একটা তীক্ষ্ম শিষের শব্দে ঘুমটা হঠাত ভেঙে যায় জয়ের |সঙ্গে ঠোঁটে একটা নরম কিছুর স্পর্শের অনুভূতি|চমক ভাঙতেই তাকিয়ে দেখে তার সামনে দঁড়িযে নীতা|নীল রঙের রাত-পোষাক পরা অনিন্দ্যসুন্দরী নীতা ওর বাঁ-পায়েের আঙুলগুলো বুলোচ্ছে জয়ের ঠোঁটে|হাতের ছোটো চাবুকটা আবার বাতাসে আছড়াতেই শিষ দেওয়া ধ্বনির উতসটা বুঝতে পারে জয়় | তীব্র ভয়ে হুড়মুড়়িয়়ে উঠে বসে সে |দূর থেকে ভেসে আসা অজস্র পাখীর ডাক বুঝিয়ে দেয় ভোর হয়েছে|নীতা কণ্ঠে প্রভুত্ত মেশানো মাদকতা|বলে, ‘ওঠো জয়, আর একটু পরেই এথানের সমস্ত কাজের লোকেরা চলে আসবে …আমি চাই তাদের আসার আগেই তোমাকে দিয়ে দাস-মালকিনের চূক্তিতে স্বাক্ষর করাতে..এসো আমাার সাথে..’
জয় কোন কথা বলে না,এক সম্মোহিত মানুষের মতো দ্রুত উঠে নীতার পিছুপিছু চলতে থাকে….বড়ো হলঘরটায় আসে নীতা…বিশাল বড়ো সিংহাসনের মতো চেয়ারটায় গিয়ে বসে জয়কে পায়ের কাছেে বসতে ইঙ্গিত করে ;জয় হাঁটু মুড়ে বসে নীতার পায়ের কাছে;সুতীব্র আবিলতা-মেশা স্বরে জয়কে বলে নীতা ,’আমার পায়ের পাতায় তোমার জিভের ছোঁয়া চাই জয়|’জয় একবার মুখ তুলে তাকায় নীতার পাগল-করা মুখের দিকে…তারপর ধীরে ধীরে ঠোঁট ঠেকায় নীতার পায়়়ে…জয়ের জিভের ঊষ্ণ স্পর্শ কয়েক মুহূর্তের জন্য নীতাকে সরিয়ে নেয়় বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে |জয় ডান পায়ের দুটো আঙুল ঢুকিয়ে নেয়় মুখে…
তারপর এক এক করে সব আঙুলগুলো ভিজিয়ে দেয লালারসে | হঠাত সম্বিত ফিরে পায়় নীতা,উঠে পড়ে চেয়ার থেকে,একটু দূরে রাখা আলমারীটার ড্রয়ারটা খুলে একগোছা কাগজ নিয়ে আসে,জয়কেে বলে দূরে কোণে রাখা পার্সেলটা নিয়ে আাসতে |জয় ওটা নিয়ে এসে আবার নীতার পায়ের কাছে এসে বসে|নীতা কাগজের গোছাটা এগিিয়ে দেয় জয়ের দিকে ;বলে ,’জোরেে জোরে এটা পড়ো জয়……….’জয় দেখে এটা একটা দলিলেের মতো আইনী কাগজ ; জয় পড়তে শুরু করে,’আমি শ্রী জয় গুপ্ত, পিতা…নিবাস..নিম্নোক্ত চূক্তিতে স্বাক্ষর করিবার মধ্য দিয়া সম্পূর্ণ সজ্ঞানে ও স্বেচ্ছায় শ্রীমতি নীতা সেনের ব্যক্তিগত যৌন-দাসত্ব গ্রহণ করিতেছি…জয়ের মৃদু স্বরে ধমক দিয়ে ওঠে নীতা…জয় এবার জোরে জোরে পড়তে থাকে…
এই চূক্তির শর্তগুলি হইল-
*আজি হইতে মাননীয়া শ্রীমতি নীতা সেন আমার এই শরীরে্র সম্পূর্ণ মালকিন হিসেবে গণ্য হইবেন|তিনি কখনো স্বেচ্ছায় এই অধিকার না ত্যাগ করিলে আমি কোনোমতেই তাঁহার দাসত্ব হইতে মূক্তি পাইব না |
*আমি মধ্যযূগীয় ক্রীতদাসের ন্যায় মাননীয়া মালকিনের যেকোন আদেশ বিনা প্রতিবাদে
তক্ষণাত পালন করিব|
*মাননীয়া মালকিনের যে কোনোরুপ যৌনখেয়াল,তাহা যতই অদ্ভূত বা কষ্টসাধ্য হঊক না কেন , বিনা প্রতিবাদে তক্ষণাাত পূরণ করাই হইবে আমার লক্ষ্য|
*মাননীয়া মালকিনের কোন আদেশ বা যৌনখেয়াল পূরণে ব্যর্থ হইলে বা মালকিনের সম্পূর্ণ সন্তুষ্টিলাভ না করিবার কারণ হেতু তিনি আমাকে যে কোনরকম শাস্তি দিতে পারিবেন |
*মাননীয়া মালকিনের নির্দিষ্ট করা স্থানে শয়ন করা বা মালকিন কর্ত্তৃক নির্ধারিত খাদ্য বিনা প্রতিবাদে আহার করা বাধ্যতামূলক;কখনো কোনো অপরাধের দণ্ডস্বরূপ কোনোসময়ের জন্য আহারগ্রহণ বা নিদ্রার অনুমতি মালকিন নাও দিতে পারেন |
*মাননীয়া মালকিনের ইচ্ছা হইলে অন্য কোনো রমণীর নিকট আমাকে যৌনদাসত্ব করিবার জন্য পাঠাইতে পারেন; সেক্ষেত্রে ওই সময়ের জন্য ঐ রমণী আমার মালকিন রূপে পরিগণিত হইবেেন |
*মাননীয়া মালকিন কোনো তুচ্ছ কারণে বা কোনো কারণ ব্যাতিরেকে কেবল নিজ আনন্দলাভেের কারণে আমাকে যে কোনোরকম শাস্তি দিতে পারিবেন |তিনি তাঁহার মনোনীত কোনো নারীকে শাস্তি দেবাার জন্য নিযূক্ত করিলে তিনিও আমার মালকিন হিসবে গণ্য হইবেন |
*আমার স্থাবর-অস্থাবর যাবতীয় সম্পত্তি আমি মাননীয়া মালকিনের নামে লিখিয়া দেব এবং সম্পূর্ণ কপর্দকশূণ্য অবস্থায় তাঁহার সেবা করা এবং আদেশ পালন করাই হইবে আমার একমাত্র লক্ষ্য |
* আমি আমার এই দাসত্বের কথা তৃতীয় কোনো ব্যক্তিকে জানাইব না;মাননীয়া মালকিন চাহিলে এই চূক্তিপত্র যে কোনো ব্যক্তিকে দেখাইতে বা এবিষয়ে প্রচার করিতে পারিবেন |
*মালকিন তাঁহার যেকোনো বন্ধু বা যেকোনো ব্যক্তির সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হইতে পারিবেন;এ ব্যাপারে সামান্যতম বিরূপতা দেখাইলে তিনি যে কোনো রকম কঠোর শাস্তি দিতে পারিবেন |
*মাননীয়া মালকিন ব্যতীত অন্য কোনো মহিলার মুখের দিকে সরাসরি তাকানো বা অন্য কোন মহিলার প্রতি কোনোরূপ অনুরাগ দেখানো অমার্জনীয় অপরাধ|”
এটা পড়তে পড়তে জয়ের কথা জড়িয়ে আসছিল,সারা শরীরে কী যেন এক অজানা উন্মাদনা টের পাচ্ছিল ও | ও যদিও জানে না এচূক্তির আইনী বৈধতা ঠিক কতখানি ,কিন্তু ও বুঝতে পারছিল এর প্রতিটি শব্দ ,প্রতিটি অক্ষর সত্য তার কাছে; তার সামনে বসে থাকা ওই নারীটির কাছে…হয়ত এ জগতের সকলের কাছে …সারা শরীর জুড়ে প্রতিটি কোষে কোষে অ্যাড্রিনালিনের তীব্র ছোটাছুটি,এক অজানা সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়ার তীব্র আবেগ,এক সীমাহীন বন্ধনের মাঝে মুক্তিকে খুঁজে নেবার রোমাঞ্চ..সব কিছু একসঙ্গে প্রায় পাগল করে দিচ্ছিল জয়কে…ওর নিশ্বাস ক্রমশ গাঢ় হয়ে আসছিল….নীতার হুকুমে পুরোটা আবার পড়ে শেষে গিয়ে থামে সে…একটু থমকে যায়…তারপর ধীরে ধীরে উচ্চারণ করে,’ইতি স্বাক্ষরকারী –
শ্রী জয় গুপ্ত
নীতার মুখে হাসি,গলায় ব্যঙ্গর সুর,কী জয়,ভয় পেলে নাকি ?দেখ তাহলে ছিঁড়ে ফেলি ওটা..তুমি ফিরে যাও তোমার নিরাপদ আশ্রয়ে…তুমি চাইলে এর থেকে পিছিয়েও আসতে পারো..কিন্তু একবার স্বাক্ষর দিলে এথেকে আর মুক্তি নেই…এর একটা কপি থাকবে সিলকরা খামে আমার ব্যক্তিগত উকিলের কাছ, প্রয়োজনে তিনি এবিষয়ে আইনী ব্যবস্থা নেবেন ….
জয় মাথাটা রাখল নীতার পায়ে…মুখটা ঘষতে ঘষতে অস্ফুট স্বরে বলতে লাগল….’আমি রাজী…আমি রাজী…’
একটু পরে নীতার হাতে তুলে দেওয়া কলমে দ্রূত স্বাক্ষর করে জয়|এবার মৃদু হেসে কাগজটা নিয়ে পাশে রাখে নীতা ;পাশে রাখা পার্শেলটা জয়কে খুলতে বলে ও|জয় কাঁপা হাতে মোড়ক খুলে বের করে আনে জিনিষ দুটো;ভয়-মেশা বিস্ময় নিয়ে ওদুটো নীতার হাতে দেয় ও| নীতা নীচু হয়ে ডগ-কলারটা পরিয়ে দেয় ওর গলায়…বলে ,’এটা তোমার দাসত্বের চিহ্ণ জয় ;যা এবার থেকে দেখতে পাবে সকলে…’এরপর জয়কে দাঁড় করিয়ে ওর জাঙিয়াটা খুলে ওকে উলঙ্গ করে ও….পরিয়ে দেয় চেষ্টিটি বেল্টটা…চাবিটা নিজের গলার হারটাতে লকেটের মতো ঝুলিয়ে দেয় ও|জয়ের আতংকিত চোখ দুটোর দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলে,’এখন থেকে তোমার দৈনন্দিন প্রাকৃতিক কাজগুলো করতে পারলেও আমার অনুমতি ছাড়া হস্তমৈথুন বা যৌন-মিলন তোমার কাছে সম্পূর্ণ বন্ধ জয়…তুমি এখন থেকে আমার ক্রীতদাস…গোলাম… যার সারা শরীর..শরীরের প্রতিটি কাজ..নিশ্বাস-প্রশ্বাস আমার ইচ্ছাধীন…তুমি আমার জয়…সম্পূর্ণ আমার…’
(চলবে)
গল্প কেমন লাগছে ? অনুগ্রহ করে মন্তব্য করুণ…..
লেখিকা-অরুণিমা
‘