বাবা যখন আমার মা কে আমাকে মাত্র একটা রাতের জন্য একটু দেখে রাখবার কথা বলে ফোন টা রাখলো আমি মায়ের মুখের দিকে লক্ষ্য করে দেখছিলাম। মা সাধারণত বাবার কোনো কথায় বিরক্তি প্রকাশ করতো না। কিন্তু সেবার মার বাবার ফোনটার পর অদ্ভুত রিএকশন দেখলাম। ফোন টা কেটে দিয়ে বললো, ” উনি বন্ধুর সঙ্গে ফুর্তি করবেন আর আমার পার্টি যাওয়া ক্যান্সেল হয়ে গেলো। হাজার টা কৈফিয়ত দিতে হবে, আমার সাফল্যে ঈর্ষাকাতর ব্যাক্তি তো কম নেই, তারা আমার কান ভাঙানি দিলে আমার সাথে ওনার রিলেশন তাই খারাপ হয়ে যাবে…., কোনো মানে হয়, উফফ ভালো লাগছে না। তোর বাবার বন্ধু তাই আগে হলো…”। আমি এর আগে কোনো দিন মা কে এই ভাবে বাবার উপর মেজাজ খারাপ করে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখি নি।
মা বাইরে যাওয়ার জন্য ছট পট করছে দেখে আমি মা কে বললাম তুমি আমার জন্য ভেবো না। বেরিয়ে যাও, কোনো প্রয়োজন পড়লে ফোন তো থাকলো। তুমি যমুনা মাসি বেরিয়ে যাওয়ার পর আমাকে নিচ্ছিন্ত ভাবে বাড়িতে লক করে বেরিয়ে যেতে পারো। এর আগেও আমি এক আধ দিন একা থেকেছি। কিচ্ছু হবে না।” আমি ভেবেছিলাম মা রাজী হবে না। আমার চেয়ে যে ঐ কোন কো প্রোডিউসার এর বার্থ দে উপলক্ষে একটা অভিজাত ক্লাবে রাখা লেট নাইট পার্টি যে তার কাছে ইম্পর্ট্যান্ট হয়ে যাবে সেটা ধারণা করতে পারি নি। মা নির্দ্বিধায় এক অচেনা অজানা ড্রাইভারের ভরসায় রেখে আমাকে রেখে অন্য ফোন করে অন্য গাড়ি ডেকে দিব্যি সাড়ে আটটা নাগাদ পার্টি অ্যাটেন্ড করতে বেরিয়ে গেলো।
আমি রাতে একাই খাবার খেয়ে দেয়ে যথা সময় ঘুমিয়ে পড়লাম। প্রায় রাত দুটো নাগাদ বাড়ির গেটের বাইরে একটা হল্লা আর জোরে গেটের কোয়াপশিল খুলবার আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙে গেলো। ড্রাইভার ভাইয়া কে ডাকলাম কোনো সাড়া পেলাম না। একা একা উঠে দেখতেও সাহস হলো না। আড়াইতে নাগাদ আবার একটা শব্দ পেলাম। এবার চেনা শব্দ, মায়ের গলার আওয়াজ। সে কাউকে ফোন এ বলেছিল, নয়া বালা অফার আচ্ছা হে, পুরানা সে ১০ লাখ জায়দা , ঠিক হে ডিল ফাইনাল কর দিজিয়ে, হুম মুম্বাই আকে সাইনিং মিটা দুঙ্গী।”
মার গলা শুনে আমি দেখি মা একটা ফিনফিনে নাইট ড্রেস পরে ঘুমানোর তোর জোর করছে। মায়ের দুধ গুলো নাইট সুইটের নিচ থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। না চাইলেও চোখ মায়ের বুকের কাছে চলে গেলো। এমনি সময় টাইট ইনার পড়ায় বোঝা যায় না। শেষ ক মাসে দুধের সাইজ বেশ ভালো মতন বেড়ে গেছে বোঝা গেলো। কিভাবে মায়ের ব্রেস্ট এত তাড়াতাড়ি বড়ো হয়ে গেলো, সেটা কিছুতেই আমার মাথায় আসলো না। আমি এসে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কখন ফিরলে, বাইরে কারা যেনো এসেছিল আওয়াজ পেলাম। তুমি তাদের চেনো?
মা বিরক্তির সুরে বললো, আহ রাহুল, তুই আবার এত রাতে জেগে আছিস কেনো? পাঁচ মিনিট হলো ফিরেছি। বড্ড টায়ার্ড।” আমি আবার জিজ্গেস করলাম ” বাইরে ঐ আওয়াজ গুলো কিসের ছিল।”
মা কড়া সুরে জবাব দিল ওরা আমার বন্ধু ছিল, পার্টির পর আমায় ছাড়তে এসেছিল। আমি আরো কিছু জিজ্ঞেস করবো বলে যেই মায়ের বিছানা র পাশে গিয়ে বসেছি। মা সাথে সাথে বিরক্তির সুরে বলল, প্লিস রাহুল আমায় এখন বিরক্ত করিস না। যা এখান থেকে। আমায় একা থাকতে দে। এখন আমি ঘুমের ওষুধ খাবো আর পরে পরে ঘুমাবো। এখন যা অভ্যাস হয়েছে ঘুমের ওষুধ না খেলে ঘুম হয় না বুঝলি। প্লিজ এখন আমাকে ঘুমোতে দে। কাল কথা বলবো।”এই কথা গুলো বলার সময় আমি মায়ের একদম সামনে ছিলাম, তাই মার মুখ থেকে একটা বাজে ঝাঁঝালো গন্ধ পেলাম। পরে জেনেছিলাম ওটা মদের গন্ধ ছিল। সেই রাতের পর আমার মনে বিন্দু মাত্র সংশয় ছিল না আমার মা অ্যাকট্রেস মডেল হয়ে অন্য পরিবেশে অন্য শহরে চলে গিয়ে নিজেকে একেবারে পাল্টে ফেলেছে। পরের দিন সকালে বাবা ফোন করে জানিয়েছিল ওর বন্ধুর বাড়ির এদিক টায় গাড়ির গোলমাল চলছে তাই বাবার ফিরতে ফিরতে রাত হবে।
আমি ফোন টা ধরেছিলাম। মা তখন ঘুমাচ্ছিল। প্রায় বেলা ১১ টা নাগাদ উঠে বিছানায় বসে বেড টি খেয়ে , নিজের ফোন নিয়ে ফের ব্যাস্ত হয়ে পড়ল। সেদিন রান্নার মাসীর শরীর খারাপ হাওয়ায় আসে নি । ১২.৩০ নাগাদ স্নান সেরে একটা শর্টস আর টপস পরে আমার ঘরে এসে বললো, রাহুল একটা কথা ছিল, কাল আমি অনেক রাত করে পার্টি থেকে মদ খেয়ে টলতে টলতে বাড়ি ফিরেছি। এটা বাবাকে বলিস না। তোর বাবা তার আগের রূপ তাকেই ভালোবাসে সে এখন হটাৎ করে আমার আসল বর্তমান রূপ দেখে ভীষণ কষ্ট পাবে। আর একটা কথা আমি মুম্বাই গিয়ে ওখানকার জীবনযাত্রায় এমন ভাবে দ্রুত এডপ্ট করে নিয়েছি। নানা ব্যাবসায়িক ইকুয়েশনে , নতুন সম্পর্কে , টার্মস এন্ড কন্ট্রাক্ট এর মার প্যাঁচে এমন বিশ্রী ভাবে জড়িয়ে পড়েছি, আমার পক্ষে মুম্বাই ছেড়ে তোদের কাছে এসে আগের মতন একসাথে থাকা একেবারে ইম্পসিবল। আমি সব কিছু ছেড়ে বেরোতে চাইলেও আর পারবো না কারণ আমাকে কেন্দ্র করে লাখ লাখ টাকা ইনভেস্ট হয়েছে কাজেই আমাকে ছাড়বে না। আর সত্যি বলছি, আমার তাতে কোনো আক্ষেপ নেই। তোদের জন্য খারাপ লাগে ঠিক ই কিন্তু আমি যা যা পেয়েছি সেটা খুব কম সাধারণ নারীর জীবনে জোটে। তুই জানলে অবাক হবি তোর যে মা একটা সময় এই অ্যাক্টিং মডেলিং এর লাইনে কোনোদিন আসতেই চায় নি, সে এখন চুটিয়ে এই লাইফ স্টাইল টা উপভোগ করছে। এইবার মুম্বাই থেকে আসবার আগে তিনটে শর্ট ফিল্ম সাইন করে এসেছি, সেটা তো এমনি এমনি আসে নি। যেটার মধ্যে একটা ছবি আবার জাতীয় পুরস্কার জয়ী চিত্রপরিচালক এর সাথে। ওটা রিলিজ হবার পর আমার কেরিয়ার গ্রাফ কোথা থেকে কোথায় পৌঁছে যাবে ভাবতে পারিস। তার উপর আমার নতুন মেগা সিরিয়াল তেও লিড ফিমেল রোল করা ফাইনাল হয়ে আছে সেটা তো তোরা জানিস ই। এছাড়া আমি অলরেডী দুটো বড়ো কমার্শিয়াল করেছি। তার একটা তুই টিভিতে স্রম্পচার হতে দেখেছিস। তুই জানলে অবাক হয়ে যাবি যে তোর মার হাতে এরকম আরো পাঁচটা কমার্শিয়াল অ্যাড ফিল্ম আছে। যার শুটিং সব সামনের মাসের মধ্যেই শেষ করতে হবে। আবার কাল রাতে খবর এলো, আরো একটা স্মল বাজেট ফিচার ফিল্ম কনফার্ম হয়েছে। এছাড়া প্রচুর মডেলিং এর কাজ আছেই । সামনে পুরো পাকেড শিডিউল। আমি ব্যাস্ত হয়ে পড়বো। রেগুলার তোদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবো না। কিন্তু যা রোজগার করবো জানবি সব ই তোদের জন্য। তোর বাবা আমার এই ভাবে মুম্বাই এ প্রায় সেটেল করে যাওয়ার খবর জানলে দুঃখ পাবে। তুই অন্তত আমাকে সাপোর্ট করিস।”
বাবা ফিরলে মা বাবাকে ও আস্তে আস্তে সব কিছু জানালো। বাবা বন্ধুর অনুষ্ঠান থেকে ফিরে মা কে দেখে খুব ফ্রেশ আনন্দের মুডে ছিল, মার serious কথা গুলো শুনে গম্ভীর মুখ করে একেবারে চুপ করে গেলো। তারপর এটাও মা খোলাখুলি জানালো এখন মুম্বাই এর সবাই জানে মা অবিবাহিত। তাই সে এত ভালো ভাল কাজ পারছে। যেদিন এটা প্রকাশ পাবে সুপ্রিয়া শুধু বিবাহিত তাই না তার একটা বেশ বড়ো ছেলে আছে। স্পন্সর রা মায়ের উপর ইনভেস্ট করতে ইন্টারেস্ট হারাবে তার কেরিয়ার প্রশ্নের মুখে এসে যাবে। এখন অন্তত বছর দেড়েক মা বাবার বিবাহিত সম্পর্ক টা চেপে যেতেই হবে। এটা করতে প্রথম প্রথম খুব গিলটি ফিল হতো কিন্তু এখন নাকি মা বুঝতে পেরেছে যে কিছু বড় পেতে গেলে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়। এটা দীর্ঘ কাল জুড়ে চলবে না।
দেড় বছর পর, বাবা কে মা পুরনো বন্ধু বানিয়ে লোক দেখানো প্রেস মিট ডেকে আর মুম্বাই দের ফিল্মি লাইনের লোকেদের সামনে বিয়ে করে ঠিক সময়ে বাবা কে আর আমাকে মা তার জীবনের মূল স্রোতে যুক্ত করে নেবে। এই মর্মে ফিল্ম ক্যারিয়ার এক্সপার্ট দের থেকে পরামর্শ পেয়েছে। তার অ্যাসিস্ট্যান্ট তার ম্যানাজার যে হাতে ক জন মুম্বাইতে মায়ের বিবাহিত আর বাচ্চা থাকার খবর জানে তারাও এক পরামর্শ দিয়েছে। মা কে বাবা বরাবর ভালোবেসে সন্মান দিয়ে এসেছে তাই মার সিদ্ধান্ত মুখ বুজে নিল। বাবা তখন মা কে আটকালেও, মার পক্ষে বাবার কথা শোনা সম্ভব হত না। কারণ সে চুক্তি তে সই করে এসেছে। তাই তাকে কাজ করতে মুম্বাই ফিরে যেতেই হতো।
এসে আমাদের সঙ্গে ১৫ দিন কাটিয়ে মা আবার মুম্বাই তার কাজের দুনিয়া তে ফিরে গেলো। এই বার মুম্বাই ফিরে যাওয়ার দিন কয়েক এর মধ্যে মা বাবা কে ফোন করে জানালো সে নতুন একটা বড়ো ফ্ল্যাট বুক করছে। প্রোডাকশনের দেওয়া ফ্ল্যাট টা ভীষণ ছোটো, ওখানে কলিগ দের নতুন বন্ধু দের নিমন্ত্রণ করাই যায় না। ঐ নতুন ফ্ল্যাট টা বিশাল। ওর ভেতর নাকি মোট ৫ টা বেডরুম আছে। ব্যালকনি থেকে দূরে সমুদ্র দেখা যায়। এছাড়া ঐ ফ্ল্যাটের মধ্যে সব আধুনিক ব্যাবস্থা, জিম ফেসিলিটি আছে। তার এক কো স্টার বন্ধুর বদান্যতায় আর সুপারিশে এত ভালো জায়গায় এত অল্প সময়ে নতুন ফ্ল্যাট টা কিনতে পারছে। সেই কো স্টার ব্যাক্তি নাকি তার চেনা ব্যাংকে কথা বলে হাউস লোন এপ্রুফ ও করিয়ে দিয়েছে।
প্রোডাকশনের দেওয়া পুরনো ফ্ল্যাট টা খুব ছোট। ওটা সে তার পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিশা কে ছেড়ে দেবে। ওখানে জায়গা এতটাই শর্ট বন্ধুদের ডেকে পার্টি এরেঞ্জ করা যায় না। বড়ো মাপের বন্ধুদের ইনভাইট করা যায় না। মুম্বাই টে শুধু কাজ করলেই হয় না তার সাথে বড়ো ব্যাক্তিদের সাথে পার্টির মাধ্যমে যোগাযোগ তাও রাখতে লাগে। তাই আর উন্নতি করার জন্য, খুব তাড়াতাড়ি মা পুরনো প্রোডাকশন এর দেওয়া ফ্ল্যাট ছেড়ে নতুন ফ্ল্যাটে উঠে যাবে। গৃহ প্রবেশের দিন আমাদের ইনভাইট করার খুব ইচ্ছে ছিল।
কিন্তু নির্দিষ্ট একটা কারণে পারছে না। মা এই বিশেষ মুহূর্তে আমাদের যে খুব মিস করবে। আর মা চেষ্টা করছে, খুব তাড়াতাড়ি এক এজেন্ট কে ধরে যাতে আমাদের জন্য ও একটা ভালো ফ্ল্যাটের ব্যাবস্থা করা যায়। কথা এগিয়েছে অনেক তাই। মার খুব ইচ্ছে আমরাও যাতে পুরনো এই বাড়ি ছেড়ে নতুন ঝা চক চকে একটা ফ্ল্যাটে শিফট করে যাই কিন্তু বাবা মায়ের প্রপোজাল অ্যাকসেপ্ট করলো না। সে জানিয়ে দিল সে তার পুরনো বাড়িতে খুশি আছে তার হটাৎ করে বউ এর টাকায় উঠতি বড়োলোক সাজার ইচ্ছে হয় নি। বাবার কথায় মা অসন্তুষ্ট হলো। সে বাবার মুখের উপর শুনিয়ে দিল ঠিক আছে আমার অন্যায় হয়েছে ফ্ল্যাটের কথা বলা, তুমি থাক এই পুরনো বাড়িতে নিজের পুরোনো মূল্যবোধ আর কালচার নিয়ে পরে। আমি বিরক্ত করবো না। সময়ে টাকা তোমার একাউন্টে ঠিক পৌঁছে যাবে। না সেটা তোমার জন্য না, আমাদের ছেলের ভবিষ্যত এর জন্য। ঐ দিন এর পর থেকেই মা ফোন করা, আমাদের খবর নেওয়া অনেক কমিয়ে দিল। আমাদের মধ্যে দূরত্ব টা অনেক বেড়ে গেলো। আস্তে আস্তে আমাদের ছেড়ে নিজের জগৎ নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল। রুপোলি পর্দার জগতে নানাবিধ প্রলোভন থাকে, আমার মায়ের মতন সেন্সিবল সরল মূল্যবোধ এ বিশ্বাসী নারী ও সেই সব প্রলোভনে পা দিয়ে ফেললো। কিছুদিনের মধ্যে আমরা খবর পেলাম, মা ড্রাইভিং শিখে নিয়েছে, সোর্স খাটিয়ে তাড়াতাড়ি ড্রাইভিং লাইসেন্স বার করে মাঝেমধ্যে নিজেই ড্রাইভ করে শুটিং এ পৌঁছে যাচ্ছে। মার এই প্রগ্রেসের খবর আমাদের রীতিমত অবাক করে দিয়েছিল।
তারপর দেখতে দেখতে মার মুম্বাই যাওয়ার এক বছর কেটে গেলো। আমার মা এখন টেলিভিশন এর চেনা মুখ। প্রথম কয়েক মাস শুধু মায়ের রূপ আর অভিনয় এর প্রশংসাই কানে আসত। ধীরে ধীরে মা কে নিয়ে আর পাঁচ রকম খবর ও সামনে আসতে শুরু করলো। মা যত উপরে উঠছিল ততই যেন তার অতীতের জীবন থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল। যে আমার খবর না নিয়ে একটা দিন সে থাকতে পারতো না। সেই আমাকেও ভুলে গেছিল। বছর ঘুরতে সেরা আপ কামিং অ্যাকট্রেস হিসাবে একটা প্রথম সারির টেলিভিশন আওয়ার্ড জিততেই, মার ব্র্যান্ড ভ্যালু চর চর করে উপরে উঠে গেলো। নতুন ফ্লাটে শিফট করার পর পরই মার লাইফ স্টাইল আগাগোড়া পাল্টে গেছিলো। মার মতন সংবেদন শীল মূল্যবোধে বিশ্বাস করা একজন নারী ও নিজের মাথা স্থির রাখতে পারলো না। তার মুম্বাই এর কাজের জগতে গড়ে ওঠা নতুন বন্ধুরা মার লাইফের ইম্পর্ট্যান্ট ডিসিশন গুলো নেবার ক্ষেত্রে তাদের ব্যাক্তিগত প্রভাব খাটানো শুরু করলো। কিছুর দিন যেতে না যেতেই, মার সঙ্গে তার সেলিব্রিটি male co star / producar er সম্পর্কের কথা পেজ থ্রি ম্যাগাজিনের হট টপিক এ পরিনত হয়। ঐ পেজ থ্রি জার্নালিস্ট রা মার সঙ্গে ঐ সেলিব্রিটি কো স্টার এর গোপনে এনগেজমেন্ট পর্যন্ত হয়ে গেছে এমন খবর দিয়ে দিয়েছিল। যদিও প্রথম দিকে আমার মা এই সম্পর্ক র কথা প্রকাশ্যে অস্বীকার করে । এমন কি সেই কো স্টার ও এটাকে গোপন রেখে এসেছে। কিন্তু মা কে আর ঐ নামী টেলি অভিনেতা স্টুডিও ছাড়া একাধিক জায়গায় একসাথে সময় কাটাতে দেখে তাদের অফ স্ক্রিন কেমিস্ট্রি বুঝতে অসুবিধা হয় নি। তাদের সম্পর্কের কথা টিনসেল টাউনের চর্চার বিষয় হয়ে যায়। এই খবর আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়। বাবার মন এটা শুনে ভেঙে গেছিল। আমার মা এখন সুপ্রিয়া থেকে তার স্ক্রিন নেম মিস মোহিনী পাঠক এ ট্রান্সফর্ম হয়েছে। পুরনো নাম টা সে নিজে ইউজ করতে লজ্জা পায়। তার আলাদা আইডেন্টিটি হাওয়ায় পুরনো আসল নাম বাদের খাতায় পিছনের সারিতে চলে গেছে। প্রথম সিরিয়ালে আমার মা সজ্জন সরল মিষ্টি স্বভাবের গৃহ বধূর চরিত্রে অভিনয় করলেও ২ য় মেগা সিরিয়াল এ নিজের ঘরোয়া বধূর ইমেজ ভেঙে অনেক তাই বেরিয়ে এসেছে সে। অন স্ক্রিন শাড়ী ব্লাউজ ট্র্যাডিশনাল পোশাক ছাড়াও মডার্ন আউটফিট এও মা এখন সমান স্বাচ্ছন্দ্য। গত এক বছরে তিনটে শর্ট ফিল্ম এও অভিনয় করে ফেলেছে। শর্ট ফিল্ম আর হিন্দি সিরিয়াল মিলিয়ে চারটে সাহসী বেড সিন এ অভিনয় করে ফেলেছে। একাধিক কিসিং সিন ও করে ফেলেছে।
মার জীবনে এসব মৌলিক পরিবর্তন এত দ্রুত এসেছে যে মা নিজেও তাল সামলাতে পারে নি। মা মুম্বাই এ গিয়ে পাঁচ মাস এর মধ্যেই ড্রাইভিং অ্যান্ড সুইমিং শিখে নেয়। মার স্পোকেন ইংলিশ ও অল্প সময়ের মধ্যে দারুন ইমপ্রুভ করে। মা প্রভাব কাটিয়ে তাড়াতাড়ি ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বার করে। প্রোডাকশন হাউস এর সব চেয়ে এসেট এ পরিণত হয়েছিল। প্রোডাকশন হাউজ মার কাজে খুশি হয়ে, ঐ অ্যাওয়ার্ড জেতার পর পরই একটা ব্র্যান্ড নিউ কার গিফট করেছিল। মা গাড়ি গিফট পেয়ে খুব খুশি হয়েছিল। আমাদের কে গাড়ি তার সামনে নিজে দাড়িয়ে পোজ দিয়ে ছবি তুলে পাঠিয়েছিল। তারপর কিছু দিনের মধ্যে মা নিজে ড্রাইভ করে তার শুটিং এ আর বন্ধু দের সঙ্গে পার্টি হাং আউট করতে যাওয়া স্টার্ট করে। একদিন পার্টি থেকে সামান্য মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ফেরার সময় মা কে পুলিশের কাছে হেনস্থা পর্যন্ত হতে হয়। মোটা জরিমানা দিয়ে মা পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে ছিল। মার চরিত্রের এই অভাবনীয় প্রগ্রেস এর খবর আমাদের বাপ ছেলে কে একেবারে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। মা নিজের মুখেই একদিন কথায় কথায় স্বীকার করে নেয় যে নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু আর প্রোডাকশন হাউজ বিজনেস প্রফিট ঠিক রাখতে মাকে এমন সব কাজ করতে হয়েছে যেগুলো করার কথা স্বপ্নেও কোনোদিন মা ভাবতে পর্যন্ত পারতো না, যার অনেকগুলো প্রকাশ্যে বলা পর্যন্ত যায় না। অ্যাক্টিং এর পাশাপাশি নিয়মিত মডেলিং ফটোশুট তো ছিল। মার লুক আর ড্রেস নিয়ে রীতিমত এক্সপেরিমেন্ট চলছিল। মা পুরো পুরি হিরোইন মেটেরিয়াল ছিল। সেটা যত দিন যাচ্ছিল প্রমাণ করে দিচ্ছিল।