গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ১৯ ( অন্তিম পর্ব)

গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ১৮

আমি রাহুল, আমার মার জীবনের এই কাহিনির শেষ টা লিখছি। আমাদের জীবন মার অবর্তমানে প্রথম দিকে অন্ধকার দিশাহীন মনে হলেও, আস্তে আস্তে আমরা নিজেদের মা কে ছাড়াই মানিয়ে গুছিয়ে নিয়েছিলাম। আমরা না চাইতেও মায়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ কমতে কমতে মার মুম্বাই যাওয়ার দেড় দুই বছরের মাথায় সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

মা আমাদের থেকে সেপারেট থেকে চিত্র তারকার জীবন কাটাচ্ছিল। তার জগৎটা আলাদা হাওয়ায় মায়ের পক্ষে আমাদের নিয়ে তাল মিলিয়ে চলা সম্ভব ছিল না। তার উপর অন্য এক সেলেব এর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় মার পক্ষে আগের জীবনে ফিরে আসা আরো কঠিন হয়ে যায়। ওদের বিয়ে ফাইনাল হবার পর, আমার বাবা শেষ মুহূর্তে মুম্বাই গেছিল মা কে বোঝাতে কিন্তু মা সেই সময় বাবা কে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

বাবাও ভীষন কষ্ট বুকে চেপে রেখে মার উপর অভিমান করে তার থেকে সম্পূর্ণ ভাবে সরে আসে। অরবিন্দ এর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হবার সময় মা বাবার থেকে ডিভোর্স চাইছিল, বাবা মুম্বাই গিয়েও মা কে বোঝাতে ব্যার্থ হয়। মা তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ২৫ লাখ টাকা বাবাকে অফার করেছিল। বাবা তখন মা কে ঘৃণার চোখে দেখছিল। কাজেই টাকা দেওয়ার প্রস্তাব অস্বীকার করে কিছুদিনের মধ্যেই মার পাঠানো ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দেয়। অরবিন্দের তত্ত্বাবধানে খুব গোপন ভাবে মিউচুয়াল ভাবে ডিভোর্স হবার পর, অরবিন্দ আর তার বন্ধু দের চক্করে পরে সুপ্রিয়া মালাকার এর আইনত আর কোনো অস্তিত্ব থাকে না। অরবিন্দ এর মতন সেলিব্রিটি আর্টিস্ট কে বিয়ের পর মা পুরোপুরি পাল্টে যায়।

আমাদের খোজ নেওয়াও আস্তে আস্তে মা বন্ধ করে দেয়।শুধু তাই না, নিজের পূর্ব জীবন ভুলে গিয়ে, মোহিনী পাঠক আইডেন্টিটি নিয়েই মুম্বাই টে চুটিয়ে একের পর এক টিভি সিরিজে শর্ট ফিল্ম এ সফল ভাবে কাজ করতে থাকে। আমাদের জীবন থেকেও মার উপস্থিতি আস্তে আস্তে মুছে যাচ্ছিল। মার জায়গায় পরে থাকে শুধু তার কতোগুলো পুরনো ছবি আর পুরনো ফেলে যাওয়া কাপড় চোপর। সেগুলোকে বাবা একটা বড়ো ট্রাঙ্ক এ বন্ধ করে তুলে রেখেদিয়েছিল। মা কে হারিয়ে বাবা ও খুব তাড়াতাড়ি পাল্টে গেছিল। যে টাকা আর ঐশ্বর্য র জন্য মা আমাদের ছেড়ে ঐ অরবিন্দ বলে সেলেব কে নিজের সঙ্গী করেছিল, বাবারও সেই টাকা আয় কর বার নেশা চেপে গেলো।

নিজের ব্যাবসা বড়ো করবার জন্য, তাড়াতাড়ি সমাজের উচু জায়গায় পৌঁছনোর জন্য বাজে চরিত্রের প্রভাবশালী লোক দের তোয়াজ করতে হতো। তাদের সঙ্গে মিশে মিশে বাবারও অনেক খানি পরিবর্তন হলো। তাকে মদ খাওয়া ক্লাবে যাওয়া, রাত করে বাড়ি ফেরা, মিথ্যে কথা বলা র মতন বদ অভ্যাস কে আপন করে নিতে হল ,সে সময় বাবার একজন প্রভাবশালী বন্ধু জুটেছিল, সে বাবাকে ব্যাবসা টে প্রচন্ড সাহায্য করে ছিল। সেই বন্ধুই একদিন বাবা কে মার কথা ভেবে ভেবে কষ্ট পেতে দেখে জোর করে বাবা কে নিষিদ্ধ পল্লীতে নিয়ে যায়। রত্না নামের এক প্রথম শ্রেণীর পতিতার ঘরে বাবা রাত্রি যাপন করতে বাধ্য হয়।

তারপর সেই রত্না অ্যান্টি র সঙ্গে বাবার সেই বন্ধুর সৌজন্যেই ভালো করে আলাপ হয়। রত্না নামের নারী এইভাবে বাবার জীবনে আসবার পর, বাবা নিজেকে মদ আর যৌনতায় ডুবিয়ে রাখার বদ অভ্যাস করে ফেলে। মা কে হারানোর মানষিক অশান্তি থেকে বাচবার জন্য মদ আর যৌনতার আশ্রয় নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় বাবার কাছে ছিল না। বাবার জীবনে মার জায়গা টা আস্তে আস্তে রত্না আণ্টি সুকৌশলে নিয়ে নেয়।

রত্না আন্টি কে নিয়ে নানা নোংরা কথা শোনা গেলেও বাবা তাকেই শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস করে বাড়ি টে এনে তুলেছিল। মাস খানেক এই ভাবে শারীরিক সম্পর্কে রত থাকবার পর রত্না আন্টির পেটে বাবার সন্তান চলে আসে। রত্না আণ্টি র কুমারী অবস্থায় পেট বাঁধিয়ে ফেলায় , কেলেঙ্কারির হাত থেকে বাচাতে বাবা তাকে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করে নেয়।

প্রথম দিকে টাকার জন্য বাবা কে শুধুমাত্র ভালোবাসার ভান করলেও, পর বাবার সংস্পর্শে এসে রত্না আণ্টি র চরিত্রে আমূল পরিবর্তন আসে। সে ভদ্র সভ্য বউ সেজে জাতে উঠবার চেষ্টা করে। অনেক অংশে সফল হয়। কিন্তু চরিত্র গত কিছু পার্থক্য রত্না আণ্টি র মধ্যে থেকে যায়। সে তার ছোট স্লিভলেস ব্লাউজ আর পাতলা আঁচল করে শাড়ি পড়বার স্টাইল টা কিছুতেই চেঞ্জ করতে পারে না।

রত্না আণ্টি নাভির তিন ইঞ্চি নিচে শাড়িটা পড়ত যার ফলে কোমর টা পরিষ্কার দেখা যেত। আণ্টি বিয়ের পর মার ফেলে যাওয়া আলমারি তার জিনিস পত্র বাবার স্ত্রীর অধিকারে ব্যাবহার করতে শুরু করে। আমার নতুন মা হয়ে এসে রত্না আণ্টি আমাকে বেশ ভালো ভাবেই অ্যাকসেপ্ট করে নেয়। আমার মায়ের জায়গায় রমা আন্টির মতন কাউকে দেখতে অসুবিধা হচ্ছিল। তবুও আমি আমার বাবার জন্য তাকে আমাদের জীবনে অ্যাকসেপ্ট করে নি। রত্না আণ্টির এই সুখ বেশিদিন টেকে না। শারীরিক কিছু প্রতিবন্ধকতার জন্য শেষ অবধি টিকে বাঁচানো যায় না। ছয়মাসের বেবি মিসকারেজ হয়। এই ঘটনায় বাবা আর রত্না আণ্টি দুজনেই মুষরে পড়েছিল।

কিছুদিন গোপন সূত্রে মায়ের বাচ্চা টিও নষ্ট হবার খবর টা ওদের যন্ত্রণায় একটু প্রলেপ দেয়, সেই সময় মা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমি বাবার প্রতি মায়ের অবিচার দেখে দেখে খুব ক্ষুব্ধ ছিলাম। মা কে কথা শুনিয়ে মুখের উপর ফোন টা রেখে দি। মা আমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে আর যোগাযোগ করে নি।

আমাদের জীবন আমাদের মতন করে ভালোই চলছিল, বাবার ব্যাবসা বড়ো হচ্ছিল। রত্না আন্টিও বাবার আর আমার যত্ন আত্তি করছিলো। তারপর হটাৎ করেই আবার একটা খবর আসে মার প্রথমবার মুম্বাই যাওয়ার দুই বছরের মাথায় আমাদের জীবনে একটা বড় পরিবর্তন আসে। আমার মা সুপ্রিয়া অরবিন্দ এর সঙ্গে লিভ ইন করতে করতে অরবিন্দ এর সব থেকে কাছের বন্ধু সাম মিরান্ডার অবৈধ বাচ্চার মা হয়ে যায়। মা নিজের অজান্তেই সেই বার প্রেগনেন্ট হয়ে গেছিল।

শেষ মেষ অরবিন্দের চাপে কেচ্ছা লোকাতে মা অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও গর্ভ পাত করতে বাধ্য হয়। এই নিউজ বিশ্বস্ত সূত্রে বাবার কানেও এসে পৌঁছায়। সে এই খবর পেয়ে অস্থির হয়ে ওঠে, ভেতরে ভেতরে মানষিক অস্থিরতায় জ্বলে রত্না আণ্টি কেও আবার প্রেগনেন্ট বানাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এইবার নিজের থেকে রত্না আণ্টি ও খুব চেষ্টা করে বাবাকে সন্তান সুখ দিতে, দুই বেলা যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার পরেও, বহুকাঙ্খিত গুড নিউজ আসে না। তারপর নানা ডাক্তার দেখিয়ে অসংখ্য টেস্ট করিয়েও লাভের লাভ কিছু হয় না। ডাক্তার রা বলে দেয় যে রত্না আণ্টি আর কোনোদিন মা হতে পারবে না।

এর পর বাবা রত্না আন্টির প্রতি উদাসীন হয়ে যায়। বাড়িও নিয়মিত ফিরত না। রত্না আন্টির কষ্ট দেখে আমার ও খারাপ লাগতো। ঐ সময় থেকে আমি রত্না আন্টি কে তার ইচ্ছেতেই নতুন মা বলে সম্ভোধন করা শুরু করি। এই সময় রত্না আণ্টি অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে ধরে রাখতে পারে না, বাবার না থাকার সুবাদে বেশ কিছু চেনা ও অপরিচিত আঙ্কেল এই সময় আমাদের বাড়িতে আসা শুরু করে। তারা রত্না আন্টির সঙ্গে বেড রুমে একান্তে অনেক টা সময় কাটাতো, এদের সৌজন্যে রত্না আন্টির সাজ গোজ চাল চলন সব আগের মতন হয়ে যাচ্ছিল। তাদের আকৃষ্ট করতে রত্না আণ্টি আগের মতন হাত কাটা পিছন খোলা ব্লাউজ পড়া আরম্ভ করেছিল। সে তার আগের প্রফেশনে ফেরবার কথা ভাবছিল।

আমি সব দেখতাম, রত্না আণ্টির কষ্ট টা বুঝতাম, তাকে অনাচার হওয়া থেকে আটকানোর চেষ্টা করতাম কিন্তু অশান্তির ভয়ে বাবাকে এ বিষয়ে কিছু বলতাম না। কিছু মাস দূরে দূরে কাটানোর পর বাবা ফের রত্না আন্টির কাছে ফিরে আসে। আর বাবা আসতেই বাড়িতে ঐ আঙ্কেল দের আনাগোনা বন্ধ হয়ে যায়। রত্না আণ্টি বাবাকে পেয়ে জীবনের মূল স্রোতে ফিরে আসে। রত্না অ্যান্টি পড়াশোনা কম জানলে কি হবে, অসাধারণ বুদ্ধিমতী মহিলা ছিলেন। তিনি নিজের থেকেই বাবাকে হেল্প করার জন্য ব্যাবসা টে যোগ দেয়। আণ্টি যোগ দেওয়ার পর ব্যাবসার আরো বেশি করে সাফল্য আসে ।

আমি আজও জানি না রত্না আন্টির রোল কি ছিল। কিন্তু বাবা আণ্টি কে নিয়ে বাইরে যেত, হোটেলেও বড়ো বড়ো ক্লায়েন্ট দের সঙ্গে মিটিং এ আণ্টি থাকতো। তারপরেই দেখা গেলো বাবা যাতে হাত দিচ্ছিল তাতেই সোনা ফলছিল। এই ভাবে আমরা মধ্যবিত্ত থেকে ঝটসে বড়োলোক বনে যাই। আর অন্যদিকে ধাপে ধাপে মা উল্লেখখযোগ্য ভাবে উন্নতি করে। তিন চার বছরে বেশ কয়েকটি স্বল্প বাজেটে র হিন্দি ফিল্ম এ কাজ করে। সেই ফিল্ম গুলোতে মা কে ছোট পোশাক পরে অ্যাডাল্ট সং এর সঙ্গে নাচের দৃশ্যে সাবলীল ভাবে পারফর্ম করতে দেখা গেছিলো।

এই গানের দৃশ্য থেকে আমার পুরোনো মা কে চেনার কোনো উপায় ছিল না। কাজেই আমাদের আত্মীয় স্বজন যারা মা কে চিনতো, ফিল্ম গুলো রিলিজের পর, তাদের গঞ্জনা আমাদের শুনতে হয় নি। চিত্র জগতে ক্রমাগত সাফল্যের ফলে যখন মা তার কেরিয়ার আর খ্যাতির মধ্যগগনে বিরাজ করছিল ঠিক তখন ই ঘটে ইন্দ্রপতন। নিজের কেরিয়ার এর মাত্র পঞ্চম বছরেই, হটাৎ করেই একটা হাই ক্লাস পার্টি টে এক প্রভাবশালীর অনুরোধে ড্রাগ পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় মোহিনী পাঠক।

মা সত্যি সত্যি এই কাজ করেছিল, নাকি মা কে কেউ বা কারা মিথ্যে অভিযোগে ফাসিয়ে ছিল। সেটা আজও রহস্য থেকে গেছে। কিন্তু সেইসময় ঐ গুরুতর অভিযোগের পর মা আকাশ থেকে সোজা মাটিতে এসে পড়ে। মার ইমেজ আর ব্র্যান্ড ভ্যালু ভালো রকম ধাক্কা খায়। যাদের জন্য মা এই জঘন্য কাজ টি করেছিল তাদের উচুমহলে সোর্স থাকায় মা জেল যাওয়া থেকে বেচে যায় কিন্তু মা কেই পুলিশের হাতে বেশ কয়েক মাস যাবৎ বাজে ভাবে হেনস্থা হতে হয়।

ঐ ঘটনার পর মার মার অ্যাক্টিং এন্ড মডেলিং গ্রাফ হটাৎ ই নামতে শুরু করে। বড় প্রযোজক রা মার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করে। মদ ড্রাগ সহ অনিয়ন্ত্রিত বোহেমিয়ান জীবন যাত্রার ফলে শরীর তাও তার আগের জেল্লা হারিয়ে বেশ ভারী হয়ে আসছিল। অতিরিক্ত মদ আর জঙ্ক ফুড খাওয়া র ফলে শরীরে অতিরিক্ত মেদ ও জমেছিল। একটা সময় পর স্টেজ শো গুলো টেও মা সেভাবে বুকিং পাচ্ছিল না।

রোজগার কমে আসলো তবুও নিজের সেলেব জীবনে র ঠাট বাট ঐশ্বর্য বজায় রাখতে যে প্রচুর টাকা খরচের অভ্যাস হয়ে ছিল, মা কিছুতেই সেই অভ্যাস থেকে সরে আসতে পারলো না। অ্যাক্টিং, মডেলিং, স্টেজে ড্যান্স পারফর্ম করে যখন রোজগার অর্ধেক এর বেশি কমে আসলো তখন মা পার্টি অ্যাপিয়ারান্স এর উপর আরো অনেক বেশি করে নির্ভর করতে শুরু করলো। সপ্তাহে একটার বদলে তিনটে চারটে করে লেট নাইট পার্টি করা অভ্যাস করতে হলো। এটে মার অ্যাক্টিং আর মডেলিং কেরিয়ারের পতন আরো দ্রুত গতি টে হওয়া শুরু হল।

একটা সময় পর, টাকার জন্য এমন সব পার্টিতে মা শরীর দেখানো রিভিলিং পোশাক পরে ভিজিট করা শুরু করলো যেখানে ৬-৭ ঘণ্টা আটকে রেখে মার শরীর টা যথেষ্ট ভাবে ব্যাবহার করা হত। পরিষ্কার করে বললে মা কে পুরোপুরি পার্টি গুলোতে নিংড়ে নেওয়া হতো , পার্টির পর মার এপার্টমেন্টে ফিরে চলা ফেরার ও শক্তি থাকত না ড্রেস চেঞ্জ না করেই বিছানায় গিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ত। অধিকাংশ দিন শোওয়ার আগে মার পায়ের স্টিলিট খুলবার মতন সেন্স থাকতো না।

অরবিন্দ মায়ের যৌবনের সেরা সময়ের শেষ যে আসন্ন টা বুঝতে পেরে মা কে ছেড়ে অন্য এক ইউং প্রতিশ্রুতি মান মডেল এর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। একমাস লুকিয়ে চুরিয়ে এই সম্পর্কের পর অরবিন্দ মা কে ডিভোর্স দেয়। নিজের কেরিয়ারের শেষ আসন্ন বুঝতে পেরে মুম্বাই এ থাকার ৬ বছরের মাথায় মা এক পয়সা ওলা নামী ফ্যাশন ডিজাইনার কে বিয়ে করে। কিন্তু সেই বিয়ে পাঁচ মাসের বেশি টেকে না।

অবশেষে সেই বিয়ের থেকে বিচ্ছেদ এর পর, মুম্বাই যাওয়ার সাত বছরের মাথায় আরো একজন ধনকুবের বয়স্ক ব্যাবসায়ী কে শেষ মেষ তার রূপের জাল এ ফাসিয়ে তার ট্রফি ওয়াইফ বনে সেই যে বিদেশে সেটেল করে যায়। তারপর আর মা কে আর কোনো দিন প্রকাশ্যে দেখা যায় নি। আমার মাঝে মাঝে মার জন্য মন কেমন করতো তখন আমি নিজেকে নানা ভাবে স্বান্তনা দিতাম। রত্না আণ্টি আমার মায়ের অভাব টা অনেকটা ঢেকে দিয়েছিল।

উপসংহার:

আমি টুইলফ ক্লাস পাস আউট করে, আমি বাবার ইচ্ছে টে বিদেশএ র ইউনিভার্সিটি টে পড়তে যাই। ইউরোপে একটা নামী ইউনিভার্সিটি টে পড়ার সুযোগ আসে। সেখানে চার বছরের graduation কোর্স ছিল। বিদেশে আসার কয়েক সপ্তাহ পর আমার কতগুলো নতুন বন্ধু হয়। সেই সাথে আলাপ হয় এক নতুন ক্লাসমেট আলিটার সাথে। এলিটা ছিল আমার সমবয়সী । একদিন ইস্টার হলিডে থাকায় ছুটি ছিলো। বন্ধুরা মিলে ঠিক করলো শহরের সব থেকে বড় স্ট্রিপ ক্লাবে যাবে ইঞ্জোয় করতে। আমাকেও ওরা দলে টেনে নিল। আমি রাজি হচ্ছিলাম না।

শেষে এলিটা রেকোয়েস্ট করায় ওদের সঙ্গে ঐ ক্লাবে যেতে আপত্তি করলাম না। ওখানে গিয়ে যা অভিজ্ঞতা হল। সেটা কে এই গল্পের ক্লাইম্যাক্স বলা যেতে পারে। যার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। আমার বন্ধু এলিটা ও অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিল। ক্লাবে এসে আমরা যেখানে গ্রুপ বেধে মস্তি করছিলাম। তার দুটো রো সামনে একটা স্ট্যান্ড ছিল সেখানে একজন সুন্দর দেখতে পুরুষ exhibitionist perform করছিল।

এলিটা আমার হাত ধরে এক পাশে টেনে এনে বললো “এসো আমার সাথে, আমার স্টেপ মাদার এর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দি। ইনি আমার বাপির থার্ড ওয়াইফ, উনি স্টেপ মাদার হলেও, আমরা একেবারে বন্ধুর মতন। এনার বিশেষত্ত ইনিও তোমার মতন ইন্ডিয়ান। এসো তোমার আলাপ করে ভালো লাগবে। তারপর আমরা একসাথে এঞ্জোয় করবো। ”

এলিটার সাথে গিয়ে ওর স্টেপ মাদার এর সঙ্গে আলাপ করে রীতিমত শকড হলাম। আমার মা এলিটার বাবার সঙ্গে সেক্সুয়াল লাইফ এ খুশি না। তাই এখানে সেখানে চুটিয়ে এক্সট্রা মার্টিয়াল আফেয়ার করে বেড়াচ্ছে। এলিটা সব জানে মার এই গোপন কর্ম কাণ্ডের বিষয়ে। এলিটা যখন মা কে ওখানে প্রথম স্পট করলো, আমার মা অচেনা কম বয়শী পুরুষের সঙ্গে প্রাইভেসি মোমেন্ট এঞ্জয়ে করছিল, পুরুষটির পরনে সেই সময় কোনো শার্ট পড়া ছিল না।

মার টপ এর উপরের বাটন গুলো সব খোলা আর তার স্তন এর উপরের অংশ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল। মার ঠোঁটের লিপস্টিক ঘেঁটে গেছিল। একটু আগেই একটা চুম্বন করতে হয়েছে তার পরিষ্কার সাইন দেখা যাচ্ছিল। মা তখন খুব ই ছোট একটা ওয়েস্টার্ন আউটফিট পরে। আমাদের দেখে, ঐ পুরুষ কে কিছু ডলার ধরিয়ে দিয়ে বিদায় দিয়ে আমাদের কাছে এগিয়ে আসলো। আমি তো প্রথম দেখে মা কে চিনতেই পারি নি, শেষ বার মা কে যেমন দেখেছিলাম, মা টা থেকে একেবারে ভোল পাল্টে ফেলেছিল। অন্তরে বাহিরে সম্পূর্ণ বিদেশি মহিলা। শুধু চোখের মণির রং টা অপরিবর্তিত আছে।

চিন্তে পারলাম এলিটার স্টেপ মম আর কেউ না আমার মা যার নাম একটা সময় ছিল সুপ্রিয়া মালাকার, কিন্তু ঐ সময় ওনার নাম ছিল মোহিনী অ্যান্ডারসন। আমি অবাক হয়ে গেছিলাম, আমার বড় হয়ে যাওয়ার পরও, শেষ সাক্ষাতের প্রায় বছর ১০ বাদেও মা আমাকে দেখে এক বারেই চিনতে পেরেছিল। আবেগে মার চোখেও জল চলে এসেছিল। মা আমাকে জড়িয়ে ধরলো। মনে যতই অভিমান থাক, আমি মা কে এত বছর বাদে দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। সব রাগ সব অভিমান গলে গিয়ে চোখের জলে পরিণত হলো।

নিজেদের সামলে নেওয়ার পর ক্লাবের বাইরে এসে, মা আমাকে হোস্টেল ছেড়ে ওদের বাড়িতে চলে আসতে বললো। আমি মার প্রস্তাব মেনে নিলাম। পরবর্তী একমাসে একটু একটু করে আমাদের মা ছেলের ভিতরে অভিমানের পালা মিটলো। এই ক বছরে প্রত্যেক টা মুহূর্ত মা আমাকে আর বাবাকে মিস করেছে, কিন্তু যোগাযোগ করে বাবার বিবাহিত জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করে নি। মা বাবাকে ছেড়ে কারোর সঙ্গে সুখী হয় নি।

শুধু একটা র পর একটা সম্পর্কে জড়িয়েছে, শরীর আর রূপের দৌলতে প্রচুর টাকা সম্পত্তির মালিক বনেছে, কিন্তু মনে একদণ্ড শান্তি পায় নি। বাবার মনে মার বিষয়ে ফিলিংস যে চিরকাল ছিল সেটা আমি জানতাম ই। মাও ভেতরে ভেতরে অনুতপ্ত এই প্রমাণ পাওয়ায় আমি মা কে ক্ষমা করে দিয়েছিলাম। এক মাস মায়ের সঙ্গে কাটানোর পর বাবার থেকে হটাৎ খবর পেলাম, আমার নতুন মা, ওরফে রত্না আন্টির অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে।

অবস্থা আশঙ্কাজনক, বাবা মুশরে পড়েছে। আমাকে ইমিডিয়েট বাড়ি ফিরতে হবে। এলিটা আর মা কে সব টা খুলে বলতে ওরাও বিচলিত হয়ে পরলো। বিশেষ করে আমার মা বাবার পাশে দাড়াতে চাইছিল। এলিটার সঙ্গেও আমার একটা অন্যরকম বন্ডিং হয়ে গেছিলো, নতুন মার অ্যাকসিডেন্ট এর খবর পাওয়ার দুদিনের মধ্যে দ্রুত সব এরেঞ্জমেন্ট করে, এলিটা আর আমার মা কে নিয়ে আমি দেশে ফেরার ফ্লাইটে উঠলাম। এই ভাবেই আমার মায়ের জীবনের একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়েছিল।

সমাপ্ত।।