেছি এটা।
ভাবিঃ ও আচ্ছা! তা কত দিয়ে কিনলে?
আমিঃ ওঃ ওঃ এটাঃ এটা তিনশ টাকা ছিল।
ভাবিঃ আচ্ছা। তিনশ টাকা না! কোন দোকান থেকে কিনেছো?
আমিঃ আঃ ও আমিঃ আমিঃ বড়বাজার থেকে নিছিলাম।
ভাবিঃ ওকে! বেলেনছিয়াগার ত্রিশ-পয়ঁত্রিশ হাজার টাকা দামী প্যান্টি তুমি তিনশ টাকা দিয়ে বড়বাজার থেকে কিনেছ! ভালো! ভালো!
আমিঃ ভাবি কি আবোল তাবোল বকছো? একটা প্যান্টি কিভাবে এত টাকা হয়? তুমি আমাকে হাসালে!
ভাবিঃ চুপ! আমি বুঝিনা না? এত দামী জিনিস কারই বা হবে। এক মিনিট, ওহ মায় গড়, তার মানে তুমি এটা কালকে রাতে অপরিচিতার বাড়ি থেকে চুরি করেছো?
আমিঃ কিসব আবোল তাবোল বকছো আবার ভাবি?
ভাবিঃ আয় হায় বিরাজ, এটা তুমি কি করলে? তুমি জানো এটা কত দাম? দাম ছাড়, তুমি চুরি করেছো? তুমি চুরি করতে….
আমিঃ আরে ভাবি কিসব উলটপালট কথাবার্তা বলছো! আমি কেন চুরি করবো!
ভাবিঃ না! না! এটা কোন ভাবেই সম্ভব না। বিরাজ এটা জঘন্য অপরাধ। তুমি এমনটা করতে পারলে! ছিঃ ছিঃ ছিঃ বিরাজ। শেষমেশ চুরি! তোমার এই অপদতি!