গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ২

গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি ! পর্ব ১

ডিনার পার্টির পর একসপ্তাহ ও কাটলো না। রুচিকা আন্টির হাসব্যান্ড ভদ্রলোক তার স্ত্রী কে নিয়ে আমাদের বাড়িতে এমন একটা লোভনীয় প্রস্তাব দেয়। যেটা টে তখন না করে দিলে আমার আজ মনে হয় আমাদের পরিবার টা এইভাবে ছার খার হয়ে যেত না। রুচিকা আন্টির হাসব্যান্ড আমার বাবাকে বললেন, দাদা যদি কিছু মনে না করেন আপনাদের ফ্যামিলি ইনকাম মাসে কত হয় বলতে পারেন। বাবা সেটার উত্তর দিতে ঐ আঙ্কল আবার বললো, ” বুঝতেই পারছি, কি কষ্ট করে আপনাদের চালাতে হচ্ছে, আচ্ছা আপনাদের এই পুরনো বাড়ি ছেড়ে আমাদের মত একটা ঝা চক চকে নতুন ফ্ল্যাটে উঠে আসতে মন চায় না। শুনেছেন বোধ হয় ঐ ফ্ল্যাট টা গেলো সপ্তাহে আমরা কিনে নিয়েছি।”

বাবা: হ্যা ইচ্ছা তো করে ,কিন্তু টাকা কোথায় পাবো। প্রভিডেন্ট ফান্ডের কটা টাকা সম্বল।।টেও সুপ্রিয়া সেলাই করে চালিয়ে নিচ্ছে বলে কিছুটা বাঁচোয়া। এখন বাবু বড়ো হচ্ছে। আর আমাদের এই একতলা বাড়িতে ঘর ও কম।” আঙ্কল: আপনি চাইলে আমাদের আবাসনে নতুন ফ্ল্যাট মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বুক করতে পারেন। তার জন্য বৌদি যে আই মিন আপনার মিসেস কে কাজ করতে হবে। আপনাদের কোনো অভাব থাকবে না। গাড়ি বাড়ি ব্যাংকে টাকা সব হবে।”
বাবা: সুপ্রিয়া কি কাজ করবে? O তো পড়াশোনা খুব বেশি দূর করে নি। জব পেলে আমার কোনো আপত্তি নেই।
আঙ্কল: এটা একটা বিশেষ ধরনের জব। এখানে কাজের নির্দিষ্ট কোনো ১০ টা পাঁচ টা r সময়ের হিসেব নেই।
বাবা,: কি কাজ শুনি না।

আঙ্কল : দাদা যদি কিছু মনে না করেন আমি বৌদি কে নিয়ে একটা মডেলিং ফোটো শুট করতে চাই। ওনার মত ফ্রেশ ঘরোয়া একটা সুন্দর মুখ একটা অ্যাড ক্যামপেইনে লাগবে। যেটা আমি কিছুতেই পারছি না। বৌদি এই প্রোজেক্ট টায় অটোমেটিক চয়েজ মাত্র ১-২ ঘণ্টার কাজ। প্লিজ না করবেন না। ফটো শুট টা আমাদের ফ্ল্যাটেই হবে। দুটো পারফেক্ট শটের জন্য প্রোজেক্ট টা আছে। আমি চাই বৌদি কে এখানে একটা চান্স দিতে তারপর বৌদি যদি কমফোর্ট ফিল করে সে ক্যারি অন করবে আর না করলে আই প্রমিজ আর কোনোদিন এই বিষয়ে আপনাদের কে বিরক্ত করবো না।” বাবা এসব কথা শুনে অবাক হয়ে মায়ের দিকে তাকালো। মা মাথা নাড়ছিল। সেটা দেখে রুচিকা আণ্টি মায়ের কাছে এসে বললো, ” তুমি ভয় পাচ্ছো কেন, একবার ট্রাই করতে দোষ কি? তুমি সেলাই করে যে টাকা টা মাস গেলে সংসারে দাও তার ১০ গুন টাকা তুমি ঐ দু ঘণ্টা ক্যামেরার সামনে দাড়িয়ে রোজগার করতে পারবে। এমন সুযোগ আর পাবে? নেহাত হাতে একদম সময় নেই বলে নতুন মডেল না খুঁজে তোমার কাছে ছুটে এসেছি না হলে এই কাজ টা করতে যেকোনো মডেল মুখিয়ে থাকতো।” মা রুচিকা আন্টির কথা শুনে চুপ করে ছিল। আঙ্কল বাবা কে বোঝাতে লাগলো,” মার মতন ঘরোয়া সুন্দর ফ্রেশ একটা মুখ তার অ্যাড ক্যাম্পেইন এ কত ভালো ভাবে মানিয়ে যাবে। এই প্রজেক্টে মার দুটো ছবি মুম্বাই থেকে প্রকাশিত একটা প্রথম সারির ফ্যাশন এবং ওম্যান ম্যাগাজিন এ অ্যাড পিকচার হিসাবে publish hobe। সব থেকে বড় কথা এই শুটিং এর জন্য কোনো স্টুডিও তে যেতে হবে না। আঙ্কল দের ফ্ল্যাটেই ফোটো শুট করবার সব রকম ব্যাবস্থা ছিল।

আমার মা বাবার একটা অদ্ভুত ভালো গুন ছিল কেউ বিপদে পড়ে তাদের দুয়ারে সাহায্য চাইতে এলে কাউকে ফেরাতে পারতো না। এই ক্ষেত্রে ও সেটাই হলো। বাবা আঙ্কল কে জিজ্ঞেস করেছিল, সুপ্রিয়া র জায়গা টে সত্যি কি আর কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না? আঙ্কল রিপ্লাই দিল, ” বিশ্বাস করুন দাদা, আমার এই কাজ টা এখন শুধু মাত্র বৌদি উদ্ধার করতে পারবে। এই কন্টেন্ট টায় মডেল হিসাবে দারুন মানাবে। প্লিজ আমাকে না করবেন না দাদা। বিশ্বাস করুন এক মাস ধরে খুঁজে বৌদির মতন একটা ফ্রেশ সুন্দর ঘরোয়া মুখ খুঁজে পাচ্ছি না। আর মুম্বাই এর অফিস থেকে জানিয়ে দিয়েছে আর তিন দিনের মধ্যে এই ফোটো গুলো না তুলে পাঠালে, ঐ লেডিস ওয়ার প্রস্তুত কারক সংস্থা র সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে। কোম্পানির অনেক টাকা লোকসান হয়ে যাবে। সময়ে অ্যাসাইনমেন্ট শেষ না করলে আমার নামে বাজে রিপোর্ট যাবে। আমি আর কোনো বড়ো কাজ পাব না। আমি পথে বসে যাবো। এই বলে আঙ্কেল ড্রামা করতে করতে বাবার পায়ের কাছে বসে গেল। মা বাবা যত বলতে লাগলো, -“আরে করছেন কী করছেন কী” ততই আঙ্কল দের কাকুতি মিনতি বেড়ে যাচ্ছিল। শেষে বাবা ওদের আনা মার মডেলিং করবার প্রপোজাল এ রাজি হলো।

আমার মা বাবার ডিসিশনে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, ” এটা তুমি কি বলছো? আমি আর মডেলিং অসম্ভব।” বাবা বললো, ” দেখো সুপ্রিয়া ওনারা আমাদের প্রতিবেশী। বিপদে পরে সাহায্য চাইছেন। আমাদের পাশে দাড়ানো উচিত। তুমি যদি পারো তাহলে ওদের অবশ্যই এই কাজ টা করে সাহায্য কর।” মা ও কনভিন্স হলো একবার চেষ্টা করতে। রুচিকা আন্টিরা আমাদের পরের দিন ই সকাল ৯ টা নাগাদ ওদের ফ্ল্যাটে ইনভাইট করলেন। ছবি গুলো জমা দেওয়ার ডেডলাইন সামনে থাকায় ওরা আর সময় নষ্ট করলো না। সেদিন বসেই ঠিক হলো সকাল নটার মধ্যে ওদের ফ্ল্যাটে গিয়ে ফোটো শুট এর কাজ টা সেরে আমরা রুচিকা আণ্টি দের সাথে একেবারে লাঞ্চ করে বাড়ি ফিরবো। কথা মত আমরা রেডী হয়ে নেক্ট দিন সকাল ৯ টার মধ্যে ব্রেক ফাস্ট সেরে রুচিকা আণ্টি দের ফ্ল্যাটে এসে উঠলাম। সেই ফ্ল্যাটে আমরা ছাড়াও আরো ৫ জন উপস্থিত ছিল।

তারা ছিল আংকেল রুচিকা আণ্টি , একজন মেক আপ আর্টিস, একজন হেঁয়ার ড্রেসার, আর একজন লাইট মেন। আমরা ওদের ফ্ল্যাটে আসতেই রুচিকা সিনহা মা কে নিয়ে একটা আলাদা রুমে নিয়ে গেল। সেখা নে , মেক আপ আর্টিস্ট, হেঁয়ার ড্রেসার আর আণ্টি এই তিনজনে মিলে একঘন্টা ধরে মা কে ঐ ফোটো শুটের জন্য রেডী করলো। মার দুটো ডিফারেন্ট লুকে ফোটো তোলা হবে স্থির হয়েছিল। সবার আগে মা কে একটা পেপারে সাইন করালো, বাবা যখন জিজ্ঞেস করলো এটা আবার কেনো। তখন ওরা বলেছিল, এটা জাস্ট একটা ফর্মালিটি, মা যে সেচ্ছায় এই কাজ টা করছে, আর এই ফটো গুলো র কপিরাইট কেবল মাত্র ওদের কোম্পানির সেটা বুঝানোর জন্য কাজ শুরুর আগে এতে একটা সাইন করতে হবে। মা বাবা ওদের কথা বিশ্বাস করে ভালো করে কি লেখা আছে না দেখেই সাইন করে দিল। লাল পাড়ের সাদা শাড়ী ডিজাইন করা লাল সিল্কের হাফ স্লিভ ব্লাউজ তার সঙ্গে মানানসই হালকা গয়না পড়া লুকে ছবি তোলা স্টার্ট হলো। ঐ লুক টায় মা কে বেশ সুন্দর আর পবিত্র লাগছিলো। প্রথম প্রথম মার ভীষন অস্বস্তি হলো। তবুও হাসি মুখে আংকেল এর কথা মত একটার পর একটা পোজ দিয়ে যাচ্ছিল। প্রথমবার মডেলিং ফোটো শুট করলেও আমার ধারণায় মা বেশ ভালো কাজ করছিল।

ফটো তুলতে তুলতে মায়ের প্রাথমিক জড় তা কাটতেই আংকেল মা কে দিয়ে সেক্সী পোজ দেওয়ার নির্দেশ দিতে শুরু করলো। কুড়ি মিনিট ছবি তোলার পর আংকেল ফটোশুটের এঙ্গেল পরিবর্তন করলো। এতক্ষন মার দাড়ানো অবস্থায় ফোটো তোলা হচ্ছিলো। এইবার ফ্রেমের মাঝে একটা সুদৃশ্র কাঠের সোফা নিয়ে আসা হলো। ঐ সোফার উপর মা কে অর্ধেক বসানো অর্ধেক শোওয়া অবস্থায় সেট করে ফের ফোটো শুট আরম্ভ হলো। মার চুল হাওয়ায় উড়ছে এটা দেখানোর জন্য আংকেল একটা স্ট্যান্ড ফ্যান চালিয়ে দিলেন। ফ্যান অন করার পর দেখা গেলো, এটে শুধু মার চুল উড়ছে তাই না তার সাথে সাথে শাড়ির আঁচল ও বুকের উপর উড়ে সরে যাচ্ছে। আর মার ব্লাউজ টা তার বুকের উন্নত ভিভাজীকা সমেত ক্যামেরার লেন্সে র সামনে উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে। ব্যাপার টা দেখে মা তো অস্বস্তি টে পড়েছিল সাথে আমার বাবাও লজ্জায় আর অপমানে মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিয়েছিল। রু চিকা আণ্টি দের অবশ্য এই সবে কোনো হোল দোল ছিল না। ১০ মিনিট এই ভাবে চলবার পর আমার মা প্রথমবার ফোটো শুট চলা কালীন অবজেকশন করলো।

আংকেল সেটা ম্যানেজ করে ফোটো শুট চালু রাখলো। এইভাবে প্রথম খেপ এ একঘন্টা শুট করার পর আংকেল একটা ব্রেক নিলেন। ব্রেক চলাকালীন মা কে আবারো পাশের ঘরে গিয়ে চেঞ্জ করে আসতে হলো। এইবার অন্য লুকে অন্য ড্রেস পরা অবস্থায় ফোটো নেওয়া হবে এইরকম প্ল্যান ছিল। পরবর্তী বারের ড্রেস কোড ছিল একটা ব্রাইডাল লুকের শাড়ি ম্যাচিং স্লিভলেস ব্লাউজ। ওটা পড়ার পর মাকে নব বধূদের মতন সুন্দর লাগছিল। সোফার একপাশে একটা বালিশ নিয়ে আসা হলো। তাতে এক হাত সাপোর্টে রেখে প্রথমে বসে তারপর আধ শোওয়া অবস্থায় পোজ দিয়ে মার ফোটো নেওয়া শুরু হলো। আঙ্কল মায়ের বুক এর স্তন আর ভিভাজীকা স্পষ্ট ফুটে তুলবার জন্য কি একটা জেল স্প্রে করে নেওয়ালেন। এটে বুকের মেক আপ আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠলো।

কুড়ি মিনিট ব্রেক এর পর যখন আবার ক্যামেরা অন হলো প্রথমে ফ্রন্ট সাইড এ ফোটো তুলবার পর, আংকেল মা কে শাড়ি টা সামান্য সরিয়ে পিঠ ক্যামেরার লেন্সের সামনের দিকে পোজ দিতে বললো। মা অবজেকশন জানালো, এভাবে পোজ দিতে অসুবিধা ছিল। শাড়ির আঁচল তাও অনেক টা ছোট ছিল, বুক ঢাকতে গেলে কাধ বেরিয়ে আসছিল। ব্লাউজ টা র সেপ এর দিকে সবার চোখ গেলে মার অবজেকশন এর কারণ পরিষ্কার হলো। ব্লাউজ টা র পিছন পিঠের অংশ টা মাত্র এক ইঞ্চির ও কম এক ফালি একটা সরু কাপড় দিয়ে কভার ছিল। যেটা থাকা না থাকা দুই ই সমান ছিল। মা পেশাদার মডেল ছিল না । সবার সামনে নিজের পিঠ উন্মুক্ত দেখাতে ইতস্তত বোধ করছিলো। তার সংস্কার মূল্যবোধ তাকে এটা করতে বাধা দিচ্ছিল। আঙ্কল ছবি তুল বার জন্য একেবারে অনড় ছিলেন। মার মুখ লজ্জায় আর অসংকোচে লাল হয়ে গেছে দেখে বাবা আর থাকতে না পেরে আংকেল কে বলল প্লিজ মিস্টার সিনহা সুপ্রিয়া এসব ভাবে ছবি তুলতে অভ্যস্ত নয়। এইবার ওকে ছেড়ে দিন, অনেক ক্ষন ধরে ও আপনার কথা শুনে কাজ করেছে।”

আংকেল স্মার্টলি সাবজেক্ট টি সামলালো, সে বাবা কে বললো, ” আপনি একদম ভাববেন না মিস্টার মালাকার, প্রথম প্রথম বিগিনার লেভেলে এসব প্রবলেম হয়, কাজ টা পারফেক্ট না হলে, স্পন্সর কোম্পানি রা এত পরিশ্রমের কোনো দাম দেবে না। বৌদি কে তো এসব বিষয়ে মানিয়ে নিতে হবে। আপনি ভাববেন না। আর দশ মিনিট করেই ছেড়ে দেবো। ফোটো শুট আবারো শুরু হলো, কিন্তু মা কিছুতেই আমাদের সকলের সামনে ঐ ওপেন back পোজ দিতে পারলেন না। শেষে আংকেল আমার বাবা কে বললেন, প্লিজ দাদা কিছু মাইন্ড করবেন না। আপনি একটু বাবু কে নিয়ে পাশের রুমে যাবেন। রুচিকা তুমি সবাই কে নিয়ে একটু পাশের রুমে যাও, শুধু আমি আর লাইট মান রতন দা এখানে থাকবো। একচুয়ালী আপনারা সবাই আছেন বলে সুপ্রিয়া বৌদি সহজ হতে পারছে না। আপনারা একটু আমাদের স্পেস ছেড়ে দিলে আমরা তাড়াতাড়ি ফটোশুট টা শেষ করে নেবো। বাবা শান্তিপ্রিয় মানুষ হাওয়ায় অশান্তি এড়াতে আংকেল এর এই প্রস্তাবে না করলো না । আর মাও রূচিকা আণ্টি দের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হবার ভয়ে মুখ বুজে আংকেল এর সাথে কাজ টা শেষ করবার দিকে মনোযোগ দিল। আমাদের সবাই পাশের ঘরে আসার পর, আংকেল খুব দক্ষতার সঙ্গে মায়ের কাছ থেকে একটার পর একটা পারফেক্ট শট তার ক্যামেরার সাহায্যে তুলে নিলেন। আঙ্কল বলেছিল দশ মিনিট লাগবে, আসলে লেগে গেলো ৩০ মিনিটের ও বেশি। শুট কমপ্লিট হওয়ার পর আংকেল এর ডাক শুনে আমরা যখন ফটোশুটের জায়গায় এলাম। মা উত্তেজনায় আর পরিশ্রমে পুরো ঘেমে গিয়েছে। মার চোখ মুখ দেখে আমি আন্দাজ করতে পেরেছিলাম আংকেল এর কাজ টা মার মোটেই সুখকর হয় নি। মডেলিং কাজের অভ্যাস না থাকায় প্রতি মুহূর্তে তাকে নিজের মূল্য বোধ আর সংস্কার এর সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে।
(চলবে…)