এই গল্পটা আমার মা মিসেস সুদীপা রায় কে নিয়ে। আমার মা একজন ৪৮ বছর বয়সি স্কুল টিচার। সুন্দরী শিক্ষিতা রুচিশীল উদার সরল মনের মানুষ হিসাবে মা কে নিয়ে আমার গর্বের শেষ ছিল না। আমার মা শহরের একটি বড়ো নামী সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত গার্লস স্কুলের সঙ্গে দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে যুক্ত। বর্তমানে সেই বিদ্যালয়ের এসিস্ট্যান্ট হেড মিস্ট্রেস পদে আছেন।
আমার বাবা একজন ব্যাস্ত ডক্টর। পেশার কারণেই উনি আমাকে আর পরিবারকে ওতো সময় দিতে পারেন না। তবে মা তার শিক্ষকতা আর সংসার দুটোই বেশ নিপুণ হাতে সামলে এসেছেন। আমাকে আর আমার বড়ো দিদি অপর্ণা কে মানুষ করবার দায়িত্ব অনেক টা একা হাতে সামলে এসেছেন। এই গল্পের শুরু হয় বছর দুই আগে যখন আমার একমাত্র দিদি Phd করতে করতেই বিদেশে সেটেল হবার সিদ্ধান্ত নেয়।
এই সিদ্ধান্তে আমার আর মায়ের মত ছিল না। কিন্তু বাবা সমর্থন করায় দিদি নিজের সিদ্ধান্তে স্থির থাকে। মায়ের অনেক ছুটি পাওনা ছিল। তাই মা দিদির কাছে গিয়ে সব কিছু গুছিয়ে দিয়ে আসবে বলে বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মার এই বিদেশে যাওয়ার আরেক টা কারণ ছিল দিদিকে সামনাসামনি নিজের চোখে দেখা তার সঙ্গে সময় কাটানো। কারণ দিদি পড়াশোনা করতে সেই যে বছর দুই আগে বিদেশে গেছিল তারপর পড়তে পড়তে ভালো চাকরি পেয়ে যাওয়ায় আর দেশে ফিরতে পারে নি।
আমারও মার সঙ্গে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেমিস্টার এর রুটিন চেঞ্জ হওয়াতে মা কে একাই যেতে হয়। আমার মা কে নিয়ে বাবা একবার সিঙ্গাপুর টুরে গেছিল। কাজেই পাসপোর্ট আগে থেকেই করা ছিল।বাবার চেনা শোনা থাকায় চট জলদি ভিসা পেতে ও অসুবিধা হলো না। কলকাতা থেকে মুম্বাই আর মুম্বাই থেকে নিউইয়র্ক সিটি হয়ে জর্জিয়া পৌঁছনোর ফ্লাইট টিকিট কাটা হয়েছিল।
মা নিজের স্কুল থেকে ২০ দিনের মত ছুটি নিয়েছিল। দেখতে দেখতে মার যাওয়ার দিন এসে গেল। মা যে দিদির কাছে যাচ্ছে এটা দিদিকে আগে থেকে জানানো হল না। আসলে সামনের সপ্তাহে ছিল দিদির ২৪ তম জন্মদিন। মা দিদিকে surprise দিতে চেয়েছিল। কিন্তু দিদির ওখানে গিয়ে মিডিলক্লাস মূল্যবোধে আজীবন বিশ্বাস রাখা আমার মা নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে যাবে এটা সে স্বপ্নেও ভাবতে পারে নি।
আমার মার কাছে দিদির ভাড়া করা অ্যাপার্টমেন্টের অ্যাড্রেস ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে ফ্লাইট থেকে নেমে এয়ারপোর্ট থেকে একটা গাড়ি ভাড়া করে মা দিদির অ্যাপার্টমেন্টে র দিকে রওনা হলো। মা দিদি ঠিক কোথায় থাকতো জানলেও দিদি যে তার একজন পুরুষ কলিগ ড্যানিয়েল এর সঙ্গে এপার্টমেন্ট শেয়ার করে থাকছে এটা জানতো না। মা যখন ওদের ওখানে গিয়ে পৌঁছলো তখন সবে মাত্র একটা ঘরোয়া পার্টি শেষ হয়েছে। দরজা ছিল হাট করে খোলা।
সেই দরজা দিয়ে মা লাগেজ নিয়ে ভেতরে এসে যে দৃশ্য দেখলো তাতে মা বিস্ময়ে চমকে উঠেছিল। সেই সময় আমার দিদি তার পার্টনার ড্যানিয়েল এর সঙ্গে অন্তরঙ্গ ভাবে বসে টিভিতে একটা অ্যাডাল্ট ওয়েব সিরিজ দেখছিল।
ড্যানিয়েল এর একটা হাত দিয়ে দিদির টপ এর ভিতরে বুকের কাছে অবস্থান করছিল। আর অন্য হাত টা দিদির স্কার্ট এর ভিতরে। সব থেকে শকিং ছিল দিদি সে সময় ভেতরে কোনো অন্তর্বাস পড়া ছিল না। আর যে সোফায় ওরা বসে ছিল। তার সামনে টেবিলের উপর অ্যালকোহল এর খোলা বোতল , সোডা র বোতল, দুটো গ্লাস , বরফের পাত্র, জ্বলন্ত সিগারেট সব রাখা ছিল। মা এই দৃশ্য দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পারলো না।
দিদির সামনে এসে রাগী মূর্তি ধারণ করে এসে দাড়ালো। দিদি মা কে দেখে ভুত দেখার মতন করে চমকে উঠলো। নিজেকে ড্যানিয়েল এর থেকে আলাদা করে , পরণের টপ টা ঠিক করে কাপা কাপা পায়ে উঠে দাড়ালো। দিদির মুখ থেকে তখন ভুর ভুর করে অ্যালকোহল এর গন্ধ বেড়াচ্ছিল। নেশায় তার চোখ দুটো লাল হয়ে গেছিল। অনেক টা ড্রিংক করার ফলে তার কথাও জড়িয়ে যাচ্ছিল। মা ঐ পরিবেশে নিজের একমাত্র মেয়ে কে অচেনা রূপে দেখে মানষিক ভাবে খুব কষ্ট পেয়েছিল।
মা দিদি কে বলেছিল ” অপর্ণা ভুল সময়ে তোকে বিরক্ত করবার জন্য দুঃখিত । কিন্তু মা এটা তুই কি শুরু করেছিস? এই সব কিছু করার জন্য তুই বাড়ি ছেড়ে দেশ ছেড়ে এখানে থাকবার জন্য ডিসিশন নিয়েছিস। ছি ছি তোর থেকে এটা এক্সপেক্ট করি নি।”
সে সঙ্গে তার লাগেজ নিয়ে দিদির ঐ অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে হোটেলে গিয়ে উঠবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কিন্তু দিদি সেটা কোনমতে হতে দিল না। সে কোনো রকমে মার হাতে পায় ধরে তার বেরিয়ে যাওয়া আটকালো। তারপর মা মাথা টা কিছুটা ঠান্ডা করতেই ড্যানিয়েল এর সঙ্গে বসে আলাপ করিয়ে দিল। মা জানতে পারলো যে দিদি ড্যানিয়েল এর সঙ্গে এক মাস হল একসাথে লিভ ইন করা শুরু করেছে।
এই তথ্য শুনে মা আরো হতবাক হয়ে গেছিল। সে পরবর্তী ফ্লাইটে দেশে ফেরার জন্য ব্যাস্ত হয়ে উঠলো। কিন্তু দিদি এতদিন পর মা কে নিজের কাছে পেয়ে কিছুতেই কাছ ছাড়া হতে দিল না। উল্টে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করে মার যাওয়া ঠিক আটকে দিল। আর দিদিকে আমার মা খুব ভালোবাসত। তাই দিদির বদলে যাওয়া রূপ দেখার পরেও মেনে কটা দিন ওদের সাথে কাটিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেলো। ড্যানিয়েল এর সঙ্গে ভালো করে আলাপ করার পর মা বুঝতে পেরেছিল যে ড্যানিয়েল ছেলেটি খারাপ না।
ড্যানিয়েল খুব মিশুকে প্রাণ চঞ্চল একটা ছেলে। ও দিদির চেয়েও উচু পোস্টে চাকরি করার পাশাপাশি খুব ভালো গিটার ও বাজাতো। ড্যানিয়েল দিদিকে অপর্ণার বদলে অ্যাপস বলে সম্ভোধন করতো। তার লিভিন পার্টনার এর মম কে ইমপ্রেস করার জন্য ড্যানিয়েল মার যত্ন আত্তির কোনো ক্রুটি রাখল না। ড্যানিয়েল এর সুন্দর ব্যাবহারে মুগ্ধ হয়ে মা দিদির সাথে ওর সম্পর্ক টা মেনে নিয়েছিল।
তারপর তিন চার দিন মার ওদের বাড়িতে বেশ আনন্দে কাটলো। আমাদের লাইভ ভিডিও কল করে মা আর দিদি ওদের বাড়ির সব কিছু ঘুরিয়ে দেখালো। অনেকক্ষন ধরে কথা ও বলল। একটা বিষয় আমার ভালো লাগছিল মা দিদির সাথে সময় কাটাতে পেরে সত্যি দারুন সুখী হয়েছিল।সেই আনন্দের প্রকাশ তার চোখে মুখে অভিব্যক্তিতে প্রকাশ পাচ্ছিল। যেটা দেখেও আমার আর বাবার ভালো লাগছিল।
ভালো সময় কখনও কারো জীবনে দীর্ঘস্থায়ী হয় না।মা দিদি আর ড্যানিয়েল খুব ভালো ভাবে একসাথে কোয়ালিটি সময় কাটাচ্ছিল কিন্তু আসল সমস্যা শুরু হল যখন ড্যানিয়েল এর স্টেপ মম রোমি নেভিল ওদের ওখানে হটাৎ করে ছুটি কাটাতে চলে আসলো। উনি প্রায় একমাস ওদের সঙ্গে কাটানোর প্ল্যান নিয়ে এসেছিলেন । রোমি ছিলেন পেশায় একজন প্লাস সাইজ প্রফেশনাল মডেল। বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে কিন্তু দেখলে সেটা বুঝবার কোনো উপায় নেই।
এমনিতে দেখতে মার তুলনায় অনেক ইউং লাগে। এতটাই সুন্দর ভাবে নিজেকে মেইনটেইন করেছেন। রোমি ছিলেন অন্তরে বাহিরে একজন আদ্র পান্ত একজন আধুনিকা স্বয়ং নির্ভর নারী। যিনি নিজের জীবনটা নিজের ইচ্ছায় বাঁচতে ভালোবাসেন। রোমির ড্যানিয়েল এর বাবার সঙ্গে অনেক আগেই ডিভোর্স হয়ে গেছিল। তারপরেও ড্যানিয়েল এর সাথে ওর একটা আলাদা বন্ডিং ছিল।
প্রতি বছর এক দুইবার এসে উনি ড্যানিয়েল এর সঙ্গে থেকে যান। উনি এসেই আমার মা কে তার সম বয়সি দেখে সঙ্গে সঙ্গে গায়ে পরে বন্ধুত্ব করে নিলেন। আমার মাও বিশ্বাস করে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতল। ড্যানিয়েল এর মাম্মার সাইকোলজি বুঝতে মা কিছুটা ভুল করেছিল। আসলে সেই সময় দাড়িয়ে রোমী কে অবিশ্বাস করার কোনো কারণ ও ছিল না। রোমির মতন নারী র সঙ্গে বন্ধুত্ব যে তার লাইফের কত বড় ভুল ছিল সেটা মা কিছুদিন এর মধ্যেই ভালো ভাবে টের পেয়েছিল।
চলবে…