তাহার নামটি রঞ্জনা
পর্ব -৩
পদ্মনাভ আর বিলম্ব করেনা, শুইয়ে দেয় নরম বিছানায় তার অর্ধাঙ্গিনীকে। তার উদ্ধত পুরুষাঙ্গ উন্মুখ হয়ে উঠেছে, তর সইছে না আর তার৷ রঞ্জনার যে অর্গাজম হচ্ছে বুঝতে বাকি নেই তার নিচে নামিয়ে আনে পদ্মনাভ তার মুখটি। ঘন যোনিকেশ আবৃত করে রেখেছে গোপনাঙ্গটি৷ তবে তা আগাছার মতো না, রঞ্জনা সম্ভবত সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছে তারই জন্য একান্তই। ট্রিম করা। কুঞ্চিত কেশদামে লেগেছে হাল্কা জলের ফোঁটা। অ্যামাজনের বৃষ্টিঅরণ্য যেন। পদ্মনাভের মনে পড়ে যায় শক্তিবাবুর কবিতাখানি-
❝বৃষ্টি পড়ে এখানে বারোমাস
এখানে মেঘ গাভীর মতো চরে
পরাঙ্মুখ সবুজ নালিঘাস
দুয়ার চেপে ধরে–❞
বর্ষাবনের সামনে নামিয়ে আনে সে তার মুখখানি, আলতো করে টেনে ধরে দুপাশের উল্লম্ব ঠোঁটদুটি, গোলাপি নরম মাংসের স্তর তাতে লেগে আছে সাদা রস, ভিজে গেছে পুরো। হামলে পড়ে তার উপর পদ্মনাভ। দীর্ঘ পিপাসার্ত পথিকের মতো শুষে নেয় সবটুকু রস। রঞ্জনা প্রবল আশ্লেষে অস্ফূটে শব্দ করে ওঠে মুখে আহহহ…দুই হাত দিয়ে সে ধরে রেখেছে পদ্মনাভের মাথাটা। অমৃতরসপান শেষ হলে পদ্মনাভ তার অঙ্গুলি দিয়ে ঘষতে থাকে ভগাঙ্কুর, যোনির দেয়াল। চরম সুখের শীর্ষবিন্দুতে দাঁড়িয়ে রঞ্জনা বলে ওঠে আর পারছিনা উফফফফ আর না…
তাও থামেনা পদ্মনাভ চেটে দেয় আবার যোনিদ্বার। এক অদ্ভুত আঁশটে গন্ধ আছে সেখানে। মাতাল করছে তাকে। সব রস যেন শুষে নেবে সে। সমুদ্রমন্থনের মত যোনিমন্থন করছে সে যেন। ঘূর্ণাবর্তভাবে জিহ্বা দিয়ে কখনোবা আঙুল দিয়ে সুখ দিচ্ছে তার আদরণীয় স্ত্রীকে। কেঁপে কেঁপে উঠছে শরীর রঞ্জনার। জল খসায় সে। পদ্মনাভ সেটিও পান করে নেয়। তারপর নিজের পুরুষাঙ্গটি স্থাপন করে ছিদ্রের মুখে। এক বার দুই বার তিনবারের ঠাপ দিতে তা আস্তে আস্তে ঢুকে যায়। ব্যথা লাগে রঞ্জনার প্রবল। আহহহহ করে চিৎকার করে ওঠে যে। পদ্মনাভ জানে যে প্রথমবার ইন্টারকোর্সে ব্যথা লাগে বড্ড তারপর সে ব্যথা সয়ে যায়। কিন্তু তাও সে আর প্রোথিত করে রাখেনা।বের করে নেয়। যোনিমুখ দিয়ে রক্তের ধারা গড়িয়ে পড়ে। বিছানার চাদরে টপটপ করে পড়ে সেই রক্তবিন্দু। একটু ঘাবড়ে গিয়ে পদ্মনাভ বলে ওঠে- রঞ্জু আয়াম সরি। বুঝতে পারিনি তোমার লাগবে এতো।দাঁড়াও।এই বলে রঞ্জনাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই লাফিয়ে ব্যাগ থেকে গামছা বের করে সেটা বাথরুম থেকে জলে ভিজিয়ে আনে। মুছে দেয় রক্তধারা। রঞ্জনা প্রবল ব্যথা সত্ত্বেও যেন লজ্জা পায়। স্বামীর এই সেবায় সে কিছুটা হতচকিতই বটে। বলে থাক থাক আমি করে নেবো।
– না আমি করেছি, আমাকেই মুছিয়ে দিতে দাও।
মোছার পর জামা পরিয়ে দেয় সে রঞ্জনাকে। ভালো লাগে তার। মনে হয় যেন শুধু পশুর মতো সেক্স করে শুয়ে না পড়ে তার স্বামী যত্ন করে তাকে কাপড় পরিয়ে দিচ্ছে। এরম ভাগ্য কজনারই বা থাকে?
পদ্মনাভ নিজেও পরে নেয় তার পোশাক। তারপর তার সাইড ব্যাগ থেকে পেইনকিলার বের করে রঞ্জনার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে। ‘এটা খেয়ে নিও! রিলিফ পাবে কিছুটা।
রঞ্জনা বলে ওঠে চলো কিছু খাবার অর্ডার করি। নইলে খালি পেটে ওষুধ খাওয়াটা ঠিক হবেনা!
পদ্মনাভ বলে ওঠে- হ্যাঁ হ্যাঁ খিদেও পেয়েছে। কী খাবে বলো? চাইনিজ না মোগলাই?
– বরের আদর… চলবে?
– হেঁ হেঁ রঞ্জুসোনা সে খেয়ে কি আর পেট ভরে বলো? মন ভরে! যদিও আজ ভরেনি জানি, পুরোপুরি তো হয়ে ওঠেনি।
– তাতে কী হয়েছে? আমার তো বেশ লেগেছে। তুমি বড্ড যত্ন নিয়ে আদর করো।
পদ্মনাভ এটা শুনে হাল্কা হেসে উঠে একহাত দিয়ে রঞ্জনাকে টেনে ধরে তার কপালে আলতো করে চুমু দেয়।
তারপর দুজনে মিলে ফ্রায়েড রাইস আর গার্লিক চিকেন অর্ডার দেয়। খাবার এসে গেলে খেয়ে নিয়ে রঞ্জনা ওষুধ খেয়ে শোওয়ার তোড়জোড় করতে থাকে।
পদ্মনাভ তাকে কাছে টেনে ধরে বলে – তোমার সত্যি ভালো লেগেছে তো রঞ্জু?
আদুরে বেড়ালের মতো গলায় বলে ওঠে রঞ্জনা- সত্যি সত্যি সত্যি তিন সত্যি। এবার ঘুমায় তো বাপু!
– এখনই ঘুমিয়ে যাবো। একটু ভালোবাসবো না আমার বৌকে?
– আবার?
-আবার মানে কী? বারবার যতোবার করা যাবেনা বুঝি?
– না মানে আমার এখন ঘুম ঘুম পাচ্ছে আর কী! ক্লান্তও লাগছে বেশ। কাল সকালে উঠে যদি করো…
– আচ্ছা বেশ। মহারানী মর্নিং সেক্স চান তাহলে বেশ যথাজ্ঞা।
চাদর টেনে শুয়ে পড়ে রঞ্জনা। পদ্মনাভ তাকে জড়িয়ে ধরে Spooning পজিশনে শুয়ে পড়ে।
রঞ্জনার একাধারে ভালো লাগছে যেরম সেরম কেমন একটা অনুভূতিও কাজ করছে মনে। দোলাচল সৃষ্টি হচ্ছে…বারবার যতবার কথাটা অনুরণিত হচ্ছে তার মস্তিষ্ক কোশে। পদ্মনাভ কি শুধু সেক্স পেতেই তাকে বিবাহ করেছে নাকি ভালোওবাসে?
এরম চিন্তা করাটা কি ঠিক তাও সে বোঝেনা। বিবাহিত দম্পতি শারীরিকভাবে প্রত্যহ মিলিত হবে এ আর নতুন কী তাও…রোজ তো আর মনমেজাজ ভালো থাকেনা, আজ নাহয় ব্যথা বলে ছেড়ে দিল পরে যদি এ বারণ না শোনে পদ্মনাভ তখন কি তিক্ততার সূত্রপাত হবে এসব সাতপাঁচ ভাবতে থাকে রঞ্জনা। কখন যে ঘুম এসে জুড়ে বসে তার চোখে।
সকালের আলো ঘুম ভাঙিয়ে দেয় রঞ্জনার। পদ্মনাভ তখনও অঘোরে ঘুমিয়ে আছে। শিশুর মত লাগছে তার মুখখানা। পাশে রাখা পদ্মনাভের ফোনে দেখে আটটা বাজে। নেট চালানোই ছিল তাতে। দেখে বেশ কয়েকটা মেসেজ এসেছে। নিজের অজান্তেই সে খোলে ফোনটা। লক ছিলনা তাতে৷ WhatsApp মেসেজগুলোয় চাপ দিতেই খুলে পড়ে সেটা। কয়েকটা মেডিকো গ্রুপের মেসেজ আর সাথে একটি অচেনা নাম্বার থেকে আসা মেসেজ। একটি ৬-৭ বছরের বাচ্চা মেয়ের ছবি সেই ডিপিতে। কী মনে হতে সেই ইনবক্সটা খোলে। আগের মেসেজ সম্ভবত উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ একটাই মেসেজ তাতে-
তুমি ফিরছো কবে?
লোকে ১ম মেসেজ করলে হাই হেলো জাতীয় কিছু লেখে। কিন্তু এখানে তো সেসবের বালাই নেই। কিন্তু ও যে মেসেজটা ভুল করে খুলে দিল কী হবে? রীড রিসিপ্ট অফ করা আছে কি? দেখে নেয় সেটিংসে…হ্যাঁ আছে। অত:পর? মুখস্থ করে নেয় মনে মনে নাম্বারটা। তারপর উড়িয়ে দেয় আবার চ্যাটটা। কোনো নামধাম লেখা ছিলনা কনট্যাক্টে শুধু ফুলের ইমোজি দেওয়া তাতে আর বায়োতে লেখা ‘খবর দিও হঠাৎ কান্না পেলে’? কে এ? নারী না পুরুষ? কু ডেকে ওঠে রঞ্জনার মনে। সে পদ্মনাভের ফোনটা রেখে নাম্বারটা Who? বলে সেভ করে নেয় নিজের ফোনে। ট্রু কলারেল কোনো নাম দেখাচ্ছে না। তাহলে?! যাইহোক পরে ভাববে এসব নিয়ে। আপাতত হনিমুনটা এঞ্জয় করুক। পদ্মনাভকে চুমু দিয়ে ডেকে তোলে। বরমশাই তো আদর পেতেই জড়িয়ে ধরে দীর্ঘ চুম্বনে ভরিয়ে দেয় তাকে। বাসি মুখে আদর খেতে রঞ্জনার ভালো লাগলো না তেমন। সে বলল চলো ফ্রেশ ট্রেশ হয়ে নিই।
পদ্মনাভ বলল- হুম তুমি যাও বাথরুমে। আমি একটু গড়িয়ে নিই।
রঞ্জনা বাথরুম থেকে একেবারে স্নান টান করে বেরিয়ে এসে দেখে ঘরে ব্রেকফাস্ট দিয়ে গেছে। পদ্মনাভ চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলল আজ সিমলা টা ঘুরে টুরে দেখবো৷ ফ্লাইট কালকে রাতে। তার আগে যতোটা দেখা যায় আর কী…তোমার পাহাড় ভালো লাগে তো রঞ্জু?
রঞ্জনা টি পট থেকে নিজের কাপে চা ঢালতে ঢালতে বলল- তা লাগে বৈ কী! তবে সমুদ্রও বেশ লাগে।
– বেশ সেখানেও যাবো। গোয়াতে যাওয়ার আগে তোমায় একখানা সুইম স্যুট কিনে দেবো।
– ধ্যাত কী যে বলো না ওসব আমাকে মানায় নাকি?! সব লোকে তাকিয়ে থাকবে।
– আরেহ বাবা তুমি বাইরে কেন পরবে? আমার সামনেই শুধু পরবে।
– ওহ বুঝেছি মশাই তাহলে সুইম স্যুট পরে সমুদ্রে জলকেলিই যদি না করলাম তাহলে কেনার কী দরকার?
– উম তাও ঠিক। বেশ তাহলে ওট পরে বাথটবে বসে আদর খাবে কেমন?
– উফফফ বাবা তুমি পারোও। আর বেড টী খেয়ে যাও মুখ ধুয়ে এসো ব্রেকফাস্ট খেয়ে বেরোবে বললে তো।
হ্যাঁ হ্যাঁ করে পদ্মনাভ ফ্রেশ হয়ে নেয়। হাল্কা প্রসাধন করে গায়ে সোয়েটার চাপিয়ে স্বামী স্ত্রী বেরিয়ে পড়ে শহর দেখতে। স্ট্যান্ড থেকে একটা গাড়ি ভাড়া করে আশেপাশের দ্রষ্টব্যস্থান ঘুরে দেখে৷ কালী মন্দিরে পুজো দেয়। বিকালের দিকে ম্যালে থেকে কেনাকাটি করে আনে জিনিসপত্র। সারাদিন ঘুরে টুরে ক্লান্ত হয়ে যখন ঘরে আসে দুজনে সাতটা বাজে। পাহাড়ে তো তাড়াতাড়ি সন্ধ্যা নামে। ডিনার অর্ডার করে দিয়ে পদ্মনাভ যখন ফ্রেশ হতে বাথরুমে যায় রঞ্জনা দেখে পদ্মনাভের ফোনে বেশ কয়েকটা মিসড কল। সেই একই নাম্বার থেকে। এদিক ওদিক তাকিয়ে সে আবার ফোনটা আনলক করে। ওয়াটস অ্যাপে সেই নাম্বার থেকে আর কোনো মেসেজ আসেনি যদিও।
সে তাড়াতাড়ি ফোনটা রেখে দেয় টেবিলে। আবার ঠিক তক্ষুণি বেজে ওঠে ফোনটা, রঞ্জনা কী করবে বুঝতে না পেরে কল রিসিভ করে,
ওপাশ থেকে একটা রিনরিনে মিষ্টি নারী কন্ঠ বলে ওঠে- হ্যালো পদ্মনাভ এতবার ফোন করছি টেক্সট করছি রিপ্লাই করছো কেন বলো তো?
রঞ্জনা চুপ করেই থাকে।
ওপাশ থেকে বলেই চলে হ্যালো হ্যালো…
ঠিক এই সময়েই বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসে পদ্মনাভ রঞ্জনার কানে ফোন আর মুখের অভিব্যক্তি দেখে সে বুঝে যায় গন্ডগোল ঘটে গেছে!
কে ফোন করেছে রঞ্জু ফোনটা দাও – এই বলে ফোনটা নেয় তার হাত থেকে।
ওপাশের মেয়েটা ব্যাপার গুরুতর বুঝতে পেরে ফোন কেটে দিয়েছে আগেই।
রঞ্জনা কোনো কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ বসে থাকে। মাথাটা তার যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছে। বিয়ের মাত্র কয়েকদিন হল তাতেই তৃতীয় ব্যক্তির আগমণ?
তার কপালে কি সুখ নেই? নিজেকে খুব অসহায় লাগে তার…সব কিছু মিথ্যা মনে হচ্ছে, প্রবঞ্চনা লাগছে।
পদ্মনাভ বিষয়টা বুঝতে পেরে স্ত্রীর পাশে বসে তার হাত ধরে বলে আরে তুমি যা ভাবছো তা না, আমার এক কলিগ। না পেয়ে ফোন করেছে। আমি আসলে চাইনা এই হনিমুন পিরিয়ডে আমার কর্মক্ষেত্রের ঝামেলা এখানে প্রবেশ করুক তাই ফোন টোন ধরিনি বুঝেছো তো?
কী জানি রঞ্জনা ফট করে বলে বসে- তা কলিগের নাম্বার সেভ করোনি কেন?
– আরে এটা ওর নতুন নাম্বার বোধহয়। সেভ নেই তাই।
– জানো তো একটা মিথ্যে ঢাকতে অনেক মিথ্যে বলতে হয়?
– আরে রঞ্জনা তুমি ভুল ভাবছো আমি মিথ্যে খামোখা কেন বলতে যাবো? কত সুখী আমি তোমায় পেয়ে।
রঞ্জনা মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকে বাকিটা সময়। পদ্মনাভ বোঝানোর চেষ্টা করর বহুবার। সে কর্ণপাত করেনা। তার মাথায় একবার যেটা ঢুকে যায় সেটা বের করা বেশ কঠিন। খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়ে রঞ্জনা। আগের রাতে প্রবল সুখের সায়রে ভাসছিল দুজনে আজ আর তার ছিটেফোঁটাও নেই। সন্দেহ একবার মানুষের মনে প্রবেশ করলে আস্থা রাখাটা বড় কঠিন…