বাবা মন দিয়ে নিশা আন্টির কথা শুনলো, মায়ের পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কথা শুনতে শুনতে বাবা মার দিকে নজর রাখছিল। মা বাবার চোখের দিকে তাকাতে পারছিল না। কোন এক অজানা কারণে অপরাধ বোধে ভুগছিল। নিশা আন্টির মা আর আমাদের ফিউচার সম্পর্কে অনেক ভালো ভালো কথা বললেন, নিশা দেশাইয়ের কথা শেষ হতেই বাবা চুপ করে থেকে বেশ খানিক ক্ষন সময় ভেবে মা কে সরাসরি প্রশ্ন টা করেই ফেললো, ” সুপ্রিয়া আমাকে তুমি সত্যি করে বলো, এই এত টাকা সব তোমার অ্যাক্টিং মডেলিং করে সোজাপথে রোজগার করা নাকি এর জন্য তোমাকে শর্টকাট অবলম্বন করে কিছু অন্ধকার কাজের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করতে হচ্ছে কিম্বা হবে? আমি কখনোই সমর্থন করবো না তুমি কোনো অসৎ মানুষ দের পাল্লায় পরে অসাধু উপায়ে অতিরিক্ত কালো টাকার মালকিন হয়ে তাড়াতাড়ি উপরে ওঠো। জানি তোমাকে এখন ব্যাবসায়িক উপদেশ দেওয়ার লোকের অভাব নেই। তবুও আমার কথা গুলো একটু ভেবে দেখো সুপ্রিয়া। তোমাকে এভাবে টাকা রোজগার করতে দেখলে আমার কষ্ট হবে। ”
মা চুপ করে মাথা নিচু করে টেবিলের উপর তাকিয়ে রইলো। নিশা আণ্টি বললো দেখুন মিস্টার মালাকার বড়ো কিছু এচিভ করতে গেলে ছোট খাটো অনেক সেন্টিমেন্ট আর বিশ্বাস কে স্যাক্রিফাইস করতে হবে। এটাই জগতের নিয়ম একবার টপ এ পৌঁছে গেলে কেউ ভাববে না মোহিনী ম্যাম কি ভাবে ওখানে পৌঁছেছে। আমাদের হাতে সময় খুব অল্প। কম্পিটিশন মার্কেট, তাই সুযোগ পেলে তার সৎবাবহার করে এগিয়ে যাওয়াই উচিত পন্থা। আপনি অযথা চিন্তা করছেন।
আমি যথা সম্ভব ম্যাডামের পরিছন্ন সতী সাবিত্রী ওলা ক্লিন ইমেজ বজায় রাখার চেষ্টা করবো। অসৎ উপায় অবলম্বন করলেও তার জন্য সঠিক আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবে। কত খরচ করবেন করুন না। টাকা উড়িয়ে শেষ করতে পারবেন না মোহিনী ম্যাম এত রোজগার করবে।” বাবা এরপর আর কোনো কথা বলতে পারলো না। শুধু শুনে গেলো, মা ও চুপ চাপ হয়ে গেছিলো। শেষে বাবা মা কে তারমত করে লাইফ টা কাটাতে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দিল। বাবার থেকে মৌখিক সমর্থন পেয়ে মার মুখেও হাসি ফুটলো।
আমাদের সঙ্গে বসে এক দেড় ঘণ্টা কাটানোর পর সবে আমরা আগের মত সহজ স্বাভাবিক হচ্ছি। মায়ের মুখে তার মুম্বাই এর কাজের জগতের নানা ইন্টারেস্টিং গল্পঃ শুনছিলাম এমন সময় পাশের রুম থেকে মার ডাক পড়লো। মা কে জরুরি কাজের জন্য অনিচ্ছা স্বত্বেও উঠে আবার পাশের রুমে ঐ হ্যান্ডসম সেলেব অ্যাক্টর/ প্রোডিউসার এর কাছে চলে যেতে হলো। নিশা আণ্টি আমাদের তারপর বুঝিয়ে দিল আমাদের আজকের মায়ের সঙ্গে মিটিং এর সময় শেষ। আবার মা ফ্রী হলে নিশা আণ্টি আমাদের কল করে ডেকে নেবে।
পরের দিন আবার আমরা নিশা আন্টির কাছে কল পেয়ে মার সঙ্গে দেখা করতে ঐ হোটেল রুমে এলাম। সেদিন ভালো রকম গল্পঃ গুজব হলো। আমরা একসাথে বসে মার সঙ্গে লাঞ্চ করেছিলাম। তারপর মার থেকে বিদায় নিয়ে ঐ ফাইভ স্টার হোটেল রুম থেকে বেরিয়ে আসবার সময়, মা কে আরো একবার বাড়ি ফিরবার জন্য রিকোয়েস্ট করলো। কয়েক ঘণ্টা সময় বার করে মা যেনো একটিবারের জন্য বাড়ি আসে।
মা বললো, ” আমি বুঝতে পারছি তোমাদের কত টা খারাপ লাগছে। আই অ্যাম ভেরি ভেরি সরি …. তোমাদের ও এখন বুঝতে হবে আমার লাইফ টা এখন আর শুধু মাত্র আমার কন্ট্রোলে নেই। আমার স্পন্সর রা প্রোডাকশন হাউজ আমাকে এমনি এমনি এত টাকা পেমেন্ট করছে না। বিনিময়ে রীতিমত কাজ টা আদায় করে নিচ্ছে। আর এই কাজের দিন রাত স্পেসিফিক কোনো টাইম নেই। একটা অ্যাড কমার্শিয়াল এর শুটিং আছে তার রিহার্সাল এ আমাকে এখন ব্যস্ত থাকতে হবে।”
বাবা বললো, ” রাত জাগার সাইন তোমার চোখে মুখে ভালো রকম ফুটে উঠেছে সুপ্রিয়া। এই ভাবে দিন রাত এক করে ছুটলে, পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নিলে অসুস্থ হয়ে পড়বে।”
মা: “কি করবো বলো? বুঝতেই পারছো কি ব্যাস্ত শিডিউল নিয়ে চলতে হচ্ছে। তুমি চিন্তা কর না। অ্যাকট্রেস মডেল দের কেরিয়ার এমনিতেই শর্ট হয়। তার মধ্যে আমাকে ভালো রকম গুছিয়ে নিতে হবে। সময়ের বড্ড দাম। এখন থেকে আমাকে ভবিষ্যত এর কথা ভাবতে হচ্ছে। চিরকাল তো বয়স থাকবে না, কাজেই পরিশ্রম ছাড়া বিকল্প নেই। ”
বাবা: কয়েক ঘন্টার জন্য ম্যানেজ করেও আসা যায় না। কতদিন তুমি বাড়ির রান্না খাও নি বলতো?
মা: আমার ও ভীষণ ইচ্ছে করছে এখন তোমাদের সঙ্গে যেতে কিন্তু আমি নিরূপায়। পর পর সব আসাইনমেন্ট আছে। হোটেল ছেড়ে আমার নড়বার জো নেই। তাও দেখছি কোনো ফাঁক আছে কিনা নিশা টেল মি কোনো টাইম ফ্রি আছে।
নিশা আণ্টি মাথা নেড়ে বললো।
নো ম্যাডাম টাইম বার করা ইম্পসিবল, আরো দুটো কোম্পানির রিপ্রেজেন্ট এর সঙ্গে মিটিং ফিক্সড আছে। অরবিন্দ স্যার এর সঙ্গে কমের্সিয়াল অ্যাড এর রিহার্সাল , অ্যাড শুটের জন্য ড্রেস ট্রায়াল আছে, অ্যাড এর প্রমো শুত আছে, একটা tabloyed ম্যাগাজিনের জন্য স্পেশাল ফিচার ফটোশুট আছে, একটা কর্পোরেট পার্টি ও আছে। পুরো প্যাকেড শিডিউল। মা করুন মুখে আমাদের দিকে অসহায় ভাবে তাকালো। তারপর আমাদের হাগ করে বিদায় দিল।
আমাকে হাগ করার সময় মায়ের বুকের উপরে একটা টাটকা কাটা দাগ সম্ভবত নখের আঁচড় এর ফলে তৈরি সেটা আমার নজরে পড়েছিল। যদিও ব্যাপার টা আমি আর আমার বাবা সেভাবে গুরুত্ব দিলাম না। আবার পরের দিন আমরা সেম টাইম এ এসে মার সঙ্গে দেখা করে যাবো এই কথা বলে আমরা সেদিনের মত হোটেল থেকে বেরিয়ে এলাম। আমি দেখলাম বাবা সেদিন মার সঙ্গে দেখা করে ফিরে আসার পর ভীষণ রকম চুপ চাপ হয়ে গেলো। আমরা ২ য় দিন ফাইভ স্টার হোটেল থেকে মার সঙ্গে দেখা করে ফিরে আসার পরের দিন সকালে একটা ঘটনা ঘটে।
আমাদের প্রতিবেশী রুচিকা আণ্টি মার সঙ্গে গিয়ে দেখা করে। তাদের মধ্যে কি কথা হলো আমি জানতে পারি নি। পরের দিন খবর পেলাম যে মা রুচিকা আণ্টি কে তার সঙ্গে মুম্বাই নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে রাজি হয়ে গেছে। রুচিকা আণ্টি মার সঙ্গে এক অ্যাপার্টমেন্টে থাকবে, নিশা আণ্টি র মত মার কাজে সাহায্য করবে ম্যানেজার হিসাবে নামের।
সেই দিন ছিল মার শহরে থাকবার শেষ দিন, মার ঐ টেলিভিশন সেলেব পার্টনার বন্ধু অরবিন্দ একটা প্রাইভেট পার্টি আরেঞ্জ করেছিল হোটেলেই, সেখানে আমরা বাপ ছেলে ইনভাইটতেড হই। যদিও আমারও ইনভাইটেশন ছিল, কিন্তু বাবা হোটেলে পার্টি অ্যাটেন্ড করতে একাই গেলো। আমাকে নিয়ে গেলে মায়ের আসল নতুন চেহারা টা ভালো করে দেখতে পারতাম।
ঐ দিন সন্ধ্যেবেলা বাবা একাই মার হনোরে রাখা পার্টি টায় মার ডাকে গেছিলো। ওটা একটা স্পেশাল প্রাইভেট পার্টি ছিল। ঐ ফাইভ স্টার হোটেল সুইট তার ভেতর সুন্দর ভাবে এরেনজ করা হয়েছিল। অরবিন্দ আর আমার মা খুব বেশি কাউকে ইনভাইট করে নি। বাবা কে নিয়ে ৬-৭ জন উপস্থিত ছিল।. যাদের মধ্যে অন্যতম ছিল মিস্টার সুরেশ দাদলানি। উনি ছিলেন মার আপকামিং শর্ট ফিল্ম ওয়েব সিরিজ এর পরিচালক। যদিও মিস্টার অরবিন্দ বাবার আসল পরিচয় জানতো। তবুও তাকে মিস্টার দাদলানির কাছে মার হাসব্যান্ড বলে পরিচয় পর্যন্ত করালো না। উল্টে সিক্রেট টার্ম প্রটোকল মেনে বাবা কে পুরোনো বন্ধু হিসাবে আলাপ করিয়ে দেওয়া হলো।
বাবা পরে জেনেছিল, মা বিবাহিত জানলে এই কাজ টা সে পাবে না অন্য একজন পাবে। আমার বাবা সহজ সরল স্বভাবের মানুষ, তার মনে ওতো প্যাচ ছিল না। মা ও যখন অম্লান বদনে তাকে মিস্টার দাদলানির সামনে তাকে স্বামী হিসাবে পাত্তা দিচ্ছিল না, বরং চ এক প্রকার না চিনতে পারার অ্যাক্টিং করছিল সেটা বাবা সহজ ভাবে নিতে পারলো না।তার উপর পেশা গত কারণেই মা কে বাবার সামনেই সুরেশ দাদলানি র সঙ্গে একটু আলাদা ভাবে হেসে কথা বলা, তার গায়ে গা লাগিয়ে খাতির করা, ওয়েশ রুমে গিয়ে দাদলানির সামনে কাপড়ের স্ট্রিপ টা একটু লুজ করে বুকের ক্লিভেজ এক্সপোজ করা দেখতে দেখতে বাবা নিজের মনের হতাশা ঢাকতে প্রথমবার মদ খেতে শুরু করে।
নিশা আণ্টি আর অরবিন্দ বাবা কে মদ খেতে উৎসাহিত করে। মাতাল হয়ে বাবা একটু সিন ক্রিয়েট করে ফেলে, গান গেয়ে আসর মাতিয়ে দেয়। আর অন্যদিকে মা বাবা কে ছেড়ে শহরে কাটানো শেষ সন্ধ্যা টুকুও মিস্টার অরবিন্দ অ্যান্ড তার বন্ধু পরিচালক সুরেশ দাদলানীর সঙ্গে পার্টি করতে ব্যাস্ত হয়ে যায়। অন্যদিকে নিশা আণ্টি বাবার নজর রাখতে শুরু করে। মা বাবার চোখের সামনে ওদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছিল, যেটা বাবার মনে যন্ত্রণার আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছিল।
নিশা আণ্টি বাবা কে পার্টিতে মার দিক থেকে সরিয়ে আনে, শেষে বাবা ডিনার না করেই মাতাল অবস্থায় বাড়ি ফিরেছিল। মার পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট নিশা আণ্টি একটু রাত করে বাবা কে আমাদের বাড়ি টে ছাড়তে আসে। বাইরে গাড়ি আর দরজা খোলার শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভেঙে গেছিল। আমি বাইরে এসে বাবার অবস্থা দেখে অবাক হয়ে যাই। যে বাবা কে কোনো দিন মদ খাওয়া তো দূর অস্ত মদের নাম পর্যন্ত করতে দেখি নি, তাকে মদের নেশায় সোজা করে হাটতে পর্যন্ত না পারতে দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল। কতটা কষ্ট ভুলতে বাবা সেদিন মাতাল হয়েছিল সেটা আজ আমি ভালো করে বুঝতে পারি।
বাবা সেদিনই টের পেয়ে গেছিল, মা আমাদের থেকে হারিয়ে গেছে। তার জীবনের লক্ষ্য আর সঙ্গী সাথী পাল্টে গেছে, যেটা আমাদের সঙ্গে আর মিল খাচ্ছে না। মা আমাদের জীবনের সাথে সেটা মেলানোর চেষ্টা পর্যন্ত করছে না। নিশা আণ্টি সেই রাতে বাবাকে বেডরুম অবধি ছাড়তে এসেছিল। তার পর আমার মায়ের ছেড়ে যাওয়া রুমে বাবার সাথে এক বিছানায় শুলো।
বাবার তখন ভালো মন্দ বোঝার কোন হ্যূষ ছিল না। নিশা আন্টির জামা কাপড় খুলে দরজা টা কোনরকমে ভেজিয়ে বাকি রাত টুকু নিশা আণ্টি কে বিছানায় আদর করতে লাগলো। নিশা আন্টিও ভালো করে মদ খেয়েই ছিল, নেশার ফলে নিশা আন্টিও বাবা কে সেইরাতে পুরো পুরি উজাড় করে দিয়েছিল। তাকে মাকে হারানোর দুঃখ কিছুটা হলেও ভুলতে সাহায্য করেছিল। কেও সেদিন রাতে।
সেই রাতে আমি বাবা কে নিজের হাতে নিশা আন্টি র ব্রার হুক খুলতে দেখেছিলাম। বাবা কেও সেদিন মার মতন বড্ড অচেনা লাগছিল। সেই রাত টা নিশা আণ্টি বাবার সঙ্গে কাটিয়ে পর দিন সকালেই মার পার্টির হাং ওভার কাটার আগেই হোটেলে ফিরে গেছিলো। ঐ দিন ই সন্ধ্যেবেলা মা মুম্বই ফিরে গেছিল। যাওয়ার আগে একবার কল করেছিল, কিন্তু অরবিন্দ আর সুরেশ দাদলানীর তাড়া থাকায় আমাদের সঙ্গে আর দেখা করতে পারলো না।
নিশা আন্টির কাছে আমরা খবর পেয়েছিলাম মুম্বই ফেরার দু দিন পর মার ঐ নতুন ওয়েব সিরিজের প্রথম প্রমোশনাল পার্টি ছিল। যেখানে মার নাম প্রোডাকশন হাউজ এর তরফে এনৌনস করা হয়। সেই সাথে নিশা আণ্টি এটাও বাবা কে ইঙ্গিত দিয়েছিল, যে এই কাজ টা মা সোজা পথে পায় নি কিসের বিনিময়ে পেয়েচে সেটা আন্দাজ করে বাবার মন আরো যন্ত্রণায় ভোরে যায় আর তারপর থেকেই মা কে জোর করে মুম্বই পাঠানোর জন্য আফসোস করতে থাকে।
কদিন বাদে খবরের কাগজের শনিবারের সিনেমার পাতায় মার ঐ নতুন প্রজেক্টের কিছু সেন্সুয়াল ফটো ছাপা হয়। ওতে মা একেবারে অন্য অবতারে মডার্ন লুকে আত্মপ্রকাশ করে। মা যে একেবারে পাল্টে গেছে এটাই ছিল সবথেকে ভালো উধাহরন। মা আমাদের সঙ্গে থাকলে ঐ ওয়েব সিরিজের প্রমোশনের জন্য ওরকম সাহসী ফটোশুট করার কথা কখনও কল্পনা করতে পারতো না। একটা মদ প্রস্তুতকারক সংস্থার বিজ্ঞাপনেও মা অংশ নিয়েছিল। ঐ কমার্শিয়াল ফটো পাবলিশ হওয়ার পর থেকেই বাবার চরিত্রেও কিছু পরিবর্তন দেখতে পারলাম।
বাবা কথা বার্তা বলা কমিয়ে দিল। আর নিজের হতাশা ঢাকতে নিয়মিত মদ খাওয়া, দেরি করে বাড়ি ফেরা, আর কিছু বাজারি বেশ্যা দের সঙ্গে সময় কাটানো আর তাদের পিছনে পয়সা ওরানো শুরু করলো। বাবার চরিত্র টে এই বিরাট পরিবর্তন দেখে আমি শঙ্কিত হয়ে পরলাম। মার সঙ্গে নিজে নিজে যোগাযোগ করবার চেষ্টা করলাম কিন্তু মা এতটাই তার কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিল তার নাগাল পেলাম না। তিন চার বার চেষ্টা করার পর, মার নম্বরে লাইন লাগলো, কিন্তু মা না ধরে অরবিন্দ আঙ্কেল ফোন ধরলো। আমি একটু রাতের দিকেই কল করেছিলাম। ওতো রাতে মায়ের অ্যাপার্টমেন্টে অরবিন্দ আঙ্কেল কি করছিল বুঝতে পারছিলাম না। হ্যালো মা তোমার সাথে কিছু কথা বলার আছে।
অরবিন্দ আঙ্কেল ডাইরেক্ট মুখের উপর বলে দিল,” তুমার মা অভি মেরে সাথ বিজি আছে। বাদ মে ফোন করনা।” ফোন এর লাইন কেটে দেওয়ার আগে আমি ফোনের মধ্যে স্পষ্ট মায়ের গলা পেলাম। মা একটু দ্রুত শ্বাস নিতে নিতে বলছিল, কৌন কল কিয়া হে অরবিন্দ? মুঝে দো…” অরবিন্দ আঙ্কল স্পষ্ট মিথ্যে বলে দিল, কই ইম্পর্ট্যান্ট কল নেহি।”
মা করুন সুরে বলল,” তাজ্জব কী বাত হে বহুতদিন ঘর সে কই কল নেহি অায়া। মুঝে ইটনা জলদি ও লোগ ভুল গয়া” অরবিন্দ আঙ্কল বললেন, আব চারো ওসব বাতে ক্যা প্রমিজ কিয়া থা ইয়া দ হে। মুঝে অভি ও চিজ চাইহে। মা বললো, ওহ অরবিন্দ কাল ই তহ কিয়া না, ফিরসে আজ, ছাড়ো মুঝে। অরবিন্দ আঙ্কল একটা হাসি হাসলো… তারপর ফোন টা কেটে দিল। এরপর যতবারই আমি কল করলাম এইদার লাইন ব্যাস্ত অর সুইচ অফ বলতো। শেষে আমি মা কে ফোন করাই ছেড়ে দিলাম। মা কে বাবা খুব ভালো বাসত। তাকে এই ভাবে হারিয়ে ফেলার পর, সে চাকরি ছেড়ে, সুদে টাকা খাটানোর ব্যাবসা আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বহেমিয়ান জীবন যাপন শুরু করেছিল। মায়ের দৌলতেই আমাদের সে সময় টাকার কোনো অভাব ছিল না। বাবা আমার দেখা শোনা র জন্য ভালো লোক অ্যাপয়েন্ট করেছিলেন।
প্রসঙ্গত আগেই বলেছি, মা তৃতীয় বার আমাদের শহরে এসে কাটানোর পর সাথে করে রুচিকা আণ্টি কেও মুম্বাই নিয়ে গেছিল। পরে জেনেছিলাম, সিনহা আঙ্কেল এর সঙ্গে তার নাকি ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছিলো। তাই সে সময় মা কে আকরে ধরে বাঁচা ছাড়া রুচিকা আন্টির কাছে অন্য কোন উপায় খোলা ছিল না। মা নিজের খরচায় নিজের কাছে রুচিকা আণ্টি কে রেখে দেওয়ার ডিসিশন নিয়েছিল।
মা হয়তো ভেবেছিল, রুচিকা আণ্টি থাকলে মার অ্যাপার্টমেন্টে নিঃসঙ্গতা দূর হবে। তার সাথে গল্পঃ করে কোয়ালিটি টাইম কাটিয়ে তার ব্যস্ত মডেল অ্যাক্ট্রেস জীবনের স্ট্রেস রিলিফ হবে, কিন্তু মা ভুল ছিল। এটে মার লাভ তো হলই না উল্টে রুচিকা আণ্টি মুম্বাই আসার পর মা আর দ্রুত নৈতিক অধঃপতনের দিকে এগিয়ে গেল। প্রথম দিকে কলে মা অনেক কথা সেয়ার করলেও পরের দিকে তার মুম্বই এর সেলেব জীবনের বাজে অন্ধকার দিক গুলো সম্পূর্ণ লুকিয়ে যায়।
প্রোডাকশন হাউস এর সঙ্গে প্রায় ৬ মাসের মেয়াদ শেষ হবার পর মা প্রথমে তার কাজের বাজে অভিজ্ঞতা র নিরিখে কন্ট্রাক্ট একটেনশন করতে চায় নি। বরং চ রিলিস নিয়ে তার পুরনো জীবনে আমাদের কাছে ফিরতে চেয়েছিল, কিন্তু মেগা ধারাবাহিকের দর্শক দের চাহিদায় আর স্পন্সর দের দাবির ভিত্তি টে মা কে রিলিজ দিল না। উল্টে তার উপর এক্সট্রা প্রেসার ক্রিয়েত করে তড়িঘড়ি তৃতীয় বার আমাদের সঙ্গে দেখা করতে শহরে আসবার আগেই, আর দুই বছরের জন্য চুক্তি নবিকরণ করিয়ে নেয়।
এই চুক্তির এক্সটেনশন এর ক্ষেত্রে মিস্টার অরবিন্দ মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। ওরা ইচ্ছে করে মা কে এক গাদা অসাইনমেন্ট দিয়ে শহরে পাঠিয়েছিল যাতে মা বেশি সময় আমাদের সঙ্গে কাটাতে না পারে। অরবিন্দ ভেতরে ভেতরে আমাদের কে মার লাইফ থেকে আইনত উপায়ে ছেটে ফেলবার প্রয়াস শুরু করেছিল। নতুন চুক্তি টে ইচ্ছে করে এমন ক্লস রেখেছিল, মা প্রকাশ্যে আমাদের কথা উল্লেখ পর্যন্ত করতে পারবে না। এইভাবে মা কে যেন তেন প্ৰকারেন মুম্বাই শহরে স্থায়ী ভাবে রেখে দেওয়ার প্ল্যান কার্যকর করা হলো।
মা কে মুম্বাই ফিরে গিয়ে, ঐ নতুন ওয়েব সিরিজে দুই তিনটে সেনসেশনাল অ্যাডাল্ট বেড সিন এ অভিনয় করতে হয়। মা প্রথমে এটা করতে চায় নি, কিন্তু টার্ম অ্যান্ড কন্ট্রাক্ট এর মধ্যে ফেসে ঐ সিন গুলো করতে বাধ্য হয়। রুচিকা আণ্টি তাকে একটা পার্টি টে মা কে মদ্যপ অবস্থায় পেয়ে ভালো করে বোঝায় যে, মা এই মুহূর্তে যে মোড়ে দাড়িয়ে আছে, এখন সাহসী দৃশ্যে অভিনয় শুরু করলে মার রোজগার টা ডবল হবে আর সিরিজ টিও জনপ্রিয় হবে।
এই কন্টেন্ট এর পর মা অনেক কাজ পাবে ভবিষ্যতে, এই সিরিজ তার জোরেই। তার একটা ছিল, যত কাপড় খুলবে তত তাড়াতাড়ি উচু টে উঠবে, আর তত মার পায়ের তলার মাটি শক্ত হবে এই সমীকরণ টা মা রুচিকা আণ্টি আসার পর নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে শুরু করে, তার বস্ত্যতা এর ফলে দ্বিগুণ বেড়ে যায়। মা আস্তে আস্তে জীবনের উপর যত টুকু নিয়ন্ত্রণ ছিল সেটাও হারিয়ে ফেলে।
মার অভিনীত টিভি সিরিজ টা একটা জনপ্রিয় সিরিজে পরিণত হয়েছিল। প্রথম ক্ষেত্রে ৬ মাসে শেষ করার কথা থাকলেও ওটা পাবলিক ডিমান্ড এ আরো এক বছর চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই সময়ের মধ্যেই মা তাদের মুম্বাই এর নতুন বন্ধু দের অনুরোধে ৩ টে শর্ট ফিল্ম এ ব্যাক টু ব্যাক কাজ করেছিল।। তার মধ্যে ২ তো ফিল্ম রিলিজ হবার পর মার অভিনয় প্রশংসিত হলো।
যদিও ফিল্ম গুলোর সাবজেক্ট ছিল প্রায় একই ধরনের, অনিয়ন্ত্রিত যৌন সম্পর্ক, ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স, রিভেঞ্জ। দুটো ফিল্মে মা কে পরিচালক দের আবদার রাখতে বেড সিনে অভিনয় করতে হয়েছিল। কাজ টা যে মার মতন ভালো মধ্যবিত্ত ঘর থেকে উঠে আসা এক নারির পক্ষে খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল এটা আর আলাদা করে বলে দিতে হয় না। মা ঐ শর্ট ফিল্ম গুলোয় একাধিক বেড সিন আর কিসিং সিন থাকায় প্রথমে বেঁকে বসেছিল।
কিন্তু তার পি এ নিশা দেশাই দায়িত্ত্ব নিয়ে মা কে ঐ ফিল্ম গুলোয় কাজ করতে রাজি করেছিল। অবশ্য ঐ সিন গুলোর জন্য প্রোডিউসার রা মা কে আর্থিক দিক থেকে ভালো ভাবেই কম্পেন্সট করেছিল। দুটো শর্ট ফিল্মে কাজ করে মা মোট ৩০ লাখ টাকা রোজগার করে। স্ক্রিন ঘরোয়া সরল গৃহবধূর ইমেজভেঙে মা বেরিয়ে আসছিল।
মুম্বাই আসার ৭ মাস বাদে কলকাতা টে কিছু দিন ঐ ফাইভ স্টার হোটেলে নিজের পি এ আর কো স্টার পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে কাটিয়ে যাওয়ার পর প্রোডাকশন হাউস আমার মার সঙ্গে আবার কন্ট্রাক্ট রেনিউ করে নেয়। মা এইবার তিন বছরের চুক্তি টে সাইন করে। যার ফলে মার মুম্বাই ছেড়ে নিজের শহরে আমাদের কাছে ফেরার রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
মা এই চুক্তি বাড়াতে নাকি প্রথমে রাজি হচ্ছিল না, কিন্তু নিশা অরবিন্দ সহ আরো প্রভাবশালী বন্ধুদের চাপে পড়ে কার্যত আমাদের কিছু না জানিয়েই ঐ চুক্তি টে সই করে দেয়। মা যেদিন মুম্বাই টে প্রোডাকশন হাউস এর এম ডির বাড়িতে চুক্তি টে সই করে সেই রাতে মা নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ফিরতে পারে না। অরবিন্দ অ্যান্ড কোম্পানি মা কে এম ডির অ্যাপার্টমেন্ট থেকে একটা নাইট ক্লাবে লেট নাইট পার্টি এঞ্জয় করতে নিয়ে যায়। ওখানে পৌঁছে মা আবিষ্কার করে ওটা একটা কোনো সাধারণ পার্টি না। মা ওর বন্ধুদের সাথে জীবনে প্রথমবার একটা rave party উপভোগ করতে চলে এসেছে।