==========
বেসামাল জ্বীন
==========
সকালের নরম আলোতে ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি, ওয়াহিদ পাশে শুয়ে আছে। একটা পাশ বালিশ জড়িয়ে ভোঁস ভোঁস করে ঘুমাচ্ছে। জ্বীন বাবার সাথে কথা বলে ভোরের প্রার্থনা শেষ করে ঘুমিয়েছিলাম। ও কখন এসেছে কে জানে। আমার স্বামীটা একটু কেমন যেন। কোথায় এতদিন পর বাসায় ঢুকলো, একটু আদর করে আমার ঘুমটা ভাঙ্গাবে, তা-না। ওনার ঘুমটা জরুরি। তাও আবার পাশ বালিশ জড়িয়ে ঘুমাবে। আমার উত্তাল নিতম্বে ওর লিঙ্গটা ঠেকিয়েও তো ঘুমাতে পারতো। আমার আর কপাল! বিছানা থেকে নেমে ফ্রেস হয়ে সকালের নাস্তা তৈরী করতে লেগে গেলাম।
নাস্তা তৈরী করে টেবিলে সাজিয়েছি, এমন সময় সোনিয়া ভাবীর ফোন আসলো,
-“কিরে জয়া, তোর জামাই দেখি খুব সকাল সকাল বাসায় ফিরলো। কিছু হলো?”
-“আরে না! চুটিয়ে ঘুমাচ্ছে। আমাকে দেখতেই পায়নি, পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছে।”
-“আমাদের জামাইগুলা একটু কেমন যেন। পানসে।”
-“হুমম, তা আর বলতে। আচ্ছা শোনো না, তোমাকেই খুঁজছিলাম মনে মনে। তুমি এখন ফ্রি আছো? তোমার ঘরে আসবো? কথা আছে।”
-“আয় না, এখুনি আসবি?”
-“হুমম, আমি আসছি, তুমি দরজা খোলো।”
সোনিয়া ভাবীকে যতবারই দেখি আমি আমার নিজের ভবিষ্যৎ দেখতে পাই। ৩৫ বছরেও কি সুন্দর উনি! দেহের বাঁকে বাঁকে কাম ধরে রেখেছে। আমার মতোই ওনার নিতম্বটাও একটু ভারী, কিন্তু একটু মেদবহুল শরীরে বড় স্তনের সাথে মানানসই। সোনিয়া ভাবী যা অসভ্য, শুধু একটা সায়া’র উপর নগ্ন বুকে তোয়ালে জড়িয়ে দরজা খুলেছে,
-“এইভাবে উদলা হয়ে আসলা, এখন যদি আমি না এসে অন্য কেউ আসতো?”
-“আরে ধুর, কে আসবে আর আমাকে দেখতে। এসে দুটো গুতো দিলে তো শান্তিই পেতাম।” ভাবীর মুখে আবার কথা আটকায় না।
-“সোহেল ভাই কই? অফিসে?” সোফায় বসতে বসতে বললাম।
-“ও-তো চলে গেছে সেই সকালেই। কেন কিছু লাগবে নাকি আবার সোহেলের কাছ থেকে? হি হি হি।” অসভ্যের মতো আমার একটা স্তনবৃন্ত চিপে দিল।
-“আহ ছাড়ো! ওনার সাথে কাজ না, কাজ তোমার সাথে।”
-“কি কাজ?”
সোনিয়া ভাবীকে সব গুছিয়ে বললাম মাজারের ঘটনা। শুধু জ্বীনের সাথে কিভাবে পরিচয় আর মাজারে মধ্যে রাতের প্রার্থনার কথাটা বললাম না। সব শুনে সোনিয়া ভাবী বললেন,
-“সোনা আমার, আমাকে একটু দেখা না তোর কবিরাজকে। আমার জামাইটা রোজ রোজ মদ গিলে আসে। ঘরে একেবারেই মন নেই।”
-“সেজন্যই তো তোমার কাছে এলাম। আগামী কবে উনি ব্যবস্থা করতে পারবেন, সেটা জানিনা। আর প্রার্থনার কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট আছে।”
-“তো সমস্যা কি? তুই আমাকে দিন তারিখ জানা, আমি ব্যবস্থা করবো এদিকটা।”
-“তুমি যেহেতু রাজি, তাহলে তোমাকে একটু খুলে বলি। বিশেষ প্রার্থনার কিছু নিয়ম কানুন আছে।”
-“বলতো শুনি? কারো হিসু খেতে হবে? হি হি হি! শোন, সেদিন আমার ছাগলটা আমাকে কোন এক আফ্রিকান ব্যাঙের পা সিদ্ধ করে খাইয়েছে তারপর সেই পানি ভোদায় মেখে আমাকে উপরে রেখে করেছে। কোন কবিরাজ নাকি এই বুদ্ধি দিয়েছে। দেখতো অবস্থা।”
সোনিয়া ভাবীকে বুঝিয়ে বললাম প্রার্থনার বিষয়টুকু। তোমাকে একজন জ্বীন প্রার্থনা করতে সাহায্য করবেন। জ্বীনদের শরীর তো আর দেখা যায় না, তাই বিভিন্ন বেশে ওনারা আসেন। আমার সাথে যেই জ্বীনটা প্রার্থনা করেছিল, ওনার নাম হামজা। ওনার তিনটা মাথা। আমি দেখিনি, কিন্তু অনুভব করেছি। হাতের আঙ্গুলগুলো কোনো মানুষের আঙ্গুলের মতো নয়। অনেক বড়বড়। তোমার হাতের কব্জির সমান মোটা। আর হাতে ভাল্লুকের মতো বড়বড় লোম। শরীরটা পাখির পালকের মতো। আবার আঙ্গুলের গোড়ায় চটের মতো খসখসে চামড়া। একেকবার হাত তালির আওয়াজ হয় আর বিভিন্ন কায়দা কানুন করে প্রার্থনা শুরু করে হামজা। আমার বলতে কিছুটা খটকা হচ্ছে, আমার পাপ হবে কিনা বুঝতে পারছি না। কিন্তু, হামজা তোমার দেহে স্পর্শ করে প্রার্থনা করবে। তারপর তোমার দেহে মানব ভ্রূণ স্থাপন করবে।
-“বলিস কি? ওখানেও হাত দেবে?”
-“হুমম। আমি আমার কামভাব দূরে সরিয়ে প্রার্থনা করে গেছি। উনি ভ্রূণ স্থাপন করেছেন।”
-“কি বলিস? গায়ের রং কেমন?”
-“কি যা-তা বলছো? ওনাদের গায়ের রং থাকে নাকি? ওনারা তো আলোর তৈরী। আর আমার তো চোখ বন্ধ ছিল। কিছুই দেখিনি।”
-“বলিস কি! আমার তো এখনই শরীরে বান ডেকেছে।”
-“ভাবী, তুমি যদি এমন একটা প্রার্থনার বিষয় নিয়ে আর একটা খারাপ কথাও বলো, আমি কিন্তু উঠে যাবো!”
-“আহা রাগ করিস কেন, তোর সাথে দুষ্টুমি করলাম।”
-“সব ব্যাপার নিয়ে দুষ্টুমি করা ঠিক না। সৃষ্টিকর্তার ব্যাপার, এই পাপের কারণে যদি তোমার কাজ না হয়?”
-“আচ্ছা, ঠিক আছে, বাবা। আমি ক্ষমা চেয়ে নিব প্রার্থনার সময়। তুই আমাকে বিস্তারিত জানা কবে কোথায় যেতে হবে।”
-“শুধু সোহেল ভাইয়ের একটা ছবি লাগবে। আমাকে পাঠিয়ে দিও।”
-“আচ্ছা, ঠিক আছে।”
-“আমি তাহলে এখন উঠি। তোমাকে আমি জানাবো সব।”
বাসায় ফিরে দেখি ওয়াহিদ উঠেছে ঘুম থেকে। গোসল করতে গেছে। আমার বান্ধবী আল্পনাকে ফোন দিলাম। বললাম যে সন্ধ্যায় অফিস শেষে যেন আমার বাসা হয়ে যায়। ওয়াহিদ আমার আওয়াজ পেয়ে বললো, “একটা লুঙ্গি দাওতো।” আমি নাইটির গলাটা একটু টেনে নামিয়ে স্তনের খাঁজ বের করে বাথরুমের দরজায় দাঁড়ালাম। “এই নাও”। কোথায় কি, যেন দেখলোই না কিছু, এমনভাবে লুঙ্গিটা নিয়ে নিল হাত থেকে। কই ভাবলাম একটু আদর করবে স্তনদুটো। কিন্তু না। ও যেন টিনের চশমা পরে থাকে আমার সামনে! ছেলেগুলা বুঝতেই চায় না। আমাদের কি আর পরপুরুষের কাছে যাওয়ার সৌভাগ্য আছে? গতকালের প্রার্থনার পর থেকে নিচতলাটা শুধু কুটকুট করছে।
বিকালে আল্পনা বাসায় আসলে দুই বান্ধবী অনেক্ষন গল্প করলাম। জ্বীনের ব্যাপারটা ওকে বুঝিয়ে বললাম। ও শুনে প্রথমে ইতস্ততঃ করছিল, কিন্তু আমার প্রতি ওর অগাধ বিশ্বাস। আর ও নিঃসন্তান হওয়াতে ওর শাশুড়ী তালাক নিতে বলছেন। তাই শেষ চেষ্টা হিসেবে রাজি হলো। আমাকে জানিয়ে গেল ও সব প্রার্থনাতে অংশ নিতে রাজি। শুধু ওর স্বামীকে কিছু বলা যাবেনা। বাচ্চা পেটে আসলে ও সব বুঝিয়ে বলবে।
এরপর প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে গেছে। প্রথমবার আমার প্রেগনেন্সি টেস্ট পজিটিভ এসেছে! ওয়াহিদ আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে বিস্তর ছুটোছুটি করেছে এই কয়দিন। ও-তো মহাখুশি। খুশিতে এখন আর আমার যোনি স্পর্শই করছে না। পশ্চাৎদেশ নিয়েই এখন শুধু পড়ে থাকে। বোকা মানুষটাকে কিভাবে বুঝাবো, পোয়াতি মেয়েদের শরীর আরো বেশি করে চায়। কে শোনে কার কথা! এত একটা খুশির খবর কিন্তু জ্বীন বাবাকে জানাতেই পারছি না! জ্বীন বাবা আর যোগাযোগ করছেন না। যেই নাম্বার গুলো থেকে ফোন করতেন, সেগুলিতে ফোন দিয়ে দেখলাম সব বন্ধ। একটাতে শুধু একজন লোক ধরে বললো উনি একজন দোকানদার। নাম্বারটা উনি নতুন নিয়েছেন। আগে কার কাছে ছিল সেটা বলতে পারবেন না। আমি গোলক ধাঁধায় ঘুরতে লাগলাম। তাহলে কি আমি সোনিয়া ভাবি আর আল্পনার জীবনে একটু সুখ এনে দিতে পারবো না?
একদিন রাতে টি টি করে হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো ভোরের প্রার্থনার আগে আগে। আমি ধড়মড় করে উঠে বলসাম। পাশে ওয়াহিদ ঘুমিয়ে আছে। দ্রুত বসার ঘরে চলে এলাম। ফোন ধরে ধর্মীয় সম্ভাষণ জানাতেই বললেন,
-“মা জননী। তুমি হয়তো অনেক চিন্তিত আছো। মনে রাখবা মানবের মুক্তির দিশা শুধু সৃষ্টিকর্তাই দিতে পারেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমাকে আরও কিছু মানবের উপকারে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করতে হয়েছে।”
-“বাবা, সৃষ্টিকর্তার দয়ায় আমি সন্তান ধারণ করেছি! আমরা অসম্ভব খুশি! সৃষ্টিকর্তা মহান!”
-“সৃষ্টিকর্তা মহান! এই জন্যই তোমার কাছে এখন আমার ভ্রমণের নির্দেশ এসেছে মা। তুমি কি তৈরী?”
-“জ্বী বাবা, আমার এক বান্ধবী আর এক পড়শীর একই সমস্যা। ওনারা প্রতিদিন প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। সৃষ্টিকর্তার সাহায্য কামনা করছেন।”
-“বলো মা, সৃষ্টিকর্তা মহানুভব।”
-“সৃষ্টিকর্তা মহানুভব।”
-“তোমার মানবের প্রতি মহানুভবতায় সৃষ্টিকর্তা সন্তুষ্ট হয়ে আমাকে ইরশাদ করেছেন। তোমার দুই সহচরী কি তৈরী?”
-“জ্বী বাবা, ওনাদেরকে আমি প্রার্থনার বিষয় খুলে বলেছি। ওনাদেরকে কবে মাজারে যেতে বলবো?”
-“তোমাদেরকে মাজারে যেতে হবে না মা জননী। হামজা তোমাদের কাছে উপস্থিত হবে। তোমাদের বসবাসের স্থানে নীরব প্রার্থনার জায়গা পাওয়া যাবে?”
-“জ্বী, যাবে। কিন্তু এখন তো আমার স্বামী আছে। আগামী শুক্রবার সন্ধ্যার প্রার্থনার পরে সম্ভব। তখন বাসা খালি থাকবে।”
-“সৃষ্টিকর্তা মহান। ওনার ইচ্ছাতেই সব চলে। তোমার উপর খুশি হয়ে তোমাকে একজন খাদিমা হিসেবে আমি দায়িত্ব দিলাম। তুমি প্রার্থনায় সমস্ত ভাবে সহায়তা করবে।”
-“অবশ্যই বাবা।”
-“আমি এখন বিদায় নিচ্ছি। মানব তারিখে বৃহস্পতিবার আমি তোমাকে স্বরণ করবো মা জননী। তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হউক।”
-“আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হউক।”
ওয়াহিদের মাছের ঘেরে শুক্রবার মাছ ধরবে। ও বরিশাল চলে গেছে বুধবার রাতেই। বৃহস্পতিবার সকাল সকাল উঠে বসার ঘরটা তৈরী করতে লাগলাম রাতের প্রার্থনার জন্য। বসার ঘরটাই বাসায় সবচেয়ে বড়। মেঝেতে কার্পেট বিছানো অনেক জায়গা আছে। এর উপর শুধু পাক-পবিত্র চাদর বিছিয়ে দিলে জায়গাটা প্রার্থনার জন্য উপযুক্ত হবে। জ্বীন বাবা গতরাতে পুংখানুপুঙ্খ নির্দেশনা দিয়েছেন কি কি করতে হবে। নিজে একজন খাদিমার কাজ পেয়েছি বলে অনেক ধন্য মনে হচ্ছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা জানালাম। আমার মতো একজন পাপীকে উনি এতো বড় দায়িত্ব দিয়েছেন। মেঝেতে চাদর বিছিয়ে তিনটা নতুন পবিত্র বালিশ তিনদিকে ত্রিভুজাকৃতি করে রেখে মাঝখানে স্বর্ণের ধাতব লিঙ্গটা রেখে উপরে পবিত্র সাদা কাপড়ে ঢেকে রেখেছি। আজকে আমাকেও বসতে হবে প্রার্থনায়। আজকের প্রার্থনায় আমার ভ্রূণের সাথে আমার দেহের স্থায়ী সম্পর্ক স্থাপিত হবে। আমি সত্যি সত্যি গর্ভধারণ করতে পারবো!
আজকে একজন ধর্মভীরু মহিলা আসবেন বাসায়। উনিই সরাসরি জ্বীন হামজাকে সাহায্য করবেন। জ্বীন বাবা বলেছেন, উনি খুবই গরম মেজাজের মহিলা। কথা খুব কম বলেন। বাসার সব গুছিয়ে নিয়ে সবার জন্য অপেক্ষা করছি। আল্পনা বাসায় এলো সন্ধ্যার প্রার্থনার পরপরই। ঘরের আয়োজন দেখে তো ও খুব খুশি। আমাকে বললো,
-“জানিস, তোর বাচ্চা হবে শুনে যে আমার কি খুশি লাগছে! আমি প্রতি প্রার্থনার পর তোদের জন্য অনেক দোয়া করেছি।”
-“সেটাই রে, কিভাবে যে সৃষ্টিকর্তা আমাদের উপর দয়া করেছেন! আমি অনেক কৃতজ্ঞ।”
-“আচ্ছা কি করতে হবে কিছু বললি না তো। একবার গোসল করে এসেছি, আবার করবো?”
-“হুমম, তুই আমাদের বেডরুমের বাথরুমে ঢুকে যা। একটা বড় তোয়ালে রেখেছি। তুই মাথা না ভিজিয়ে গোসল করে শুধু তোয়ালেটা পরে আয়। আমি দেখি সোনিয়া ভাবীর কতদূর।”
সোনিয়া ভাবীর বাসায় নক করতেই উনি দরজা খুলে দিলেন,
-“কিরে তোরা তৈরী?”
-“হুমম। তুমি গোসল করে নিয়েছো? চুল শুকনা লাগছে যে?”
-“হ্যাঁ, করেছি। ড্রায়ার দিয়ে শুকিয়ে নিয়েছি চুল।”
-“আচ্ছা, তাহলে তুমি শুধু কালো বোরকাটা চাপিয়ে চলে আসো বাসায়। আমি দেখি আল্পনার কতদূর।”
-“ঠিক আছে, তুই ওদিকটা দেখ, আমি আসছি।”
কিছুক্ষন পর আল্পনার গোসল শেষ হতেই ও বেরিয়ে এলো তোয়ালে গায়ে জড়িয়ে। ততক্ষনে সোনিয়া ভাবীও চলে এসেছে। দু’জনকে নিয়ে বসলাম বসার ঘরের মেঝেতে। দু’জনের চুলে বিনুনি করতে করতে সব বুঝিয়ে দিলাম। বুঝিয়ে বললাম জ্বীন বাবার সমস্ত নির্দেশনা। প্রথমে আমাদেরকে সন্ধ্যার প্রার্থনা শেষ করতে হবে। যেটা আমরা সবাই করেছি। আমাদের শরীরে কোনো সেলাই করা কাপড় থাকতে পারবে না। তিনটা সাদা বড় সুতি চাদর কিনে এনে ইতোমধ্যে পাক পবিত্র করে রেখেছি। আমাদেরকে চাদর গায়ে দিয়ে ত্রিকোণাকৃতি করে রাখা বালিশে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতে হবে। তিন জন একসাথে একদিকে মাথা রেখে তিন দিকে পা লম্বা করে শুতে হবে। আর মনে মনে প্রার্থনা করে যেতে হবে। আর তোমাদের দুইজনের ৫০ হাজার টাকা, হাদিয়া হিসেবে একটা কাপড়ের পুটলির মধ্যে রেখে আমাদের তিন মাথার মাঝামাঝি রাখতে হবে। আর সবার মাথার কাছে তার নিজ নিজ স্বামীর ছবি রাখতে হবে। আমরা আমাদের বালিশেই রেখে দিলাম ছবিগুলো। আমি ওদের দুইজনকে শুইয়ে দিয়ে দু’জনকে চাদর দিয়ে ঢেকে দিয়ে অপেক্ষা করছি। এর মধ্যে বাসার বেল বেজে উঠলো।
আমি চাদরটা গায়ে মাথায় ভালোভাবে জড়িয়ে দরজায় চোখ রেখে দেখলাম একজন কালো বোরকা পরা মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন। দরজা খুলে দিতেই আমাকে হাতের ইশারায় ভেতরে যেতে বললেন। বেশ উঁচু লম্বা, তাগড়া শরীর। পুরো মুখের উপর নেকাব দিয়ে ঢাকা, পায়ে মুখবন্ধ জুতো, হাতেও হাতমোজা পরা। খুবই পর্দানশীন, চেহারাও বুঝা যাচ্ছে না। আমি ভেতরে চলে আসলাম। আমাকে ইশারা করলেন শুয়ে যেতে। আমি গায়ে চাদর জড়িয়ে শুয়ে যেতেই, প্রথমে আমার মুখ খুলে একটা বোতল থেকে সেই গাঢ় মিষ্টি তরল মুখে তিনবার ঢেলে দিলেন। ওনার গা থেকে কাঠপোড়া সুগন্ধির সুবাস আসছে। বাকি দুইজনের মুখেও ঢেলে দিলেন তরল। আল্পনা একটু খক খক করলেও, পুরোটাই গিলে নিলো। এবার একে একে আমাদের চোখ প্রথমে টেপ দিয়ে আটকিয়ে তার উপর শক্ত করে কাপড় বেঁধে দিলেন। আমার চোখ অন্ধকার হয়ে গেল সেই প্রথম দিনের মতো। আমরা সবাই বিড়বিড় করে প্রার্থনা করতে শুরু করে দিলাম।
।। চলবে… ।।