মফস্বল শহরের এক কোনায় মমতাজের শ্বশুর বাড়ি, এখানেই মমতাজ থাকে। দুই বাচ্চার মা । বড়টা মেয়ে বারো বছর এর আর ছোট ছেলেটা বয়েস আড়াই বছর । স্বামী আজকে তিন বছর ধরে ইটালী। ছোট ছেলে জন্মাবার বছর খানেক আগেই যে সে অবৈধ পথে ইটালীতে গিয়েছিল। আর ফিরতে পারছে না। ফিরলে আর যেতে পারবে না। অবস্থাপন্ন স্বশশুর বাড়ী মমতাজের। ওর স্বামীরা দুই ভাই তিন বোন সব বোনেদেরর বিয়ে দিয়ে অনেক খরচ হয়ে গেলে পরে শহরে সাইকেল পার্টস র ব্যবসা ছেড়ে কিছু জায়গা জমি বিক্রি করে ইতালীতে গিয়েছে। এবং ছোট দেবরটাকেও নিয়ে গিয়েছে।
সেখানে ওর স্বামী ও ভাই মিলে একটা শাক সব্জির দোকান এ কাজ করে। বৈধ হলে নিজেরাই ব্যবসা দিবে, তবে টাকা পাঠায় দুজনেই। তাতে মমতাজ তার বিধবা স্বাশুড়ী নিয়ে দোতলা এই বাড়িটিতে খারাপ নেই। একটাই শুধু মমতাজের জ্বালা। সেটা হলো বিয়ের তেরো বছরের জীবনে স্বামী তাকে বিছানায় শতবার বার চুদেছে কিনা সন্দেহ ।
অথচ গ্রামের মেয়ে অল্প বয়েসে বিয়ে এখন বয়েস মাত্র ত্রিশ। ভরা যৌবন। রাতে মমতাজ এর মাথায় আগুন জ্বলে যায়। বিভিন্ন প্রয়োজনে শহরের দোকান গুলোতে গেলে বোরকার উপর দিয়ে অনেক অল্প বয়েসী দোকানদার তাকিয়ে থাকে দেহের বাকে বাকে, যদিও মমতাজ ঢোলা বোরকা ও মুখ ঢেকে রাখে। তার পরেও মমতাজের ফর্সা মুখে কালো চোখ।ফর্সা হাত দেখে দোকানী কখনো ভাবী, কখনো আপা আবার কখনো ভ্যাবাচেকা খেয়ে আন্টি ডাকে। এই সব ছেলে ছোকড়াদের ইশারা দিলে ঝাপিয়ে পরবে জানে, কিন্তু যাবে কোথায়? মফস্বল শহর এই মাথা অই মাথা সব চেনা জানা, চোখে পরলে কেলংকারীর আর শেষ থাকবে না।
মেয়েটিও তর তর করে বড় হচ্ছে এই বছর বারো বছর পার করে দিয়েছে এবার সিক্সে উওঠল। ওর বাবা জহিরের ইছা মেয়েকে মাদ্রাসায় পড়ায়। তাই মহিলা মাদ্রাসাতে দেওয়া হয়েছে। অনাবাসিক। সকালে যায় দুপুরের পরে বাড়ীতে ফেরে। অথচ মমতাজের ইচ্ছা ছিল মেয়ে স্কুল কলেজে যাবে। প্রচলিত শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। কিন্তু ওর বাবার ইচ্ছা ও একই সাথে শাশুরীরও ইচ্ছা তাই মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছে। তবে ছেলেটাকে স্কুলে দিবে সেই ইচ্ছা মমতাজের। মমতাজের মেয়েটি আরবী ভাল পারে কিন্তু ইংরেজি ও অংকে দুর্বল। মেয়েটির জন্যে একজন শিক্ষক দরকার। এরকম আলাপ প্রায় দিনেই জহিরের সাথে হয়, কিন্তু কোথাও পাওয়া যায় না।
পরে একদিন জহির ওকে ফোন করে বলে
-ইয়াসমিনের মা, আমাদের রহিমা আপার ছেলেটা নাকি কলেজে পড়ে, ও হোস্টেলে থাকে। একটু খোজ নিয়া দেখো তো। ওরে বাসায় রাখলে তো শিক্ষকের অভাব দূর হয়।
বেশ কয়্যেকবার বলার পরে মমতাজ কলেজের হোস্টেলে গিয়ে সাইফুল ইসলাম সবুজ এর খোজ পায়, কিন্তু রুমে ছিল না। কেয়ার টেকার এর কাছে নাম্বার টা দিয়ে আসে। তার দুই দিন পরে মমতাজের মোবাইলে অপরিচিত নাম্বার থেকে একটা কল আসে।
হ্যালো এইটা কি মমতাজ খালার নাম্বার
হ্যা
আসসসালামু আলাইকুম খালা, আমি রহিমার ছেলে সবুজ, আপনি নাকি আসছিলেন। কেয়ার টেকার আমাকে নাম্বার টা দিল।
ও হ্যা, তুমি কেমন আছো বাবা?
জ্বী খালা ভালো, তা কেন আসছিলেন।
আচ্ছা তুমি আমাদের বাসায় আসো– চিনবা তো বাসাটা ??
না খালা।
শোন একটা অটো নিয়া সোজা শিমুলতলী চলে আসবা। এখানে এসে তোমার জহির আংকেল এর নাম বললেই যে কেউ বাসা দেখিয়ে দিবে। আজকে আসতে পারবা।
না খালা আজকে ক্লাস আছে। কালকে একটা মাত্র ক্লাস সকালে। তাইলে দুপুরের দিকে চলে আসব।
আরে বোকা দুপুরে কেন, তুমি ক্লাস শেষ করেই চইলা আইস।
মমতাজ সবুজকে কখনো দেখেনি আসলে তার মা রহিমা আপা জহিরের দূর সম্পর্কের আপা হন, যদিও রক্তের সম্পর্ক। কিন্তু সেই রকম আসা যাওয়া হয়নি। ওদের বাড়ী থেকেও আরো দূর গ্রামে বিয়ে হয়েছে রহিমার।
সম্পর্কে খালা -ভাগিনা হলেও মমতাজের কল্পনাতে ছিল সবুজ ছেলেটা হবে লম্বা সুদর্শন। কিন্তু মমতাজ পুর পুরি হতাশ হলো। সবুজ ছেলেটি দেখতে ছোটখাট যেন । ও যে আঠারো বছরের উপরে কলেজে পরে বুঝায়ই যায় না। খুবই ছোট। ফর্সা, মুখে হালকা দাড়ি গোফ, এপর্যন্ত কখনোই সেভ করেনি। হয়ত শেভ করার দরকারই পরেনি এতই পাতলা লোমের মত। তবে চামড়ায় কোথায় জানি একটা কমনীয়তা আছে। আর শেভ করলে খারাপ লাগবে না। যাই হোক। মমতাজের চাইতে মমতাজের শাশুড়ির খুশিই সব চেয়ে বেশি- সবুজের কাছ থেকে রহিমার খোজ নীচ্ছে। সবুজের মোবাইল দিয়ে কথাও বলিয়ে দিয়েছে।
আলাপ করে ওর শাশুরী রহিমাকে জানিয়ে দিয়েছে সবুজের হোস্টেল এ থাকার দরকার নাই, ওদের এত বড় বাড়ী পরে আছে কেন। থাকুক ওদের ওখানে লজিং। রহিমা তো ভীষন খুশি, সবুজকে তখনই বলে দিলো তর নানুর (জহিরের মা) বাড়ীতে উঠে যা,
আলাপে আলাপে দুপুরের খাবার খেয়ে বিকালে মেয়ে আসলে পরে ওর অংক ও ইংরেজী টা নিয়ে একটু দেখালো সবুজ। এত সুন্দর করে অংক গুলী মেয়েটিকে বুঝিয়ে দিয়েছে। মেয়ে তো মহা খুশী হয়ে মাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে বললে মা- ভাইয়া তো দারূন অংক পড়ায়। তুমি বলো ভাইয়া আমাকে অংক দেখাক।
তর জন্যই তো অকে এ বাড়ীতে থাকতে বলব।
মেয়ের আগ্রহের কারনেই আর সবুজের মেধার কারনেই কেন জানি একটা স্নেহপ্রবন ভালোলাগা কাজ করল মমতাজের ভেতরে। কথা হয়েছে পরের সপ্তাহেই সবুজ ওদের বাসায় থাকবে। সবুজকে কিচ্ছু আনতে হবে না, এমনকি লুংগী গামছা এ বাড়ীতেই আছে। আর যা যা লাগবে মমতাজই কিনে রাখবে, সবুজ শুধু তার বই খাতা ও মোবাইলটা নিয়ে আসবে।
কাজেই সবুজ এসে থাকা শুরু করল। ইয়াসমিন এর পড়াও খুব ভালো হচ্ছে। এবারের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায়, ইয়াসমীন ইংরেজী ও অংকতে সবচেয়ে বেশী মার্ক্স পাওয়ায় এবার প্রথম হয়েছে। মমতাজ সবুজকে নিজেরই আরেকটা ছেলের মত দেখতে লাগল। ওর খাওয়া দাওয়া সব, এমনকি মমতাজ মাঝে মাঝে ব্লাউজ ছাড়া বাড়ীতে শুধু শাড়ী পরে সবুজের সামনে আসা যাওয়া করেছে কখনো ছেলেটি তাকিয়েও দেখেনি, মমতাজের আড়াই বছরের ছেলে ওর বুকের দুধ এখনো খায়, তাই মমতাজের বুক অনেক বড়। দুধে ভরা, হাটলে নিজে থেকেই ব্লাউজের ভেতর নেচে ওঠে আর সেই স্তন শুধু শারী দিয়ে ঢেকে রাখলে ঝড় বয়ে যায়। কখনও সবুজকে সেদিকে তাকাতে দেখেনি।
এখানে থেকে কলেজ। মাত্র চার কিলো দূরে , জহিরের কথাতেই মমতাজ সবুজকে একটা এক নম্বর ফিনিক্স সাইকেল কিনে দিয়েছে, সাইকেলটা পেয়ে তো সবুজ মহা খুশি। একটু অবসর হলেই দূরে গিয়ে কোন গাছের ছায়ায় বা চায়ের দোকানে সময় কাটিয়ে আসে। সবুজ পিচ্ছি দেখে কোন মেয়ে ওর দিকে তা্কিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে না। যদিও বন্ধু হিসাবে আছে। কারন সবুজ মেধাবী । নিজে খাটো বলে সবুজ দূরে দুরেই থাকে।
এরকম একদিন সাইকেল নিয়ে ঘুরতে গিয়ে ধুম বৃষ্টিতে সবুজ ভিজে জ্বরে আক্রান্ত হলো।
এমনকি সে রাতে ইয়াসমিনকে পড়াতেও পারল না।
জ্বরের কথা শুনে মমতাজ ও ওর শাশুড়ি ও নীচে নেমে এলো।
মাথায় হাত দিয়ে দুজনেরই চোখ কপালে। তাপে সবুজের গা পুড়ে যাচ্ছে।
মাথায় পানি দেওয়ার দ্রুত ব্যবস্থা করল মমতাজ। ওর শাশুড়ী সবুজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে ডাকল।
-কিরে সবুজ তর জ্বর কেমন লাগতাছে ?? জবাবে সবুজ শুধু তাকিয়ে উহ আহ বলে ককিয়ে উঠল।
মমতাজ ওর চাচাত ভাই ডাক্তার এর কাছে ফোন দিয়ে জেনে নিল যে শুধু প্যারাসিটামল প্লেইন খাওয়াতে তাও জ্বর বেশী উঠলে পরে। ওর ভাই এও বলে দিল যে, প্যারাসিটামল অনেক সময় খেতে যদি না চায়, জ্বরের ঘোরে বা জ্বর বেশি থাকলে – পায়ু পথ দিয়ে সাপোজিটর দিতে। মমতাজ সবুজের মাথায় পানি দিয়ে দ্রুত বোরকা পরে শহরে গিয়ে প্যারাসীটামল ও সাপোজিটর এনে ফ্রিজে রেখে দিল।
পরে একটু হালকা জ্বর কমে এলে ওর শাশুরী কিছুই খেতে চায় না দেখে জাউভাত রান্না করে শিং মাছের ঝোল দিয়ে বাটিতে করে নিয়ে এলো সবুজের রুমে।
মমতাজের মেয়েটা শোয় ওর দাদুর সাথে, দোতলার এক রুমে আর আরেকরুমে ছেলেটাকে নিয়ে থাকে মমতাজ । নীচের এই তিনটি রুম ফাকা থাকে। মেহমান কেউ এলে ব্যবহার হয়। তার মধ্যে একটা সবুজকে দেওয়া হয়েছে। যেটার সাথে এটাচড বাথরুম আছে।
সবুজকে বলতে গেলে জরিয়ে ধরে ওঠালো মমতাজ। মমতাজের বুকের উপর উঠে হেলান দিয়ে আছে — মমতাজের শাশুরী মানে সবুজের নানী সবুজকে নরম জাও দিয়ে শিং মাছের ঝোল চামচ দিয়ে মাখিয়ে খাওয়াতে লাগল- কয়েক চামচ খাওয়ার পরে আর সবুজের ভালো লাগছে না। সবুজ আর খেতে চায় না। মাথা ইশারা দিয়ে জানিয়ে দিল। টেবিলে রাখা ওর টুথ ব্রাশ ও পেস্ট টা দেখিয়ে নানীকে ইশারা করল।
সবুজ উঠে বিছানা ছাড়তে চাইলে মমতাজ বলল
-ঠিকা আছে বাবা তুমি বও। আম্মা নিয়া আসুক। আম্মা সবুজের দাত মাজার ব্রাশ আর টুথপেস্ট টা দেন ।
জ্বরে বরং লবন টুথপেস্ট এর স্বাদটাই সবুজের কাছে ভালো লাগল। একটি গামলায় ও মগ ভরতি পানি নিয়ে এসে বিছানাতেই মুখ কুলি করে ধুয়ে নিল মমতাজ, ওর শাশুড়ির আঁচল দিয়েই মুখটা মুছিয়ে দিল। এক পাশে কাত হয়ে শুয়ে পরতে চাইলে মমতাজ মাথার নিচে বালিশ দিয়ে উঠে দাড়াল।
বউকে শাশুরী বলে উঠল-
-ও বউ ছেলেটার জ্বর তো অনেক বেশি তুমি বরং নীচেই থাকো। হাসান আজকে আমার সাথে থাকুক,ওরে উপর থাইক্কা নিয়া আসি একটু দুধ খাওয়াইয়া দেও। পরে আবার নিয়া যামুনে। সবুজরে মনে হয় রাইতে আবার মাথায় পানি ঢালতে হইতে পারে। আল্লাহ ওর কিছু হইলে ওর মায়রে আমি কি জবাব দিমু।
-আম্মা এত চিন্তা কইরেন না, ভাল হইয়া যাবে, আম্মা তাইলে আমি নিচেই থাকি।
হ হেইডাই বালা হইব হউ, আর ঔষধ পাতি সব কাছেই রাখো।
একটু পরে হাসানকে ওর দাদু কোলে করে নিয়ে এলে মার কোলে ঝাপিয়ে পরেই দুদু খুজতে লাগল।